বাসে আগুন লাগানোর নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ এনে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করল বাংলাদেশের পুলিশ।
সরকারের ইস্তফা চেয়ে খালেদা ৫ জানুয়ারি গোটা দেশে যে অবরোধের ডাক দিয়েছেন, তাতে সাড়া দিয়ে তাঁর দল বিএনপি ও শরিক জামাতে ইসলামির কর্মীরা চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে একের পর এক যানবাহনে আগুন দিচ্ছে। তাদের হামলায় এ পর্যন্ত ৬৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে, যাঁদের বেশির ভাগই নিরীহ মানুষ মারা গিয়েছেন আগুনে পুড়ে। মারাত্মক দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন আরও অন্তত ৫৫ জন। আগুনে পুড়েছে অন্তত ৩০০টি গাড়ি। শুক্রবার রাতে ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকায় খালেদা অনুগামীরা একটি যাত্রিবাহী বাসে পেট্রোল বোমা ছুড়ে আগুন ধরিয়ে দিলে অন্তত ৩২ জন মারাত্মক ভাবে দগ্ধ হন।
পুলিশ জানায়, শনিবার যাত্রাবাড়ি থানায় দায়ের করা মামলায় বাসে হামলার চক্রান্তকারী হিসেবে খালেদা জিয়া-সহ বিএনপি-র ১৮ জন নেতা-নেত্রীর নাম দিয়েছে পুলিশ। চক্রান্ত বাস্তবায়নের জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে দলের আরও ৫০ কর্মীকে। বৃহস্পতিবারই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছিলেন, অবরোধের নামে হিংসা বন্ধ না-হলে খালেদার বিরুদ্ধেও সরকার ব্যবস্থা নেবে। তার দু’দিন পরেই এই মামলা, যার জেরে গ্রেফতার পর্যন্ত করা যায় খালেদাকে।
শনিবার দুপুরেই খালেদার ছোট ছেলে আরাফত রহমান কোকোর মৃত্যু সংবাদ আসে মালয়েশিয়া থেকে। খালেদাকে সমবেদনা জানাতে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা তাঁর গুলশনের দফতরে গেলে দরজা বন্ধ করে তাঁকে ঢুকতে দেননি বিএনপি নেতৃত্ব। হাসিনা ফিরে যান। বিএনপি-র মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভি আজ বিবৃতি দিয়ে বলেন, হাসিনার সমবেদনা জানাতে আসাটা ছিল নিছক কুমিরের কান্না। মামলা করে খালেদাকে গ্রেফতারের ছক কষে তার পরে হাসিনা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন।
শাসক দল আওয়ামি লিগ অবশ্য খালেদার ছেলের অকালমৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। মঙ্গলবার তাঁর দেহ আসার পরে শেষকৃত্য অনুষ্ঠানেও আওয়ামি লিগের নেতারা অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন। সরকারি সূত্রের খবর, ছেলের শেষকৃত্য না-হওয়া পর্যন্ত খালেদার বিরুদ্ধে কোনও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। তবে তাঁদের নেত্রীকে গ্রেফতার করার চেষ্টা হলে সরকার বিপদে পড়বে বলে হুমকি দিয়েছেন বিএনপি-র মুখপাত্র।