ওয়াজ়িরিস্তানে পাক নিরাপত্তা বাহিনী। ছবি: সংগৃহীত।
বিদ্রোহী হানায় আবার রক্তাক্ত পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ! তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর যোদ্ধারা আফগানিস্তান সীমান্ত লাগোয়া দক্ষিণ ওয়াজ়িরিস্তান জেলায় বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দিল পুলিশের গাড়ি। বৃহস্পতিবার সকালের এই হামলায় নিহত হয়েছেন এক পুলিশকর্মী-সহ দু’জন। গুরুতর জখম ১৫ জন জন।
পাক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ডন’ জানিয়েছে, ওয়ানা তহসিলের অন্তর্গত ঘনবসতিপূর্ণ রুস্তম বাজার এলাকায় ওই হামলা হয়েছে। দক্ষিণ ওয়াজ়িরিস্তান ডেপুটি পুলিশ সুপার ইমরানুল্লা জানান, রাস্তার ধারে বিস্ফোরক পুঁতে রেখেছিল টিটিপির বাহিনী। পুলিশের গাড়ি আসতেই রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তাঁর দাবি, জখমদের মধ্যে দুই পুলিশকর্মী। বাকিরা সাধারণ নাগরিক। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাতে বালোচিস্তানের নৌশকি জেলায় বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মির (বিএলএ) হামলায় নিহত হয়েছিলেন এক মেজর-সহ তিন পাক সেনা। তার রেশ কাটার আগেই আঘাত এল খাইবার পাখতুনখোয়া থেকে।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে টিটিপি গোষ্ঠীর সঙ্গে পাক সরকারের শান্তিবৈঠক ভেস্তে যায়। তার পর থেকেই ধারাবাহিক ভাবে ওই এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে পাক সেনা। জবাবে সেনা এবং অসামরিক নিশানার উপর হামলা চালাচ্ছে টিটিপি-ও। আফগানিস্তানের সীমান্ত লঙ্ঘন করেও হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে পাক সেনার বিরুদ্ধে। গত বছর পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ সরাসরি কবুল করেছিলেন তালিবানশাসিত আফগানিস্তানের মাটিতে জঙ্গিদের ডেরায় পাক সেনার হানাদারির কথা! মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত জঙ্গিনেতা বায়তুল্লা মেহসুদ প্রতিষ্ঠিত টিটিপি গোষ্ঠী বরাবরই পাক সরকারের বিরোধী। ২০১৪ সালে পেশোয়ারের একটি স্কুলে হামলা চালিয়ে শতাধিক পড়ুয়াকে খুন করেছিল টিটিপি জঙ্গিরা। গত দেড় দশকে একাধিক অভিযান চালিয়েও তাদের বাগে আনতে পারেনি পাক সেনা। ২০০৯ সালে টিটিপি-র বিরুদ্ধে ‘অপারেশন রাহ-ই-নিজত’ চালিয়েছিল পাক সেনা। পাকিস্তানের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত সেটিই সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান।