Nuclear Warhead

পাকিস্তানে পরমাণু হামলার ছক কষেছিল ভারত! গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পারেন ট্রাম্প: রিপোর্ট

মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের দাবি, ভারত ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যে পাকিস্তানে পরমাণু হামলা চালাতে পারে বলে অপারেশন সিঁদুরের সময় গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পেরেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২৫ ২১:৫২
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

‘অপারেশন সিঁদুর’-পর্বে তার নিখুঁত লক্ষ্যভেদের ক্ষমতা দেখা গিয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে নির্মিত সেই সুপারসনিক (শব্দের চেয়ে বেশি গতিবেগ সম্পন্ন) ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্রহ্মসকে আরও শক্তিশালী করে তোলার লক্ষ্যে নয়াদিল্লি-মস্কো পাঁচ দফা কর্মসূচিও শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের দাবি, অপারেশন সিঁদুরের সময় থেকেই ভারতের হাতে থাকা ব্রহ্মস নিয়ে শঙ্কিত ডোনাল্ড ট্রাম্প।

Advertisement

কী সেই শঙ্কা? চলতি সপ্তাহে আমেরিকার সংবাদপত্রটিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট থেকে ট্রাম্প জানতে পেরেছিলেন মস্কোর সহযোগিতায় ব্রহ্মসে পরমাণু অস্ত্র (ওয়ারহেড) বসিয়েছে ভারত। অপারেশন সিঁদুরের সময় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পরমাণু ওয়ারহেড-যুক্ত ব্রহ্মস ব্যবহারের পরিকল্পনাও করেছিল নয়াদিল্লি। আর সে কারণেই শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

উত্তর-পূর্ব ভারতের ব্রহ্মপুত্র এবং রাশিয়ার মস্কোভা নদীর নাম মিলিয়ে তৈরি ‘ব্রহ্মস’ ক্ষেপণাস্ত্রটির উৎপাদনকারী সংস্থা ‘ব্রহ্মস অ্যারোস্পেস লিমিটেড’ হল ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা (‘ডিফেন্স রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজ়েশন’ বা ডিআরডিও) এবং রুশ প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ‘এনপিও মাশিনোস্ট্রোয়েনিয়া’। বর্তমানে ভারত যে ‘ব্রহ্মস’ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে, তার চারটি শ্রেণিবিভাগ রয়েছে। স্থলভূমিতে স্থায়ী বা ভ্রাম্যমাণ (সাধারণ ভাবে সামরিক ট্রাক) উৎক্ষেপণ ব্যবস্থার পাশাপাশি যুদ্ধজাহাজ, সুখোই-৩০ যুদ্ধবিমান এবং ডুবোজাহাজ থেকে একে ছোড়া যায়। প্রথাগত বিস্ফোরকের পাশাপাশি ক্ষেপণাস্ত্রটি পরমাণু হাতিয়ার বহনেও সমান ভাবে সক্ষম। গতিবেগ শব্দের প্রায় তিনগুণ।

Advertisement

স্থলভূমি বা যুদ্ধজাহাজ থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ব্রহ্মসের পাল্লা ২৯০ থেকে ৪০০ কিলোমিটার। বিমান বা ডুবোজাহাজে ব্যবহৃত সংস্করণের কিছুটা কম। নতুন পাঁচ দফা পরিকল্পনায় ব্রহ্মসের পাল্লা এবং গতিবেগ দু’টিই বাড়ানো হচ্ছে। নয়া সংস্করণে স্থলভূমি বা যুদ্ধজাহাজ থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ব্রহ্মসের পাল্লা হবে ৮০০ কিলোমিটার। পাশাপাশি, নতুন পরিকল্পনায় সুপারসনিক থেকে হাইপারসনিক (শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ বা তার বেশি গতিবেগসম্পন্ন) ক্ষেপণাস্ত্রের স্তরে উন্নীত হবে ব্রহ্মস। বস্তুত, ইতিমধ্যেই রাশিয়া নয়া হাইপারসনিক ‘ব্রহ্মস মার্ক-২’ ব্যবহার শুরু করেছ, যা ভারতীয় সেনার হাতে এলে পাকিস্তানের পাশাপাশি চিনের বিস্তীর্ণ অংশও নাগালে চলে আসবে। বর্তমানে বায়ুসেনার ব্যবহৃত ব্রহ্মসের ওজন ১২০০ কিলোগ্রাম বা তার কিছু বেশি। স্থল বা যুদ্ধজাহাজ সংস্করণের ওজন প্রায় ৩০০০ কিলোগ্রাম।

নতুন পরিকল্পনায় ১০০০ কিলোগ্রামেরও কম ওজনের ব্রহ্মস নির্মিত হবে। রাফাল বা তেজসের মতো হালকা যুদ্ধবিমান থেকে যা ছোড়া যাবে। এ ছাড়া ব্রহ্মসের নতুন সংস্করণে আরও শক্তিশালী বিস্ফোরক ব্যবহারেরও পরিকল্পনা রয়েছে সেনার। প্রায় সাড়ে আট মিটার লম্বা ‘ব্রহ্মস’ ক্ষেপণাস্ত্র ৩০০ কেজি বিস্ফোরক বহনে সক্ষম। নতুন পরিকল্পনা কার্যকর হলে তা আরও বিধ্বংসী হয়ে উঠবে। এ ছাড়া পি-৭৫১ কর্মসুচিতে ডুবোজাহাজে ব্যবহৃত ব্রহ্মস উন্নততর করে তোলাও পাঁচ দফা পরিকল্পনার অন্যতম অঙ্গ। যদিও নয়াদিল্লি বা মস্কো, কোনও পক্ষই কখনও ব্রহ্মসে ‘পরমাণু ওয়ারহেড বসানো’ সম্পর্কে কিছুই জানায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement