সৌদি রাজকুমারী নৌরা
গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে আগেই হাত পড়েছে তাঁদের। পা পড়েছে সিনেমা হলে। পরিবর্তনের সৌদি আরবে এ বার আরও এক বদল আনলেন রাজকন্যা নৌরা বিন্ত ফয়জ়ল আল-সৌদ।
চলতি মাসের গোড়ায় এ দেশে আয়োজন করা হয়েছিল একটি ফ্যাশন উইকের। শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য। সৌদি আরবের মতো রক্ষণশীল দেশে এই ধরনের কোনও অনুষ্ঠান এই প্রথম। তবে র্যাম্পে হেঁটেছেন মূলত বিদেশি মডেলরাই। সৌদি মেয়েরা ছিলেন দর্শকাসনে। উদ্যোগের পিছনে ছিলেন রাজকুমারী নৌরা-ই। সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতার প্রপৌত্রী তিনি।
দেশে মহিলাদের পোশাক নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় উৎসাহ দেওয়ার বিষয়টি এর আগে কখনওই সে ভাবে গুরুত্ব পায়নি। কিন্তু নৌরা আরব ফ্যাশন কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট পদে আসার পর ছবিটা বদলাচ্ছে। জাপানের এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন রাজকুমারী। সেখানে থাকার সময় থেকেই ফ্যাশন দুনিয়ার প্রতি আকৃষ্ট হন তিনি।
সৌদির রক্ষণশীল সমাজে মহিলাদের পোশাক বিধি নিয়ন্ত্রণ করে শুধুমাত্র পুলিশ এবং বিচারবিভাগ। মহিলারা এখানে সাধারণত ‘অবয়া’ পরে থাকেন (পা অবধি ঢাকা গাউনজাতীয় পোশাক)। সঙ্গে মাথা এবং মুখ ঢাকা দেওয়াটাই রীতি। তবে এই বদলকে রক্ষণশীলতার বিরোধিতা হিসেবে মানতে নারাজ তিনি। এক সাক্ষাৎকারে নৌরা বলেছেন, ‘‘একজন সৌদি নাগরিক হিসেবে আমি আমার সংস্কৃতি এবং ধর্মকে সম্মান করি।’’ যদিও দেশের মহিলারা আদৌ অবয়া পরবেন কি না, তা তাঁদের একান্ত ব্যক্তিগত পছন্দের উপরেই নির্ভর করবে বলে কিছু দিন আগেই জানিয়েছিলেন সৌদি যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন। তাঁর আমলেই মেয়েদের গাড়ি চালানোয় অনুমতি দেওয়া থেকে শুরু করে সিনেমা হলে প্রবেশের অনুমতি পর্যন্ত মিলেছে। তবে নৌরার আয়োজিত ফ্যাশন উইকে শুধুমাত্র মহিলাদেরই প্রবেশাধিকার ছিল। ক্যামেরাতেও ছিল নিষেধাজ্ঞা। তাই নানা মহল থেকে প্রশংসা কুড়োলেও সমালোচনাও পিছু ছাড়েনি এই উদ্যোগের। নিন্দুকেরা এ নিয়ে প্রশ্ন তুললে জবাবে নৌরা বলেছেন, ‘‘রক্ষণশীল হওয়ার জন্য নয়, বরং মহিলারা যাতে স্বচ্ছন্দে শো-গুলো উপভোগ করতে পারেন, তার জন্যই এই ব্যবস্থা।’’