(বাঁ দিকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজ়েশকিয়ান (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ছাড়পত্র না পাওয়া পর্যন্ত ইরান পরমাণু চুক্তি সই করতে রাজি হবে না বলেই মনে করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে পরমাণু চুক্তিতে ইরান আদৌ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করতে রাজি হবে কি না, সে বিষয়ে আমি প্রত্যয়ী নই।’’
এই পরিস্থিতিতে বুধবার আমেরিকার উপর চাপ বাড়িয়েছে ইরান। সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদে বলন, ‘‘পরমাণু চুক্তি নিয়ে ষষ্ঠ দফার আলোচনা ব্যর্থ হলে এবং সংঘাতের পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে ইরান আঞ্চলিক (পশ্চিম এশিয়ার) মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোতে হামলা চালাবে।’’ তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘যদি আমাদের উপর সংঘাতের পরিস্থিতি চাপিয়ে দেওয়া হয়, মনে রাখবেন, এই অঞ্চলের সমস্ত মার্কিন সেনাঘাঁটি কিন্তু আমাদের নাগালে রয়েছে।’’
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজ়েসকিয়ানের সরকার গত সপ্তাহে জানিয়েছিল, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচিতে আমেরিকা রাজি না হলে পরমাণু চুক্তি করা হবে না। সে দেশের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছিলেন, ‘‘ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ পরিহার করা জাতীয় স্বার্থের বিরোধী। ইরান কখনও সেই পথে হাঁটবে না।’’ ওমানের মধ্যস্থতায় গত মাসে আমেরিকা এবং ইরান পরমাণু চুক্তি নিয়ে পঞ্চম দফার বৈঠক করেছিল। সেখানে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ পুরোপুরি বন্ধ করার শর্ত দিয়েছিল ওয়াশিংটন। পাশাপাশি, তেহরানকে বলা হয়, সমৃদ্ধ করা সমস্ত ইউরেনিয়াম অন্য কোনও দেশে জমা রাখতে হবে।
এই আবহে গত ৪ জুন রাষ্ট্রপুঞ্জ নিয়ন্ত্রিত আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-র ডিরেক্টর জেনারেল রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসির সঙ্গে বৈঠক করেন আরাগচি। সম্প্রতি, আইএইএ জানিয়েছিল, ইরান পরমাণু বোমা বানানোর উদ্দেশ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালাচ্ছে। আইএইএ-কে তার জবাবে ইরান জানায়, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্যই ৬০ শতাংশ পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করা হচ্ছে। সাধারণ ভাবে পরমাণু বোমা তৈরি করতে গেলে ৯০ শতাংশ পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম প্রয়োজন। এখনও তেহরান সেই দক্ষতা অর্জন করতে পারেনি বলেই আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মত। তবে ৪২ কিলোগ্রাম ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম ব্যবহার করে কম ক্ষমতাসম্পন্ন পরমাণু বোমা বানানো সম্ভব।