বাংলাদেশে থাকা নাগরিকদের সতর্কবার্তা আমেরিকার। —ফাইল চিত্র।
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক, প্রয়াত ছাত্রনেতা ওসমান হাদির শেষকৃত্যের জমায়েত থেকেও হিংসা ছড়াতে পারে! এই মর্মে বাংলাদেশে থাকা নাগরিকদের সতর্ক করল আমেরিকা। ওই সতর্কবার্তায় আমেরিকার বিদেশ দফতরের তরফে বলা হয়েছে, হাদির শেষকৃত্যের জমায়েত থেকেও হিংসা ছড়াতে পারে। তা ছাড়া জমায়েতের কারণে শনিবার ঢাকায় ব্যাপক যানজটও হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয় হাদির মরদেহ। হাদির স্মৃতির প্রতি সম্মান জানাতে শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে বাংলাদেশে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, দুপুর ২টো নাগাদ সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজ়ায় হাদির শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। তার পর দেহ পাঠানো হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাধিস্থল প্রস্তুত করা হচ্ছে।
আমেরিকার সতর্কবার্তায় শেষকৃত্যের সময় মার্কিন নাগরিকদের ঢাকা এবং সংলগ্ন এলাকা এড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের সমাজমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করা বার্তায় লেখা হয়েছে, “জমায়েত আপাত ভাবে শান্তিপূর্ণ হলেও তা হিংসাত্মক রূপ নিতে পারে।” মার্কিন নাগরিকেরা বিক্ষোভের কিংবা বড় জমায়েতের মুখোমুখি হতে পারেন বলেও জানানো হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে হাতে সময় নিয়ে বেরোনো, স্থানীয় সংবাদসংস্থাগুলির উপর নজর রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হন হাদি। টানা ছ’দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ের পর হার মেনেছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারি উদ্যোগে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সিঙ্গাপুরে। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর মৃত্যুসংবাদ প্রকাশ্যে আসে। এর পর শুরু হয় তাণ্ডব। ‘সংগঠিত জনরোষে’ ছারখার হয়ে যায় বাংলাদেশের একাধিক সরকারি ভবন, শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের কার্যালয়। রেহাই পায়নি সংবাদমাধ্যমও। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের আবেদন উড়িয়ে রাতভর হামলা চালায় উত্তেজিত জনতা। দেশের প্রথম সারির দুই সংবাদপত্র ‘প্রথম আলো’ এবং ‘দ্য ডেলি স্টার’-এর দফতরে ঢুকে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়। ভাঙা হয় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সংস্কৃতিকেন্দ্র ছায়ানট ভবন, উদীচীর কার্যালয়। এই পরিস্থিতিতে শনিবার হাদির শেষকৃত্য ঘিরে বাংলাদেশে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হতে পারে অনেকে আশঙ্কা করছেন।