ঘরে-ফেরা: জল নেমেছে। নষ্ট হয়ে যাওয়া আসবাব, জিনিসপত্র সরিয়ে নতুন করে সংসার পাতার তোড়জোড়। শনিবার হিউস্টনে। এএফপি
গত কাল টুইট করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প— ‘‘দ্রুত সুস্থ হচ্ছে টেক্সাস।’’ বাস্তবে কিন্তু একেবারেই নাজেহাল দশা মার্কিন প্রশাসনের।
ঘূর্ণিঝড় হার্ভের দাপটে ভেঙে পড়েছে ১ লক্ষ ৮৫ হাজার বাড়ি। ৯ হাজার ঘরবাড়ির কোনও চিহ্নই নেই। ত্রাণ শিবিরে এখনও আটকে কমপক্ষে ৪২ হাজার মানুষ। তাঁরা কবে ঘরে ফিরতে পারবেন, কোনও ঠিক নেই। কিছু কিছু এলাকায় এখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে নদী। ফুলেফেঁপে রয়েছে জলাধার। যে এলাকাগুলোতে জল নেমেছে, সেখানেও দানা বাঁধছে রোগ সংক্রমণের আতঙ্ক। ইতিমধ্যেই মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০।
এরই মধ্যে আপ্রাণ ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে হিউস্টন। কাজ শুরু করেছে সেখানকার দু’টি প্রধান বিমানবন্দর। তবে সীমিত সংখ্যক বিমান ওঠানামা করছে। রাস্তাঘাটে গাড়ি চলাচলও আগের তুলনায় স্বাভাবিক হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ না আসায় হিউস্টনের ৩৭ হাজার বাড়ি এখনও অন্ধকারে ডুবে।
আরও পড়ুন:ঘুরে দাঁড়াতে সময় লাগবে টেক্সাসের, দাবি গভর্নরের
টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট স্পষ্ট ভাবেই জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজ শেষ হওয়া সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন টেক্সাসের ৫৬ হাজার গ্রাহক। তবে সংখ্যাটা আগে লাখখানেকের কাছাকাছি ছিল। জল না নামলে যে ওই সব এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে না, তা জানিয়ে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
টেক্সাসের কর্সবিতে আর্কেমা রাসায়নিক চুল্লি থেকে এখনও ভেসে আসছে বিস্ফোরণের শব্দ। আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে বিষাক্ত কালো ধোঁয়া। লাগাতার বিস্ফোরণের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন আর্কেমা চুল্লি কর্তৃপক্ষ। তাঁরাই জানিয়েছেন, চুল্লিতে আগুন লাগার ঘটনায় অন্তত ১৮ জন আহত হয়েছেন।
হারিকেন-বিধ্বস্ত টেক্সাস, লুইজিয়ানার ‘প্রাণ’ ফেরাতে এ বার এগিয়ে আসছে ডেল, ফেডএক্স, জেপি মর্গান, ওয়ালমার্টের মতো কমপক্ষে ৫২টি সংস্থা। এখনও পর্যন্ত ১৭ কোটি ডলার সাহায্য এসে পৌঁছেছে হার্ভে-হানায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য। মার্কিন কংগ্রেসের কাছে ১৪০০ কোটি ডলার অর্থসাহায্যের আর্জি জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। তবে টেক্সাসের গভর্নরের কথায়, ‘‘যতই সাহায্য আসুক না কেন, এই উদ্ধারকাজ কোনও ছোটখাটো ব্যাপার নয়। বিপর্যয় কাটিয়ে উঠে টেক্সাসের স্বাভাবিক হতেই হয়তো বছর ঘুরে যাবে।’’