PM Narendra Modi in US

তিন দিনের আমেরিকা সফর শেষ! মিশর উড়ে যাওয়ার আগেও মোদীর মুখে নতুন বন্ধুত্বের কথা

আমেরিকায় তিন দিনের সফর শেষ করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। হোয়াইট হাউসে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় ভারতীয় মেধা এবং আমেরিকার প্রযুক্তির যৌথ ভাবে কাজ করার বিষয়ে জোর দেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২৩ ০৯:৩৩
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই ।

আমেরিকায় তিন দিনের সফর শেষ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আমেরিকা ছাড়ার আগে ওয়াশিংটনের রিগান সেন্টারে প্রবাসী ভারতীয়দের জন্য আয়োজিত এক সমাবেশে দিয়ে গেলেন ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র বার্তা। পাশাপাশি, তাঁর মুখে আবার উঠে এল আমেরিকার সঙ্গে নতুন সম্পর্ক গড়ার কথা। যেমনটা শোনা গিয়েছিল আমেরিকার কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার সময়। মোদীর কথায়, ‘‘আমেরিকা এবং ভারত শুধু নীতি তৈরি করছে না। জীবন, স্বপ্ন এবং ভাগ্যকে নতুন রূপ দিচ্ছে...। বিশ্বে ঘটমান বিভিন্ন সমস্যা থেকে শুরু করে নতুন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দুই দেশই উন্নত ভবিষ্যতের জন্য শক্তিশালী পদক্ষেপ করছে। আমেরিকার সঙ্গে ভারতের এই নতুন সম্পর্ক এবং যাত্রা বিশ্বকে নতুন রূপ দেবে।’’

Advertisement

আমেরিকা সফর শেষে মিশরের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছেন মোদী। তার আগে ওয়াশিংটনের ওই সমাবেশে তাঁর শেষ ভাষণে তিনি বলেন, ‘‘আমেরিকার সঙ্গে একাধিক চুক্তির কারণে জেট ইঞ্জিন প্রযুক্তি-সহ অন্যান্য প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে ভারত নতুন দিশা পাবে। আমেরিকার বিনিয়োগের কারণে ভারতে কর্মসংস্থান বাড়বে। দেশের উদ্ভাবনী শক্তিকে আরও উৎসাহিত করবে।’’ পাশাপাশি গুগল এবং অ্যাপলের মতো সংস্থা ভারতে বড় বিনিয়োগ করবে বলেও তিনি জানান।

মোদী বলেন, ‘‘এই তিন দিনে ভারত এবং আমেরিকার সম্পর্কে নতুন এবং গৌরবময় যাত্রা শুরু হয়েছে। এই নতুন যাত্রা ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’, ‘মেক ফর দ্য ওয়ার্ল্ড’-এর ধারণাকে আরও শক্তিশালী করবে।’’

Advertisement

শুক্রবার হোয়াইট হাউসে সিলিকন ভ্যালির বেশ কয়েকটি বড় সংস্থার সিইওদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেই বৈঠকে আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স (কৃত্রিম মেধা), উন্নত উত্পাদন এবং ভারতে বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা করেন দুই দেশের প্রধান। হোয়াইট হাউসে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দেখা করার সময় মোদী ভারতীয় মেধা এবং আমেরিকার প্রযুক্তির যৌথ ভাবে কাজ করার বিষয়ে জোর দেন।

মঙ্গলবার সকালে দিল্লি থেকে বিমানে চেপে আমেরিকা পাড়ি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সে দেশে পৌঁছে একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করার পাশাপাশি আমেরিকার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালন করেন আমেরিকা থেকেই। হোয়াইট হাউস আয়োজিত এক রাজকীয় নৈশভোজেও অংশগ্রহণ করেন তিনি। আমেরিকার কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য মোদীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল বাইডেন সরকার। বৃহস্পতিবার সেই মঞ্চেই ভাষণ দেন তিনি। তাঁর সেই বক্তৃতায় উঠে এসেছিল ভারত-আমেরিকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থেকে শুরু করে গণতন্ত্র, অর্থনীতি, পরিবেশ, সন্ত্রাসবাদ-সহ বিভিন্ন বিষয়। তবে বেশি জোর দিয়েছিলেন আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার বিষয়েই।

আমেরিকা ছাড়ার সময় তাঁর সেই দেশে সফর নিয়ে একটি টুইট করেন প্রধানমন্ত্রী। সেই টুইটেও উঠে এসেছে আমেরিকার এবং ভারতের নতুন বন্ধুত্বের কথা। মোদী টুইট করেছেন, ‘‘বিশেষ আমেরিকা সফরের সমাপ্তি হল। এই সফরে আমি ভারত-আমেরিকার বন্ধুত্বকে গতিশীল করার লক্ষ্যে অসংখ্য কর্মসূচিতে অংশ নিতে পেরেছি৷ বিভিন্ন বিষয়ে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করবে৷ বিশ্বের আগামী প্রজন্মকে উন্নত ভবিষ্যৎ তুলে দেওয়ার জন্যও দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করবে।’’

মোদীর আমেরিকা সফর নিয়ে দুই দেশের সরকারের মধ্যে মাতামাতি থাকলেও, অনেক প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়েছে উভয় সরকারকেই। আমেরিকার কংগ্রেসের ৭০ জনের বেশি সদস্য মোদীর সফর নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন। আমেরিকার ডেমোক্র্যাট পার্টির দুই কংগ্রেস সদস্য ইলহান ওমর এবং রাশিদা তালেব মোদীর যৌথ অধিবেশনের ভাষণ বয়কট করেন। দুই মুসলিম নেত্রীরই দাবি, মোদী সরকার ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়ন করে থাকে।

কূটনৈতিক মহলের দাবি, মোদীর সফরকে ঘিরে ভারতে এবং আমেরিকায় উত্তেজনা থাকলেও বাইডেন সরকারের উপরে এ নিয়ে কম চাপ ছিল না। ভারতে ধর্মনিরপেক্ষতা, মানবাধিকার, সংখ্যালঘুর অধিকারের মতো একাধিক বিষয় নিয়ে রিপোর্ট জমা দিয়েছিল আমেরিকার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা। বিমানবন্দরে মোদীকে স্বাগত জানাতে ছিলেন না কোনও শীর্ষ নেতা।

পাশাপাশি মোদীর আমেরিকা সফর নিয়ে তাঁকে তুলোধনা করেছে দেশের বিরোধী শিবিরগুলিও। মোদীর সে দেশে সাংবাদিক বৈঠকে অংশ নেওয়ার পরও তাঁকে কংগ্রেসের কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন