মায়ানমারের বিদ্রোহী বাহিনী। ছবি: রয়টার্স।
মায়ানমারে জুন্টা বিরোধী বিদ্রোহী জোট ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’-এ আবার ভাঙন ধরাল চিন। বেজিঙের মধ্যস্থতায় শুক্রবার সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করে সামরিক শাসকদের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসার কথা ঘোষণা করল ‘তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ)। চিনের কুমনিং শহরে দু’পক্ষের শান্তিচুক্তি সই হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী মায়ানমারের চুনি (রত্ন) খনির শহর মোগকের দখল ছাড়ার কথা জানিয়েছে টিএনএলএ।
এর আগে গত জানুয়ারি মাসে চিনের উদ্যোগে বিদ্রোহী জোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম গোষ্ঠী ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’ (এমএনডিএএ) সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করেছিল। প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে মায়ানমারের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী মিলে নতুন জোট ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ গড়ে সামরিক জুন্টার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছিল। সেই অভিযানের পোশাকি নাম ছিল ‘অপারেশন ১০২৭’। টিএনএলএ এবং এমএনডিএএ-র পাশাপাশি সেই গোষ্ঠীতে ছিল সে দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। পরে অন্য কয়েকটি গোষ্ঠীও সেই শিবিরে যোগ দিয়েছিল।
কিন্তু এমএনডিএএ এবং টিএনএলএ সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করায় বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন প্রদেশে সক্রিয় আরাকান আর্মি চাপে পড়ল বলেই সামরিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করছেন। গত দু’বছরের গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতিতে এই ঘটনা ‘নির্ণায়ক’ হতেম পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। পরবর্তী সময় জুন্টা-বিরোধী যুদ্ধে শামিল হওয়া ‘চিন ন্যাশনাল আর্মি’ (সিএনএ) এবং চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স (সিডিএফ), ‘কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স’ (কেএলডিএফ) এবং সু চির সমর্থক স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’-এর সশস্ত্র বাহিনী ‘পিপল্স ডিফেন্স ফোর্স’ (পিডিএফ)-ও এখনও লড়াই থেকে সরে আসার বার্তা দেয়নি। শান প্রদেশে সক্রিয় বিরোধী রাজনৈতিক দল ‘শান স্টেট প্রোগ্রেস পার্টি’ এবং তাদের সশস্ত্র শাখা ‘শান স্টেট আর্মি’ও লড়াই চালিয়ে যেতে চায় বলে সে না অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী আউং সান সু চির সমর্থক স্বঘোষিত ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’ নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইরাওয়াদি’ জানিয়েছে।