twitter

World music day: নাকে অক্সিজেনের নল নিয়ে মূর্ছনা সেতারে, মৃত্যুর আগে রবিশঙ্করের শেষ সুরে মজে নেটপাড়া

এক দশক আগে এই অনুষ্ঠানের পরই হাসপাতালে ভর্তি হন রবিশঙ্কর। ফিরবেন বললেও সেতার হাতে আর মঞ্চে ফেরা হয়নি তাঁর।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২১ ১৮:৫১
Share:

নাকে অক্সিজেনের নল বেঁধেই সেতারে সুর রবিশঙ্করের। সেই দিনের ছবি। ছবি: সংগৃহীত।

নাকে অক্সিজেন মাস্ক। কিন্তু অসুস্থতাকে রীতিমতো শাসন করে চলেছেন তিনি। ভরা প্রেক্ষাগৃহে হাজার ওয়াটের আলোর মধ্যমণি হয়ে মঞ্চে বসে বাজিয়ে চলেছেন। মৃত্যু পথযাত্রী পণ্ডিত রবিশঙ্করের শেষ অনুষ্ঠানের এমনই ভিডিয়ো ক্লিপিং এ বার অতীতের ধুলোকালি ঝেড়ে উঠে এল নেটমাধ্যমে। তাতে অভিভূত নেটাগরিকরা। ভাইরাল হতে সময় নিল না একেবারেই। বিশ্ব সঙ্গীত দিবসে এর চেয়ে ভাল উপহার আর কী-ই বা হতে পারে!

Advertisement

কিংবদন্তি সেতারবাদকের এক গুণমুগ্ধ খুঁজে পেতে শনিবার পুরনো সেই ভিডিয়োটি তুলে ধরেছেন নেটমাধ্যমে। মুহূর্তের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। মাত্র ১ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, নাকে অক্সিজেনের নল রবিশঙ্করের। হাতে বিশেষ ভাবে প্রস্তুত স্বল্প দৈর্ঘ্যের সেতার। পাশে মেয়ে অনুষ্কা। সে দিন তাঁদের সহশিল্পী ছিলেন তবলিয়া তন্ময় বসু। চোখে মুখে পরিশ্রান্তির ছাপ স্পষ্ট। কিন্তু নবতিপর শিল্পীর সুরবিচ্যুতি ঘটছে না এত টুকু।

মৃত্যুর ৩৭ দিন আগে, ২০১২ সালের ৪ নভেম্বর ক্যালিফোর্নিয়ার লং বিচ-এ ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির পারফর্মিং সেন্টারের ওই অনুষ্ঠানেই শেষ বার বাজিয়েছিলেন রবিশঙ্কর। সেই সময় তাঁর বয়স ৯২ বছর। সেই বয়সে অক্সিজেন সাপোর্টেও এত সুরে কী ভাবে বাজালেন রবিশঙ্কর? জবাব দিয়েছেন সে দিন রবিশঙ্করের সহশিল্পী হিসেবে মঞ্চে থাকা তন্ময় বসু। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘ডাক্তাররা বারণ করেছিলেন। কিন্তু কথা শোনেননি পণ্ডিতজি। অক্সিজেনের নল নাকে বেঁধেই বাজাতে উঠলেন তিনি। অগত্যা মঞ্চের নীচে রাখা হল অক্সিজেন সিলিন্ডার। ডাক্তাররা দাঁড়িয়ে রইলেন উইঙ্গসের পাশে।’’

Advertisement

তন্ময় জানিয়েছেন, বেশ কয়েক বছর ধরেই অসুস্থ ছিলেন রবিশঙ্কর। কিন্তু কোনও অনুষ্ঠানে বাজানোর অনুরোধই ফেরাতেন না তিনি। হাতের সমস্যার জন্য বিশেষ ভাবে হালকা ওজনের, স্বল্প দৈর্ঘ্যের সেতার বানানো হয়েছিল। লং বিচ-এর ওই অনুষ্ঠানের পরেই অসুস্থতা বেড়ে যায়। তার কিছু দিন পরেই লা জোলার স্ক্রিপস মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় তাঁকে। শ্বাসকষ্টের সমস্যা ঘোচাতে হৃদ্‌যন্ত্রে ভাল্‌ভ প্রতিস্থাপন করা হয়। কিন্তু অশক্ত শরীরে অস্ত্রোপচারের সেই ধকল সামলাতে পারেননি তিনি। ১১ ডিসেম্বর হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তাঁর।

এক দশক আগের ওই অনুষ্ঠানেই রবিশঙ্করের সঙ্গে শেষবার বাজিয়েছিলেন তন্ময়। সে দিনের কথা মনে করতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন তিনি। বললেন, ‘‘প্রতি ট্যুরের মতো সে বারও বলেছিলেন, ‘ভাল থাকলে শীঘ্রই দেখা হবে।’ কিন্তু আর ফিরলেন না পণ্ডিতজি।’’

না ফেরার দেশে চলে গেলেও রবিশঙ্করের সৃষ্টি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়ে গিয়েছে এই গ্রহে। বিশ্ব সঙ্গীত দিবসে যার একটি নতুন করে সামনে এল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন