International News

‘রাইলস টিউব’ নয়, ২৫ বছর পর নিজেই খেলেন ইমান!

মাত্র ৩৬ বছর বয়সেই তাঁর ওজন ছিল ৫০৪ কেজি। অস্ত্রোপচারের জন্য সুদূর মিশর থেকে উড়ে এসেছিলেন মুম্বইয়ে। অনেক রোগে আক্রান্ত ছিলেন। হাঁটতেও পারতেন না ঠিকঠাক। খেতেও পারতেন না নিজে। কথা বলতে পারতেন না।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৭ ১০:২৭
Share:

মুম্বইয়ের সইফি হাসপাতাল থেকে আবু ধাবিতে যাওয়ার সময় ইমান আহমেদ। ছবি: রয়টার্স

এক সময় তিনিই ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ওজনের মানুষ। মাত্র ৩৬ বছর বয়সেই তাঁর ওজন ছিল ৫০৪ কেজি। অস্ত্রোপচারের জন্য সুদূর মিশর থেকে উড়ে এসেছিলেন মুম্বইয়ে। অনেক রোগে আক্রান্ত ছিলেন। হাঁটতেও পারতেন না ঠিকঠাক। খেতেও পারতেন না নিজে। কথা বলতে পারতেন না। এমনকী, নিজের হাত-পা নাড়াচাড়াও করতে পারতেন না। মালবাহী বিমানে চাপিয়ে মুম্বই আনা হয়েছিল বিশ্বের সবচেয়ে স্থূলকায়া, ইমান আহমেদকে।

Advertisement

সেই ইমানই নিজে খেতে পারলেন। দীর্ঘ ২৫ বছর পর সম্ভব হল এমনটা।

বাণিজ্যনগরীর সইফি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার ও টানা তিন মাসের চিকিৎসার পর ইমান যখন ফিরে গেলেন তখন তাঁর ওজন ১৭৬.৬ কেজি। মুম্বই থেকে ইমান উড়ে গিয়েছিলেন আবু ধাবিতে। সেখানকার বুর্জিল হাসপাতালেই চলছে তাঁর পরবর্তী পর্যায়ের চিকিৎসা। সেখানকার চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন ইমান। ধীরে ধীরে তাঁর গলার স্বরও পরিষ্কার হচ্ছে। এ জন্য স্পিচ থেরাপিস্টের সাহায্য নিচ্ছেন ইমান। দু’বছর আগে এক বার স্ট্রোক হওয়ার পর ইমানের শরীরের নিম্নাংশ সম্পূর্ণ ভাবে অসাড় হয়ে গিয়েছিল। বুর্জিল হাসপাতালের চিফ মেডিক্যাল অফিসার ইয়াসিন ইল-শাহাত জানাচ্ছেন, এখন ধীরে ধীরে শরীরের নিম্নাংশ নাড়াতেও পারছেন ইমান। তাঁর মানসিক অবস্থারও দ্রুত উন্নতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

Advertisement

অস্ত্রোপচারের আগে ইমান। তখন তাঁর ওজন ছিল ৫০৪ কেজি।

বুর্জিল হাসপাতালে ইমানের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান চিকিৎসক নেহাদ হালায়া জানিয়েছেন, মাত্র ১১ বছর বয়সে স্ট্রোক হওয়ার ফলে ডান দিকটা প্যারালাইসিস হয়ে গিয়েছিল ইমানের। সম্প্রতি তাঁর ডান হাত স্বাভাবিক উচ্চতা পর্যন্ত ওঠাতে পারছেন ইমান। কোনও সাপোর্ট ছাড়াই বসেও থাকতে পারছেন ১০-১৫ মিনিট। এত দিন পর্যন্ত ‘টিউব ফিড’-এর সাহায্যে খাওয়া দাওয়া করলেও এখন আস্তে আস্তে খেতেও শুরু করেছেন তিনি। সারা দিনে দু’বার তাঁকে ১৫ চামচ করে খাবার খাওয়ানো হয়।

নেহাদ জানাচ্ছেন, এখন ইমানকে কড়া ডায়েটে রাখা হয়। তাঁকে লো-ক্যালোরি খাবার দেওয়া হয়। ২০ জন স্পেশালিস্ট সব সময় নজর রাখেন ইমানের উপর। একাধিক ডায়েটেশিয়ান তাঁর ডায়েট চার্ট বানানোর দায়িত্বে রয়েছেন।

সম্প্রতি ইমানের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা পরীক্ষা করতে ইলেকট্রোইনসেফালোগ্রাম করা হয়েছে। সেই পরীক্ষার ফলাফলে যথেষ্ট আশাবাদী বুর্জিল হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, আরও উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে ইমানের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন