(বাঁ দিকে) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ এবং সৌদি যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন (ডান দিকে)। বুধবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াধে। ছবি: রয়টার্স।
পশ্চিম এশিয়ার শক্তিশালী দেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি সেরে ফেলল পাকিস্তান। চুক্তির পর দু’পক্ষের তরফে জানানো হল, কোনও এক পক্ষের উপর হামলা হলে তা উভয়ের উপর আঘাত হিসাবেই ধরা হবে। বুধবার সৌদি আরবে সে দেশের যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের সঙ্গে দেখা করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তার পর দুই দেশ ‘কৌশলগত এবং পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি’-তে স্বাক্ষর করে।
সংবাদ সংস্থা এএফপি-র প্রতিবেদন অনুসারে, সৌদি আরবের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, “দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া আরও বৃদ্ধি করা হচ্ছে। যে কোনও ধরনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যৌথ ভাবে লড়বে সৌদি আরব এবং পাকিস্তান।” একই সঙ্গে ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী পাকিস্তান এবং সৌদি আরবের মধ্যে কোনও একটি দেশ অপর কোনও দেশের আগ্রাসনের শিকার হলে তা দুই দেশের উপর আঘাত হিসাবে দেখা হবে।
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে চার দিন ধরে সামরিক সংঘাত চলে। তার পর থেকেই আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছে পাকিস্তান। এই আবহে সৌদি আরবের সঙ্গে পাকিস্তানের এই প্রতিরক্ষা চুক্তিকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। এমনিতে সৌদি আরবের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কও যথেষ্ট মসৃণ। তবে বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে রিয়াধ এবং ইসলামাবাদের কাছাকাছি আসা নতুন কোনও অক্ষ তৈরির সম্ভাবনা উস্কে দিচ্ছে কি না, তা নিয়েও জল্পনা ছড়িয়েছে। সৌদির সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্কও বেশ ভাল। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, সৌদির যুবরাজের আমন্ত্রণেই পশ্চিম এশিয়ার ওই দেশে গিয়েছেন শাহবাজ়।
অন্য দিকে, কয়েক দিন আগেই সৌদি আরবের প্রতিবেশী দেশ কাতারের রাজধানী দোহায় আকাশপথে হানা দিয়েছিল ইজ়রায়েলি সেনা। তাদের নিশানায় ছিলেন সে দেশে বসবাসকারী হামাস নেতারা। এই ঘটনার পরেই ইজ়রায়েলকে তোপ দাগে কাতার। ইজ়রায়েলি হানাকে ভাল ভাবে নেয়নি ‘বন্ধু’ আমেরিকাও। এই আবহে মঙ্গলবার মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো জানান, আমেরিকা এবং কাতারের মধ্যে সামরিক বোঝাপড়া নিয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ের কথা চলছে। এই প্রেক্ষাপটে সৌদি-পাকিস্তান সামরিক চুক্তি পশ্চিম এশিয়ার রাজনীতিতে চমকপ্রদ ঘটনা বলেই মনে করা হচ্ছে।