isis

ISIS: খবর ছিল আগেই, কী ভাবে সিরিয়ায় আইএস প্রধানের ডেরায় অভিযান চালাল আমেরিকা সেনা

গত কয়েক বছরে ইরাক এবং সিরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়েই কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল আইএস। ক্রমশ জায়গা বদলে সপরিবারে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন কুরেশি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

দামাস্কাস শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১০:৫৭
Share:

সিরিয়ায় আইএস প্রধান কুরেশির শেষ ডেরা। ছবি: সংগৃহীত।

কয়েক মাস ধরে ‘জিপিএস লোকেশন ট্র্যাক’ করে ধারাবাহিক নজরদারি, নিখুঁত পরিকল্পনা এবং চূড়ান্ত অপারেশনের আগে বার বার মহড়া। বুধবার মধ্যরাতে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার অটমে শহরে আমেরিকা সেনার অভিযানে আইএস প্রধান আবু ইব্রাহিম অল-হাশিমি অল-কুরেশির মৃত্যুর ঘটনাকে সেই ‘প্রস্তুতির সাফল্য’ বলেই দাবি করেছে পেন্টাগন।

অটমের সিন্ডার ব্লক আবাসন থেকে ছ’হাজার মাইল দূরে ওয়াশিংটনের ‘সিচুয়েশন রুমে’ বসে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সেনা অভিযানের ‘লাইভ’ দেখেছেন বলে সরকারি সূত্রের খবর। বাইডেনের পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পও ২০১৯-এর অক্টোবরে একই ভাবে তৎকালীন আইএস প্রধান আবু বকর আল বাগদাদির মৃত্যু দেখেছিলেন। ঘটনাচক্রে, কুরেশিও তাঁর পূর্বসূরি বাগদাদির মতোই আমেরিকা সেনার হাতে ধরা না-দিয়ে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিজেকে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাতে মৃত্যু হয়েছে, তাঁর স্ত্রী, সন্তান, পরিজন-সহ অন্তত ১৩ জনের।

Advertisement

আমেরিকার বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, গত তিন বছর ধরে পশ্চিম এশিয়া জুড়ে কুরেশির ঘুরছেন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র এজেন্টরা। ওই এলাকায় মোতায়েন ন্যাটো ফৌজের জেনারেল ফ্র্যাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি ধারাবাহিক ভাবে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন। দীর্ঘ চেষ্টার পর অবশেষে সাফল্য পেলেন তাঁরা।

বাগদাদির জমানায় আইএস-এর মূল নীতিনির্ধারক ছিলেন কুরেশি। মূলত, ইরাক এবং সিরিয়ায় দখল করা এলাকায় তেলের খনি থেকে ‘রাজস্ব’ আদায়ের বিষয়টিও তিনি দেখভাল করতেন। কিন্তু গত কয়েক বছরে লাগাতার অভিযানে ইরাক এবং সিরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়েই কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল আইএস। ক্রমশ জায়গা বদলে সপরিবারে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন কুরেশি। তাঁর শেষ ঠিকানা হয় তুরস্ক সীমান্ত লাগোয়া অটমে শহরের সিন্ডার ব্লক আবাসন। বেশ কয়েকদিন ধরেই তার গতিবিধির উপরে নজর রাখছিলেন আমেরিকার গোয়েন্দারা। হোয়াইট হাউসের সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পরেই শুরু হয় হেলিকপ্টারে চূড়ান্ত অভিযানের প্রস্তুতি।

Advertisement

প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল, আইএস প্রধানকে জীবন্ত গ্রেফতার করা। কিন্তু বাগদাদি-কাণ্ডের অভিজ্ঞতার কারণে ‘বিকল্প পথ’ও খোলা রাখা হয়েছিল। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক মহিলা জানাচ্ছেন, হেলিকপ্টার সওয়ার আমেরিকা সেনা সিন্ডার ব্লক আবাসন ঘিরে ফেলার পর লাউডস্পিকারে কুরেশি এবং তাঁর সঙ্গীদের আত্মসমর্পণ করতে বলে। কিন্তু তাতে সাড়া না দিয়ে ‘শেষ যুদ্ধ’ শুরু করেন তিনি।

পেন্টাগনের এক আধিকারিক বলেছেন, ‘‘আমরা আইএস প্রধানের ঠিকানা সম্পর্কে নিশ্চিত ছিলাম। ড্রোন হামলায় তাঁকে খতম করার প্রাথমিক পরিকল্পনাও হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই আবাসনে বসবাসকারী মহিলা, শিশু এবং অন্য অসামরিক নাগরিকদের কথা ভেবে ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’’

২০১১ সালে ৯/১১ হামলার মূলচক্রী আল কায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে খতম করে মার্কিন নেভি সিল। সে সময় আমেরিকার ক্ষমতায় ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ১১ বছরের মাথায় আরেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্টের হাত ধরে এল সন্ত্রাস দমনে নয়া সাফল্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন