International News

জবাব দিতে প্রস্তুত, নরবণের মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে জানাল পাকিস্তান

বিবৃতিতে পাকিস্তানের হুঁশিয়ারি, ‘‘বালাকোটে ভুল অভিযানের পর পাকিস্তান কী জবাব দিয়েছিল, সেটা যেন কেউ ভুলে না যায়।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ইসলামাবাদ শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২০ ১০:১৫
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসের উৎসস্থলে আঘাত করার অধিকার রয়েছে ভারতের। নয়া বায়ুসেনা প্রধানের এই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করল পাকিস্তান। জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নরবণের এই মন্তব্য ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ ও প্ররোচনামূলক বলে বিবৃতি জারি করে বলল ইসলামাবাদ। বালাকোটে অভিযানের পর অভিনন্দন বর্তমানের প্রসঙ্গ টেনে ইমরান খান সরকারের পাল্টা হুঁশিয়ারি, ওই ঘটনার কথা ভারত যেন ভুলে না যায়। তা ছাড়া এই ধরনের হামলা হলে পাকিস্তান যে তার যোগ্য জবাব দিতে প্রস্তুত, সেই হুমকিও দিয়েছে ইসালামাবাদ। যদিও কূটনৈতিক মহল মনে করছে, নয়া সেনাপ্রধানের মন্তব্যে চাপে পড়েই পাল্টা হুঁশিয়ারি-হুমকির কথা বলছে পাকিস্তান।

Advertisement

নয়া সেনাপ্রধান হিসেবে মঙ্গলবার দায়িত্ব নিয়েছেন মনোজ মুকুন্দ নরবণে। ওই দিনই সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, পাকিস্তান সন্ত্রাসে মদত দেওয়া বন্ধ না করলে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসের উৎসস্থলে পূর্ব-পরিকল্পিত আঘাত করার অধিকার ভারতের রয়েছে। সার্জিক্যাল স্ট্রাইক ও বালাকোটে অভিযানই তার প্রমাণ বলেও মন্তব্য করেন জেনারেল নরবণে।

তার পরের দিনই জবাব দিল পাকিস্তান। পাক বিদেশমন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, ‘‘নিয়ন্ত্রণরেখায় পূর্ব-পরিকল্পিত হামলা সম্পর্কিত ভারতীয় সেনাপ্রধানের এই বক্তব্যকে খারিজ করছে পাকিস্তান। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে বা পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ভারতের দিক থেকে যে কোনও আগ্রাসনের জবাব দিতে পাকিস্তান যে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং প্রস্তুত তা নিয়ে কোনও সন্দেহ থাকা উচিত নয়। বালাকোটে ভুল অভিযানের পর পাকিস্তান কী জবাব দিয়েছিল, সেটা যেন কেউ ভুলে না যায়।’’

Advertisement

এর সঙ্গেই শান্তির বার্তাও দেওয়া হয়েছে ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘ভারত যতই উস্কানি দিক, গোটা অঞ্চলে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পাকিস্তান কাজ করে যাবে।’’

গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় আত্মঘাতী জঙ্গি হানায় ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ানের মৃত্যুর পর ভারত-পাক সীমান্তে নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনা বাড়ে। তার পর ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে পাকিস্তানে ঢুকে বালাকোটে অভিযান চালিয়েছিল বায়ুসেনা। তার পরের দিন ভারতের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে পাক যুদ্ধবিমান ভারতে ঢুকে পড়লে তাকে তাড়া করতে গিয়ে ধরা পড়েন বায়ুসেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। তার পর ১ মার্চ অভিনন্দনকে ভারতের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান।

তার পর থেকে সীমান্তে উত্তেজনা কিছুটা কমলেও ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের পর থেকে দু’দেশের সম্পর্কে ফের উত্তেজনা তৈরি হয়। ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তোলার পর থেকেই উপত্যকায় কড়া নিয়ন্ত্রণ জারি হয়। ধীরে ধীরে সেই নিয়ন্ত্রণ তুলে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বুধবারের ওই বিবৃতিতে সেই প্রসঙ্গ তুলে ইসলামাবাদের বক্তব্য, ‘‘কাশ্মীরে অমানবিক নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে কাশ্মীরের নাগরিকদের প্রতি সমর্থন সব সময়ই থাকবে পাকিস্তানের।’’ আন্তর্জাতিক মঞ্চে কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণের বিরোধিতায় পাকিস্তানের সমর্থন যে সব সময়ই থাকবে, তাও বলা হয়েছে ওই বিবৃতিতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন