Sheikh Hasina Verdict

আল্লা জীবন দিয়েছেন, আল্লাই নেবেন, পরোয়া করি না! রায়ের আগে অডিয়োবার্তা হাসিনার, কী বললেন মৃত্যুদণ্ডের আর্জি নিয়ে

বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে আসার পর মাঝেমধ্যেই দলের সমর্থকদের উদ্দেশে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বার্তা দেন শেখ হাসিনা। অডিয়োবার্তা প্রকাশিত হয় সমাজমাধ্যমে। সোমবার রায়ের আগেও তা-ই হল।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৫ ১১:০১
Share:

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। —ফাইল চিত্র।

বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে রায় ঘোষণার আগে দেশের জনগণ এবং আওয়ামী লীগ সমর্থকদের উদ্দেশে অডিয়োবার্তা দিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জানালেন, তিনি রায়ের পরোয়া করেন না। কারণ, ‘আল্লা জীবন দিয়েছেন, তিনিই নেবেন’। আগামী দিনে বাংলাদেশে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরবে তাঁর দল, ঘোষণা করেছেন হাসিনা।

Advertisement

গত বছর জুলাই মাসে হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে প্রবল আন্দোলন হয়েছিল বাংলাদেশে। গণআন্দোলনের চাপে পড়ে হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হয়। দেশে ছেড়ে ভারতে পালিয়ে এসেছিলেন তিনি। সেই থেকে ভারতেই আছেন। মাঝেমধ্যেই এখান থেকে তিনি অডিয়োবার্তা দেন। আওয়ামী লীগের সমাজমাধ্যমের পৃষ্ঠায় তা প্রকাশিত হয়। রবিবার রাতে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের রায়ের কয়েক ঘণ্টা আগে হাসিনা তেমনই একটি বার্তা দিয়েছেন। তুলোধনা করেছেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে।

জুলাই মাসের আন্দোলনে সরকারপক্ষের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে অন্তত দেড় হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে বাংলাদেশে। হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ তুলে মামলা করা হয়েছে। নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে তাঁর দল আওয়ামী লীগের রাজ্যনৈতিক কার্যক্রম। হাসিনার বিরুদ্ধে এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত বাংলাদেশ পুলিশের প্রাক্তন কর্তা আল-মামুন রাজসাক্ষী হয়েছেন। সরকারপক্ষ একাধিক প্রমাণ উপস্থাপিত করে হাসিনার মৃত্যুদণ্ড চেয়েছে। আওয়ামী লীগ সমর্থকদের অনুমান, সোমবার আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল হাসিনাকে দোষী সাব্যস্তই করবে। দেওয়া হতে পারে মৃত্যুদণ্ডও। সমর্থকদের উদ্দেশে হাসিনার বার্তা, ‘‘আমি বেঁচে আছি। বেঁচে থাকব। আবার মানুষের হিতার্থে কাজ করব। বাংলাদেশের মাটির প্রতি আমি সুবিচার করবই।’’

Advertisement

হাসিনার মৃত্যুদণ্ড নিয়ে ভাবিত নন তাঁর পুত্র সাজীব ওয়াজ়েদ জয়ও। আমেরিকা থেকে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর মাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতে পারে। কিন্তু তিনি সুরক্ষিত রয়েছেন ভারতে। ভারত সরকার তাঁর নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করেছে। অডিয়োবার্তায় ইউনূসের বিরুদ্ধে পাল্টা গণহত্যার অভিযোগ এনেছেন হাসিনা। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলাদেশের সংবিধান বলে, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের পদ থেকে সরানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ইউনূস তো সেটাই করেছেন। শাস্তি তো ওঁর পাওয়ার কথা। উনিই হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন।’’

হাসিনার বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ, আন্দোলনকারীদের উপর তিনি গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। দাবি, তিনি সরাসরি কাউকে হত্যার নির্দেশ দেননি। অডিয়োবার্তায় হাসিনা দাবি করেছেন, পুলিশ রবার বুলেট ছুড়েছিল। তা প্রাণঘাতী নয়। মৃতদের দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখলেই বোঝা যাবে, কী ভাবে তাঁদের মারা হয়েছে। কেন সাক্ষীদের বয়ান প্রকাশ্যে আনা হয়নি, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন হাসিনা। বলেছেন, ‘‘ইউনূস আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে চাইছেন। কিন্তু তা এত সহজ নয়। আওয়ামী লীগ তৃণমূল স্তর থেকে উঠে এসেছে। কোনও ক্ষমতাদখলকারীর পকেট থেকে নয়।’’

মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের যে অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে আনা হয়েছে, তা নিয়েও সরব হয়েছেন হাসিনা। বলেছেন, ‘‘ওরা বলছে, আমি নাকি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছি। আমি তো ১০ লক্ষ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছিলাম। সেটা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ? আর ভুক্তভোগীদের মুখের উপর ওরা যে দরজা বন্ধ করে দিচ্ছে, সেটা কী ধরনের মানবিকতা?’’ সোমবারের রায়ের প্রসঙ্গে হাসিনার বক্তব্য, ‘‘ওরা রায় ঘোষণা করুক। আমি পরোয়া করি না। আল্লা আমাকে এই জীবন দিয়েছেন। আল্লাই নেবেন। আমি মানুষের জন্য কাজ করে যাব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement