গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
চিনের সামরিক কুচকাওয়াজ নিয়ে ফের তোপ দাগলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দাবি করলেন, তাঁকে দেখানোর জন্যই বেজিঙের তিয়ানআনমেন স্কোয়ারে ঘটা করে ওই কুচকাওয়াজ করেছে চিন। একই সঙ্গে ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি ওই কুচকাওয়াজ দেখেছেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান এবং জাপানের বিরুদ্ধে চিনের যুদ্ধজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে বুধবার বেজিঙে সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে এক মঞ্চে দেখা গিয়েছিল চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং উত্তর কোরিয়ার অবিসংবাদী নেতা কিম জং উনকে। এই কুচকাওয়াজ নিয়ে আগেই বেজিংকে কটাক্ষ করেছিলেন ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে আরও এক ধাপ এগিয়ে তিনি বলেন, “আমি ভেবেছিলাম এটা দারুণ একটা অনুষ্ঠান। পরে বুঝতে পারলাম, আমায় দেখানোর জন্যই এটা করা হয়েছে। আমি দেখেওছি।”
বিজয় উৎসব হচ্ছে চিনে, আর সেখানে ‘ব্রাত্য’ আমেরিকা! এই নিয়ে আগেই ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন ট্রাম্প। বলেছিলেন, ‘‘চিনের বিজয় এবং গৌরব ফেরানোর জন্য অনেক আমেরিকান মারা গিয়েছেন। আমি আশা করি, তাঁদের সাহসিকতা এবং ত্যাগকে যথাযথ সম্মান দেখানো হবে।’’ উল্লেখ্য, ১৯৩০-৪০ দশকে চিন এবং জাপান সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। সেই যুদ্ধে অনেক চিনা জওয়ানের মৃত্যু হয়। তার পরে ১৯৪১-এর ৭ ডিসেম্বর পার্ল হারবারে বিমান হানা শুরু করে জাপান। পরের সাত ঘণ্টায় ছ’টি বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ থেকে মোট ৩৫৩টি বিমান কার্যত দুরমুশ করে ওই মার্কিন নৌঘাঁটি। ডুবে যায় তাদের ৪টি যুদ্ধজাহাজ ও ২টি জাহাজ। ধ্বংস হয় ১৮৮টি বিমান। মারা যান ২ হাজার ৪০৩ জন মার্কিন সেনা। ট্রাম্পের কথায় সেই বিষয়টিই উঠে এসেছে।
তবে বিজয় উৎসবের মঞ্চ থেকে চিনা প্রেসিডেন্ট নাম না-করে আক্রমণ করেন ট্রাম্প এবং আমেরিকাকে। তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘‘চিন কখনই কোনও গুন্ডামিতে ভয় পায় না। চিন সর্বদা এগিয়ে যাবে।’’ এই সব ক্ষেত্রে চিন ‘অপ্রতিরোধ্য’ বলে উল্লেখ করেন জিনপিং। প্রসঙ্গত, সামরিক কুচকাওয়াজের মাধ্যমে চিন যে আমেরিকা এবং পশ্চিমি দুনিয়ার সামনে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করতে চেয়েছে, তা আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। ট্রাম্প সেটিকেই প্রকাশ্যে এনে দিলেন। নিজেই দাবি করলেন যে, তাঁকে দেখানোর জন্যই ওই সামরিক কুচকাওয়াজ করেছে চিন। শুল্কযুদ্ধের আবহে চিন-আমেরিকা সম্পর্ক ভবিষ্যতে কোন খাতে বয়, সে দিকেই নজর গোটা বিশ্বের।