(বাঁ দিকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প, (মাঝে) নরেন্দ্র মোদী এবং ভ্লাদিমির পুতিন (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
রাশিয়ার বাণিজ্যিক বন্ধুরাষ্ট্রগুলিকে আমেরিকার হুমকি নিয়ে এ বার মুখ খুলল মস্কো। রুশ বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে আমেরিকা এক ‘নয়া ঔপনিবেশিকতা’র নীতিতে চলতে শুরু করেছে। রাশিয়ার দাবি, কোনও শুল্কযুদ্ধ বা নিষেধাজ্ঞাই মস্কোর সঙ্গে তার ব্যবসায়িক সঙ্গীদের ইতিহাসকে বদলাতে পারবে না। প্রকৃত বহুপাক্ষিক বিশ্ব ব্যবস্থা সচল রাখতে নিজেদের বন্ধুদের সঙ্গে সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করতে চায় মস্কো।
সম্প্রতি ভারত-সহ রাশিয়ার বিভিন্ন ব্যবসায়িক সঙ্গীর উপর শুল্ক চাপানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন তিনি। সঙ্গে রুশ ঘনিষ্ঠতার জন্য একটি জরিমানা (পেনাল্টি)-র কথাও উল্লেখ করেছেন। সোমবার ট্রাম্প ফের মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে নয়াদিল্লিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, ভারতের উপর শুল্কের হার আরও বৃদ্ধি করবে আমেরিকা। এ অবস্থায় রুশ বিদেশ মন্ত্রকের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
গ্লোবাল সাউথ (দক্ষিণ গোলার্ধের উন্নয়নশীল এবং স্বল্প উন্নত দেশগুলিকে একত্রে এই নামে অভিহিত করা হয়)-এ রাশিয়ার বন্ধুদের উপর ট্রাম্পের হুমকি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয় রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মারিয়া জ়াখারোভাকে। জবাবে এই ধরনের হুমকিকে দেশগুলির সার্বভৌমত্বের উপর ‘সরাসরি হস্তক্ষেপ’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন জ়াখারোভা। এর ফলে দেশগুলির অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপের চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। বন্ধুরাষ্ট্রগুলির প্রসঙ্গে মন্তব্যের সময় বিশেষ করে আন্তর্জাতিক জোট ‘ব্রিক্স’-এর কথাও উল্লেখ করেন রুশ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র। দশ দেশের এই জোটে রাশিয়া, ভারত ছাড়াও রয়েছে চিন, ব্রাজ়িল এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। পরবর্তী সময়ে ইরান, মিশর, ইথিয়োপিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং ইন্দোনেশিয়াও যুক্ত হয় এই জোটে।
রাশিয়ার উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার হুমকিকে বর্তমান সময়ের এক ‘দুঃখজনক বাস্তব’ বলে উল্লেখ করেছে মস্কো। এর ফলে গোটা বিশ্ব প্রভাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে রুশ বিদেশ মন্ত্রক। রাশিয়ার অভিযোগ, নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে এই নয়া ঔপনিবেশিক নীতিতে এগোচ্ছে আমেরিকা। যারা এই নীতি মানছে না, তাদের উপর আমেরিকা রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ভাবে চাপ তৈরির চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ মস্কোর। রুশ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জ়াখারোভা স্পষ্ট করে দেন, এই ‘অবৈধ একতরফা নিষেধাজ্ঞা’র মোকাবিলা করতে বন্ধুরাষ্ট্রগুলির সঙ্গে সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করতে প্রস্তুত রাশিয়া। তিনি জানান, রাশিয়া চায় প্রকৃত অর্থে একটি বহুপাক্ষিক এবং ন্যায্য বিশ্ব ব্যবস্থা চালু হোক।