আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
সরকারি কর্মীদের গণছাঁটাই নিয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষেই রায় দিল সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট। মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, সরকারি কর্মীদের গণছাঁটাইয়ের প্রক্রিয়া চালাতে পারবে ট্রাম্পের প্রশাসন। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কোনও আপত্তি নেই। তবে মামলা এখনও চলবে।
আমেরিকার বিদেশ দফতর, রাজস্ব দফতর, আবাসন ও নগরোন্নয়ন দফতর এবং সামাজিক সুরক্ষা প্রশাসন-সহ ১৯টি সরকারি প্রতিষ্ঠানে গণছাঁটাই করতে চাইছেন ট্রাম্প। ওই দফতর এবং এজেন্সিগুলিতে ঢালাও পরিবর্তন করতে চাইছে তাঁর প্রশাসন। এর ফলে হাজার হাজার সরকারি কর্মী কাজ হারাতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মার্কিন কংগ্রেসে কোনও আলোচনা না করেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। কর্মীছাঁটাই নিয়ে প্রশাসনের ওই সিদ্ধান্তের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল আমেরিকার এক নিম্ন আদালত। তবে সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, গণছাঁটাইয়ের প্রক্রিয়ায় কোনও আপত্তি নেই। এই সংক্রান্ত কাজ চালিয়ে যেতে পারবে ট্রাম্প প্রশাসন।
সম্প্রতি প্রশাসনিক সংস্কারের বিভিন্ন মামলায় জরুরি ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে ট্রাম্পের প্রশাসন। প্রতি ক্ষেত্রেই ট্রাম্পের পক্ষেই রায় গিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের। এ বারও তা-ই হল। তবে এ ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের মধ্যে ছিলেন ইলিনা কেগান এবং সোনিয়া সোতোমেয়র। উভয়েই আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টে উদারপন্থী বিচারপতি হিসাবে বিবেচিত হন। যদিও মঙ্গলবার (স্থানীয় সময় অনুসারে) সুপ্রিম কোর্ট যে নির্দেশনামা জারি করেছে, তাতে কোনও বিচারপতির স্বাক্ষর ছিল না। নির্দেশে কত জন সহমত এবং কত জন নন, সেই ভোটাভুটিও উল্লেখ ছিল না নির্দেশে।
মাত্র দুই অনুচ্ছেদের ওই সংক্ষিপ্ত নির্দেশে আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আদালত মনে করছে কর্মীসংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত যে বৈধ, তা যুক্তি দিয়ে বোঝাতে ‘সম্ভবত’ সফল হবে ট্রাম্প প্রশাসন। একই সঙ্গে নির্দেশনামায় এ-ও বলা হয়েছে, কর্মীছাঁটাই বা দফতরগুলি ঢেলে সাজার বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট কোনও মতামত জানায়নি। নির্দেশনামায় বিচারপতিদের ভোটাভুটির কথা উল্লেখ না থাকলেও পরে বিচারপতি সোতোমেয়র জানান, এই নির্দেশের সঙ্গে তিনি সহমত। তবে মামলার অপর এক বিচারপতি কেতনজি ব্রাউন জ্যাকসন জানিয়েছেন, তিনি এই নির্দেশের সঙ্গে সহমত নন। আদালতের সিদ্ধান্তকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ এবং ‘অর্থহীন’ বলেও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।
বিচারপতিদের স্বাক্ষরহীন আদালতের এই নির্দেশনামার প্রভাব কতটা বিস্তৃত হতে পারে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে আমেরিকার সংবাদমাধ্যমগুলিতে জানানো হচ্ছে, সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ একটি সাময়িক নির্দেশ। নিম্ন আদালতে মামলা যেমন চলছিল, তেমনই চলবে। একই সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসন কর্মীছাঁটাই এবং দফতরগুলিকে ঢেলে সাজার কাজও চালিয়ে যেতে পারবে। ‘নিউ ইয়র্ক টাইম্স’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই নির্দেশের ফলে আপাতত ট্রাম্প নিজের পরিকল্পনামাফিক স্বাধীন ভাবে কাজ চালিয়ে যেতে পারেন। তবে পরে নিম্ন আদালত এ-ও জানাতে পারে যে, তিনি এক্তিয়ার-বহির্ভূত কাজ করেছেন।