US-Russia Submarine Power

পরমাণু ডুবোজাহাজের শক্তিতে কে এগিয়ে? সমুদ্রের তলায় কি ট্রাম্পের বাহিনীকে রুখতে পারবেন পুতিন?

নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় ওয়াশিংটন-মস্কো ঠান্ডাযুদ্ধের ইতি হওয়ার পরে এই প্রথম বার আবার সরাসরি স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হয়েছে দু’দেশের। ট্রাম্পের পরমাণু ডুবোজাহাজ পাঠানোর হুমকির জেরে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২৫ ২১:০৯
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার রাশিয়ার জলসীমার কাছে পরমাণু অস্ত্রবাহী ডুবোজাহাজ পাঠানোর ঘোষণা করার পরেই বিশ্বের দুই মহাশক্তির সংঘাতের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে বিশ্বজুড়ে। সেই সঙ্গে আলোচনায় চলে আসছে সমুদ্রের তলদেশে দুই দেশের শক্তির তুলনামূলক বিশ্লেষণ। নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় ওয়াশিংটন-মস্কো ঠান্ডাযুদ্ধের ইতি হওয়ার পরে এই প্রথম বার।

Advertisement

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বা তাঁর দফতর এখনও ট্রাম্পের ‘পরমাণু-বার্তা’র জবাব না দিলেও রুশ পার্লামেন্ট ডুমার সদস্য ভিক্টর ভোডোলাটস্কি জানিয়ে দিয়েছেন, আমেরিকার তুলনায় ডুবোজাহাজ শক্তিতে এগিয়ে রয়েছে রাশিয়া। কিন্তু সত্যিই কি তাই? আন্তর্জাতিক সামরিক পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলির তথ্য বলছে, আমেরিকার হাতে এখন ওহাইও ক্লাসের পরমাণু অস্ত্রবাহী এবং পরমাণু শক্তিচালিত ১৪টি ‘নিউক্লিয়ার সাবমেরিন’ রয়েছে। যার প্রতিটি ২০টি দূরপাল্লার পরমাণু অস্ত্রবাহী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতে পারে। শত্রুপক্ষের সেনার নজরদারি এড়িয়ে হামলা চালানোর ক্ষেত্রে বিশ্বের সর্বাধুনিক ডুবোজাহাজ হিসেবে পরিচিত এই ‘বুমার’গুলি।

এ ছাড়া মার্কিন নৌসেনার হাতে রয়েছে ৫০-এরও বেশি ভার্জিনিয়া ক্লাস, সিওউল্ফ ক্লাস এবং লস অ্যাঞ্জেলেস ক্লাস (ক্লাস ৬৮৮ নামে পরিচিত)-এর ডুবোজাহাজ। টোমাহক ও হারপুন ক্ষেপণাস্ত্র এবং এমকে-৪৮ টর্পেডোর পাশাপাশি মাইন বসানোর কাজেও তাদের জুড়ি মেলা ভার। অন্য দিকে, পুতিনের নৌসেনার হাতে রয়েছে মোট ৬৪টি পরমাণু শক্তি এবং ডিজেল চালিত ডুবোজাহাজ। এর মধ্যে ১৪টি পরমাণু ‘ওয়ারহেড’ যুক্ত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে সক্ষম। সমুদ্রের তলদেশে শত্রুপক্ষের ডুবোজাহাজের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য দ্রুতগতির টর্পেডোও রয়েছে সেগুলিতে।

Advertisement

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার ভারত এবং রাশিয়ার অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন ট্রাম্প। সমাজমাধ্যমে তিনি লেখেন, “ভারত রাশিয়ার সঙ্গে কী বোঝাপড়া করছে, তা নিয়ে আমি ভাবিত নই। এক সঙ্গে তারা তাদের মৃত অর্থনীতিকে ডোবাতে পারে।” ট্রাম্পের ওই মন্তব্যের পরেই প্রাক্তন রুশ প্রেসিডেন্ট তথা সে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ আমেরিকাকে নিশানা করে বলছিলেন, ‘‘যাদের মৃত বলা হচ্ছে, তাদের ‘ডেড হ্যান্ড’ থেকে আসন্ন বিপদকে উপেক্ষা করা সহজ হবে না।” এর পরেই ট্রাম্প শুক্রবার রাশিয়া জলসীমার কাছে পরমাণু অস্ত্রবাহী দু’টি ডুবোজাহাজ পাঠানোর করা ঘোষণা করেন। কারণ হিসেবে জানান, মেদভেদেভের মন্তব্য প্ররোচণামূলক। তাই এমন পদক্ষেপ। প্রসঙ্গত, ‘ডেড হ্যান্ড’ এমন একটি স্বয়ংক্রিয় পরমাণু প্রত্যাঘাতের পদ্ধতি, যা আশির দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের জমানায় গড়ে তোলা হয়েছিল। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল, যদি আমেরিকা বা অন্য কোনও পরমাণু শক্তিধর প্রতিপক্ষ প্রথম আঘাতে সোভিয়েত নেতৃত্ব এবং কমান্ড-অ্যান্ড-কন্ট্রোল ধ্বংস করে দেয়, তবুও স্বয়ংক্রিয় ভাবেই ‘চূড়ান্ত প্রতিশোধমূলক প্রত্যাঘাত’ করতে পারবে মস্কোর পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement