(বাঁ দিকে) শেখ হাসিনা এবং মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির সাজায় সন্তুষ্ট বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার রাতে হাসিনার ফাঁসির সাজা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন তিনি। তাতে ইউনূসের মন্তব্য, ‘‘আজ বাংলাদেশের আদালত এমন এক স্পষ্টতার সঙ্গে রায় দিয়েছে, যা দেশ জুড়ে এবং দেশের সীমানা পেরিয়ে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। এই দণ্ড ও সাজা একটি মৌলিক নীতি পুনর্ব্যক্ত করেছে— ক্ষমতা যা-ই হোক না কেন, কারও অবস্থান আইনের ঊর্ধ্বে নয়।’’
ইউনূসের মতে, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের এই রায় জুলাই-অগস্ট ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হাজারও মানুষের জন্য এবং যে সব পরিবার এখনও তাদের প্রিয়জনের শোক বয়ে বেড়াচ্ছে তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর কথায়, ‘‘বছরের পর বছর ধরে নিপীড়নের দ্বারা ধ্বংস হয়ে যাওয়া গণতান্ত্রিক ভিত্তি পুনর্নির্মাণের মুহূর্তে আমরা এখন দাঁড়িয়ে রয়েছি।’’ হাসিনা সরকারের জমানায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের উপর হেলিকপ্টার থেকেও হামলা চালানো হয়েছিল দাবি করে ইউনূস বলেন, ‘‘সামনের পথের জন্য কেবল আইনি জবাবদিহি নয়, প্রতিষ্ঠান এবং নাগরিকদের মধ্যে আস্থা পুনর্নির্মাণ করা দরকার। মানুষ কেন সত্যিকারের প্রতিনিধিত্বের জন্য সব কিছুতে ঝুঁকি নেয়—তা বোঝা এবং সেই বিশ্বাসের যোগ্য সিস্টেম তৈরি করা অপরিহার্য।’’
প্রসঙ্গত, সোমবার ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়ে ছয়টি অংশ রয়েছে। রায়ে বলা হয় হাসিনা-সহ তিন অভিযুক্তের অপরাধ প্রমাণিত। দু’টি অভিযোগে হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একটি অভিযোগে বাংলাদেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও একই শাস্তি দেওয়া হয়। রাজসাক্ষী হওয়ায় সে দেশের প্রাক্তন পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। জুলাই-অগস্ট আন্দোলনে ১৪০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল জানিয়ে ইউনূসের বলেন, ‘‘শিক্ষার্থী এবং নাগরিকেরা, যাঁরা পরিবর্তনের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন, তাঁদের অনেকে জীবন দিয়ে মূল্য দিয়েছিলেন। আমাদের আগামিকালের জন্য তাঁদের আজকের দিনটি উৎসর্গ করেছিলেন।’’