আন্তর্জাতিক আদালতে ইরান-প্রশ্নে বড়সড় ধাক্কা খেলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আদালত বুধবার জানিয়েছে, ইরানের জন্য ‘মানবিক’ সামগ্রীর ক্ষেত্রে মার্কিন নিষেধ তুলে নিতে হবে।
ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি ছে়ড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরে ট্রাম্প সে দেশের উপরে বেশ কিছু অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ফের চাপিয়ে ছিলেন। ইরান সেই নিষেধগুলি তোলার জন্যই সওয়াল করে আন্তর্জাতিক আদালতে। দ্য হেগ-এ বিচারকরা সর্বসম্মত ভাবে জানান, কিছু বিশেষ সামগ্রীর ক্ষেত্রে ইরানের উপরে নিষেধ ১৯৫৫ সালের আমেরিকা-ইরান মিত্রতা চুক্তি ভঙ্গ করে। ইসলামি বিপ্লবের আগে এই চুক্তি হয়েছিল। প্রধান বিচারক আব্দুলকাওয়ি আহমেদ ইউসুফ বলেছেন, ‘‘কোর্ট সর্বসম্মত ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ওষুধ, খাবার এবং কৃষিজাত পণ্য রফতানিতে গত ৮ মে থেকে ইরানের উপরে যে মার্কিন নিষেধ ছিল, তা তুলে দিতে হবে।’’
কোর্টের মতে, ওই সব ‘মানবিক’ সামগ্রীর রফতানিতে নিষেধ ইরানের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য এবং জীবনধারায় ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। ট্রাম্প গত মে মাসে পরমাণু চুক্তি ছেড়ে বেরনোর পরে অগস্টে প্রথম দফা নিষেধ চাপিয়ে দেন ইরানের উপরে। নভেম্বরে আরও এক দফা নিষেধ প্রয়োগ করার কথা।
ইরানের বিদেশমন্ত্রী মহম্মদ জাভেদ জারিফ বলেছেন, ওই সব নিষেধ ‘মানসিক যুদ্ধের’ মতো ছিল। আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ের পরে ওয়াশিংটন জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে রায় দেওয়ার ক্ষেত্রে এই কোর্টের কোনও এক্তিয়ার নেই। কারণ এর সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার আগে সম্ভাব্য পদক্ষেপ করতেও আরও কয়েক বছর লাগবে।
ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিতে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্ব দেওয়ার পরিসর নেই। সম্প্রতি ট্রাম্প নিজেও আন্তর্জাতিক অপরাধদমন আদালতের বিরুদ্ধে সরব হন। আফগানিস্তানে মার্কিন আগ্রাসন নিয়ে আদালতের তদন্তের প্রসঙ্গে খেপে যান ট্রাম্প।