রুশ হামলার পরে কালো ধোঁয়ায় ঢেকেছে ইউক্রেনের রাজধানী কিভের আকাশ। হেলিকপ্টার থেকে চলছে আগুন নেভানোর চেষ্টা। ছবি: রয়টার্স।
ইউক্রেনের উপর সোমবার রাতভর হামলা চালাল রুশ সেনা। ইউক্রেনের রাজধানী কিভেও আছড়ে পড়েছে রাশিয়ার বোমারু ড্রোন। গত তিন বছর ধরে চলা রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে এক রাতের মধ্যে এটি অন্যতম বড় হামলা বলে দাবি করা হচ্ছে। রাশিয়ার ধারাবাহিক আক্রমণে শুধু কিভেই অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। জখম হয়েছেন আরও অনেকে। প্রত্যাঘাতও করেছে কিভ। ইউক্রেনের পাঠানো শতাধিক ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি রাশিয়ার।
কিভ-সহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে সোমবার রাত থেকে হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। একের পর বোমারু ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়েছে ইউক্রেনে। কিভের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (ইন্টিরিয়র মিনিস্টার) ইহর ক্লাইমেঙ্কো জানিয়েছেন, সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকালের মধ্যে মোট ৪৪০টি ড্রোন এবং ৩২টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে তাদের উপর। অন্য দিকে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, গত রাতে রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা বিভাগ ১৪৭টি ইউক্রেনীয় ড্রোন হানা প্রতিহত করেছে এবং সেগুলিকে ধ্বংস করেছে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, সোমবার রাতে ন’ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে কিভের উপর একের পর এক হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। আত্মরক্ষার জন্য ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে লুকিয়ে পড়েন কিভের বাসিন্দারা। সাধারণত, রুশ হামলার সময়ে ভূগর্ভস্থ রেললাইন-সহ বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নেন ইউক্রেনের বাসিন্দারা। বিবিসি জানিয়েছে, সোমবার মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত ভূগর্ভস্থ ওই আশ্রয়কেন্দ্রগুলিতেই ছিলেন কিভবাসী।
কিভের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, একটি ন’তলা ভবনে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়েছে। এ ছাড়া শহরের মোট ২৭টি অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিভের মেয়র ভিতালি ক্লিতস্কো জানিয়েছেন, রুশ হামলায় নিহতের মধ্যে ৬৩ বছর বয়সি এক মার্কিন নাগরিকও রয়েছেন। সোমবার রাতের হামলায় ধ্বংসস্তূপের নীচে অনেকে চাপা পড়ে গিয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ক্লাইমেঙ্কো জানিয়েছেন, আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধার করতে অভিযান শুরু হয়েছে। রাশিয়ার এই হামলাকে ‘সন্ত্রাস’-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। তাঁর দাবি, এটি সন্ত্রাস ছাড়া আর কিছু নয়। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকেও নিশানা করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, শুধুমাত্র যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে বলেই এই হামলা চালাচ্ছেন পুতিন। বিশ্বের অন্য শক্তিধর রাষ্ট্রগুলি কেন চোখ বন্ধ করে রেখেছে, তা নিয়েও প্রশ্ন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের।