Iran-Israel Conflict

নিহত দুই ইরানি সেনাকর্তাই আমেরিকা এবং ইজ়রায়েলের বিষনজরে ছিলেন! এক জনের উপর ছিল নিষেধাজ্ঞাও

সালামি এবং বাগেরি— দু’জনই ১৯৮০ সালের ইরান-ইরাক যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। শুধু সেনাবাহিনীতে নয়, ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল দুই সেনাকর্তার!

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৫ ১৪:০৭
Share:

(বাঁ দিকে) ইরান সেনাবাহিনীর কমান্ডার হোসেন সালামি এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মহম্মদ হোসেন বাগেরি (ডান দিকে) গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ইজ়রায়েলি হামলায় মৃত্যু হয়েছে ইরান সেনাবাহিনী (রেভলিউশনারি গার্ড)-র কমান্ডার হোসেন সালামি এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান (চিফ অফ স্টাফ) মহম্মদ হোসেন বাগেরির। ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যমগুলি তা নিশ্চিত করেছে। তবে এই দুই সেনাতকর্তার মধ্যে মিল ছিল অনেক। দু’জনেই যেমন ছিলেন আমেরিকার তীব্র সমালোচক, তেমনই গোঁড়া ধর্মীয় শাসনের সমর্থকও বটে।

Advertisement

সালামি এবং বাগেরি— দু’জনই ১৯৮০ সালের ইরান-ইরাক যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। শুধু সেনাবাহিনীতে নয়, ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল দুই সেনাকর্তার! বিশেষত, সালেমির। রাষ্ট্রপুঞ্জ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন— একযোগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে তাঁর উপর। তবে তাতেও দমানো যায়নি। তিনি চেয়েছিলেন, রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে ‘ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থা’কে মুছে ফেলতে! বার বার ইজ়রায়েল এবং আমেরিকার সমালোচনা শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে। অনেকেই তাঁকে কট্টরপন্থীও বলে থাকেন।

১৯৬০ সালে ইরানের ইসফাহান প্রদেশের গোলপায়েগানে জন্মগ্রহণ করেন সালেমি। ইরান-ইরাক যুদ্ধ শুরু হওয়ার ঠিক পরেই ইরান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন তিনি। পরে কমান্ডার হন। কারবালা এবং ১৪তম ইমাম হুসেন বিভাগকে নেতৃত্বও দেন সালামি। ইরান-ইরাক যু্দ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার পরে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯৯৫ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ইরান সেনার যৌথবাহিনীর কার্যনির্বাহী প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

Advertisement

ইরানে ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে সালামির ভূমিকা ছিল অপরিসীম। সেই কারণে বিশ্বের বিভিন্ন মহলের সমালোচনার মুখোমুখি হন তিনি। ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ তাঁকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। পরে একই পথে হাঁটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আমেরিকাও। ২০১৯ সালে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইয়ের সুনজরে পড়েন! তাঁকে সেনাবাহিনীর কমান্ডর-ইন-চিফ পদে উন্নীত করা হয়।

সালামির মুখে প্রায়ই আমেরিকা এবং ইজ়রায়েলের সমালোচনা শোনা যেত। মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে ইরানি বিক্ষোভকারীদের খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে মামলাও দায়ের হয় তাঁর বিরুদ্ধে। তবে তাতেও কোনও ভ্রুক্ষেপ ছিল না সালামির।

সালামির মতো বাগেরিরও মাহসা-মৃত্যুর প্রতিবাদে, দমনে কঠোর ভূমিকা নিয়েছিলেন। চেয়েছিলেন প্রতিবাদীদের কণ্ঠরোধ করতে। ১৯৮০ সালে ইরানি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন বাগেরি। ইরান-ইরাক যুদ্ধে সামনের সারিতে থেকে লড়াই করেছেন। ২০১৬ সালে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হিসাবে কাজ শুরু করেন। আমেরিকার বিরুদ্ধে তাঁকে সুর চড়াতে দেখা গিয়েছে।

ইরানের বৃহত্তম ইউরেনিয়াম কেন্দ্রে বিমানহানা চালিয়েছে ইজ়রায়েল। ‘আত্মরক্ষার স্বার্থে’ শুক্রবার সকাল থেকেই ইরানের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন রাইজ়িং লায়ন’ শুরু করেছে তারা। আকাশপথে হামলা চালানো হচ্ছে ইরানের পরমাণু কেন্দ্র এবং সামরিক কেন্দ্রগুলিতে। দাবি, তেমনই এক সামরিক কেন্দ্রেই ছিলেন ইরান সেনার উচ্চপদস্থ কর্তারা। তাঁদের অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement