ভ্যান গঘের সেই ছবি। ছবি: এপি
লাল, নীল, সাদা এক ঝাঁক রকমারি ফুল। দেখলেই যেন টাটকা গন্ধ এসে লাগে নাকে। হাল্কা সবুজ ক্যানভাস, সাদা মার্বেল টেবিলের উপর ফুলদানিতে সাজানো ফুলের তোড়ার নামটাও তাই ভ্যান গঘ রেখেছিলেন ‘স্টিল লাইফ, ভাস উইথ ডেজিজ অ্যান্ড পপিজ’। তাঁর সেই ছবিই গত কাল বিক্রি হয়ে গেল সোদবির নিলামে। দাম সংক্রান্ত যাবতীয় প্রত্যাশা ছাপিয়ে।
ভাবা হয়েছিল, এই ছবির দাম উঠবে ১৮৪ কোটি টাকা থেকে বড়জোর ৩০০ কোটি টাকার মধ্যে। শেষমেশ ৩৭৫ কোটিরও বেশি দাম হেঁকে ‘স্টিল লাইফ’ জিতে নিয়েছেন এক এশীয়। এই বুনো ফুলের ছবি শিল্পী এঁকেছিলেন মৃত্যুর মাস তিনেক আগে। ভ্যান গঘের এক ফরাসি চিকিৎসক ছিলেন। নাম ডক্টর পল গ্যাচেট। ১৮৯০ সালে তাঁরই বাড়িতে বসে কানভ্যাস রাঙিয়েছিলেন গঘ। তাঁর জীবদ্দশায় অল্প যে ক’টি ছবি বিক্রি হয়েছিল, ‘স্টিল লাইফ’ সেই তালিকায় অন্যতম। নিউ ইয়র্কের মিউজিয়াম অব মর্ডান আর্টের প্রতিষ্ঠাতা এ কনগার গুডইয়ার ১৯২৮ সালে কিনেছিলেন এই শিল্পকীর্তি।
তার পর বহু যুগ তাঁদের পরিবারেই থেকে গিয়েছিল এই ছবি। যিনি ছবিটি সোদবির নিলামে তুলেছেন, তাঁর হাতে এটি আসে ১৯৯০-এর দশকে।
গত কালের নিলামে ভ্যান গঘের কাজ আকাশছোঁয়া দামে বিক্রি হলেও আগে এর চেয়েও বেশি দাম ছুঁয়েছিল তাঁর ছবি। এখনও পর্যন্ত ওলন্দাজ এই শিল্পীর কাজ সর্বোচ্চ প্রায় ৫০০ কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছে।
ভ্যান গঘের ছবির পাশাপাশি সোদবির নিলামে উঠেছিল আধুনিক স্থাপত্যের দুটি অসামান্য কীর্তিও আলবার্তো জিয়াকোমেত্তির ‘চ্যারিয়ট’ এবং ইতালীয় স্থপতি আমেদিও মোদিগ্লিয়ানির ‘তেতে’। ৬২০ কোটি ৮৯ লক্ষ টাকায় হাত বদল হয়েছে ১৯৫১ সালে তৈরি জিয়াকোমেত্তির ব্রোঞ্জ মূর্তির।
আর ‘তেতে’-র দর ছুঁয়েছে প্রায় ৪৩০ কোটির গণ্ডি। যেতে যেতেও যেন থমকে দাঁড়িয়েছে এক দেবীমূর্তি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্মকে চ্যারিয়ট একই সঙ্গে শক্তি ও জাদু-মন্ত্র শুনিয়েছিল মনে করেন সোদবির অন্যতম কর্তা সাইমন শ। আমেদিও মোদিগ্লিয়ানির ‘তেতে’ যে দামে বিক্রি হয়েছে, তা শিল্পীর জন্য ব্যক্তিগত রেকর্ড। আকারে ছোট, চুনাপাথরের উপর তৈরি শিল্প নিদর্শন তৈরি হয়েছিল ১৯১১-১২ সালে। ‘স্টিল লাইফ’-এর মতোই ‘তেতে’-র দরও প্রত্যাশা ছাপিয়েছে।