চিনে হানায় হত ৩৩, সন্দেহ মুসলিম জঙ্গিদের

সারি সারি নিষ্প্রাণ দেহ ঘুম কেড়েছে পৃথিবীর। চিনা রেল স্টেশনে জঙ্গি হানার ঘটনা ফিরিয়ে দিয়েছে ৯/১১-র স্মৃতি। শনিবার রাতে ইউনান প্রদেশের কুনমিং শহরের একটি রেল স্টেশনে হঠাৎই হানা দেয় ১০ জনের সশস্ত্র দুষ্কৃতী দল। এলোপাথারি ছুরি চালাতে থাকে তারা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ২৭ জনের। পরে মারা যান আরও ছ’জন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেজিং শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৪ ০৯:০৫
Share:

সারি সারি নিষ্প্রাণ দেহ ঘুম কেড়েছে পৃথিবীর। চিনা রেল স্টেশনে জঙ্গি হানার ঘটনা ফিরিয়ে দিয়েছে ৯/১১-র স্মৃতি।

Advertisement

শনিবার রাতে ইউনান প্রদেশের কুনমিং শহরের একটি রেল স্টেশনে হঠাৎই হানা দেয় ১০ জনের সশস্ত্র দুষ্কৃতী দল। এলোপাথারি ছুরি চালাতে থাকে তারা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ২৭ জনের। পরে মারা যান আরও ছ’জন। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রায় ১৩০। রবিবার বিকেল পর্যন্ত কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বাকীর করেনি। তবে চিন সরকারের দাবি, ঘটনায় হাত রয়েছে শিনজিয়াং প্রদেশের নিষিদ্ধ ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠী ‘ইস্ট তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্ট’ অথবা ইটিআইএম-এর।

সরকারি সূত্রের খবর, ইটিআইএম জঙ্গিরা যখন তাণ্ডব চালাচ্ছিল টার্মিনাল চত্বরে তখন স্টেশনে উপস্থিত বন্দুকধারী নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে মারা যায় তাদের চার জন। ইতিমধ্যে টার্মিনালের সিসিটিভি ফুটেজ হাতে এসেছে পুলিশের। তার ভিত্তিতে বাকি জঙ্গিদের খোঁজ চলছে। রবিবার সকালে এক মহিলা সন্দেহভাজনকেও গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর।

Advertisement

প্রশাসনের বক্তব্য, শিনজিয়াং-এর বাইরে এই প্রথম এত বড় হামলা চালাল ইটিআইএম জঙ্গিরা। এর আগে গত বছর অক্টোবর মাসে তিয়েন-আন-মেন স্কোয়ারে হানা দিয়েছিল তারা। সে বার মৃত্যু হয়েছিল চার জনের। ঘটনার জেরে সে সময় নড়েচড়ে বসেন কমিউনিস্ট নেতৃত্ব। দেশের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে গঠন করা হয় একটি কমিটিও। তবে সেটাই শেষ।

প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ চিনের শিনজিয়াং প্রদেশে মূলত উইঘুর সম্প্রদায়েরই বাস। উইঘুরদের স্বাধীনতার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালাচ্ছে ইটিআইএম জঙ্গিরা। সংগঠনটির সঙ্গে আল কায়দারও ঘনিষ্ঠ যোগসাজশ রয়েছে বলে অভিযোগ। ইটিআইএম জঙ্গিদের হানায় এর আগে বারবার রক্ত ঝড়েছে শিনজিয়াং ও সংলগ্ন এলাকায়। তবে শনিবারের ঘটনা ছাপিয়ে গিয়েছে সব কিছুই।

সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে এক প্রত্যক্ষ্যদর্শী ইয়াং হাইফেই জানাচ্ছেন, ঘটনার সময় স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। হঠাৎই দেখেন কালো মুখোশ পরা কিছু দুষ্ক্ৃতী হাতে লম্বা ছুরি নিয়ে ধেয়ে আসছে। প্রাণপণ ছুট লাগান। আর তাতেই প্রাণে বেঁচে ফেরেন এ যাত্রা। একই ভাবে রক্ষা পেয়েছেন বছর উনিশের কলেজ ছাত্রী লিউ চেন-ও। টুইটারে তিনি জানাচ্ছেন, “আতঙ্কে কাঁপছিলাম। চারদিকে মানুষের আর্ত চিৎকার। স্টেশনের মেঝেতে চাপ চাপ রক্ত। কোনও দিকে তাকাইনি। চোখ বুজে ছুট দিয়েছি।” সব চেয়ে মমার্ন্তিক অভিজ্ঞতা বছর পঞ্চাশের শেন গুইজেন-এর। স্বামীকে নিয়ে ছুটি কাটাতে রওনা হয়েছিলেন। ট্রেনের অপেক্ষায় যখন স্টেশনে দাঁড়িয়ে তখনই পিছন থেকে স্বামী জেয়িং ওয়েনগুয়াং-এর উপর চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। মারা যান জেয়িং।

শনিবারের এই জঙ্গি হানার পর কুনমিং-সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে সরকার। নামানো হয়েছে কম্যান্ডো বাহিনীও। ঘটনার দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন