সোমবারের ‘হামলা’র পরে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এক লিভারপুল সমর্থককে। ছবি: রয়টার্স।
লিভারপুলের প্রিমিয়ার লিগ খেতাব জয় উদ্যাপনের সময় দলের সমর্থকদের উপর চলল ‘হামলা’! সমর্থকদের ভিড়ের মধ্যে ঢুকে একের পর এক মানুষকে ধাক্কা দিতে দিতে এগিয়ে যায় একটি গাড়ি। সোমবার (স্থানীয় সময় অনুসারে) ঘটনাটি ঘটেছে ব্রিটেনের লিভারপুল শহরের ওয়াটার স্ট্রিটে। গাড়ির ধাক্কায় চার শিশু-সহ অন্তত ৪৭ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে ২০ জনের ঘটনাস্থলেই প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়। বাকি ২৭ জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনায় ইতিমধ্যে গাড়িচালককে গ্রেফতার করেছে ব্রিটেনের পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, এই দুর্ঘটনার সঙ্গে সন্ত্রাসী হানার কোনও যোগ নেই। লিভারপুল সমর্থকদের উপর ওই ‘হামলা’কে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলেই মনে করছে পুলিশ।
এ বারের প্রিমিয়ার লিগের খেতাব জয় করেছে লিভারপুল। খেতাব জয় উদ্যাপন করতে সোমবার বিকেলে হুডখোলা বাসে ‘রোড শো’ করেন লিভারপুলের ফুটবলার, কোচ এবং অন্য সদস্যেরা। বিকেল সাড়ে ৫টার কিছু পরে শহরের রয়্যাল লিভার ভবনের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায় লিভারপুল দলের হুডখোলা বাস। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই রয়্যাল লিভার ভবনের অদূরে ওয়াল স্ট্রিটে লিভারপুল সমর্থকদের উপর এই ‘হামলা’ হয়। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, সমর্থকদের ভিড়কে ধাক্কা দিতে দিতে এগিয়ে যাচ্ছে একটি গাড়ি। গাড়ির সামনের অংশে ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পড়ছেন লিভারপুল সমর্থকেরা। কিছু দূর গিয়ে গাড়িটি থামার পরেই চার দিকে থেকে উত্তেজিত জনতা ঘিরে ধরে সেটিকে। ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম।
পরে স্থানীয় দমকল বিভাগের প্রধান জানিয়েছেন, ওই গাড়ির নীচে এক শিশু-সহ চার জন চাপা পড়ে ছিলেন। তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় ইতিমধ্যে ওই গাড়িচালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ৫৩ বছর বয়সি ওই ধৃত একজন ব্রিটিশ নাগরিক এবং লিভারপুলেরই বাসিন্দা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোনও গুজব না ছড়ানোর জন্য শহরবাসীকে অনুরোধ করেছে পুলিশ। তবে লিভারপুল সমর্থকদের উপর এই ‘হামলা’কে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলেই মনে করছে পুলিশ। স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনাকে কোনও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে না। এই ঘটনার সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত ছিলেন না বলেও মনে করছে পুলিশ। তবে কী কারণে এই ঘটনা ঘটল, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারও পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন। সমাজমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, লিভারপুলের দৃশ্য ভয়াবহ। ওই ঘটনায় আহতদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে পুলিশ এবং জরুরি পরিষেবা বিভাগকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ক্লাবের সমর্থকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে লিভারপুল ফুটবল দলও। লিভারপুল সমর্থকদের উপর এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে এভারটন ফুটবল ক্লাবও।