পুজোর আগেই গানে গানে বোমা ফাটালেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য। ৩১ অগস্ট বিশ্ব বাংলা মেলা প্রাঙ্গণে পুজোর আমেজ এনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘ব্যান্ড স্টর্ম’। আর সেখানেই ছয়টি ব্যান্ডের অন্যতম হিসেবে পারফর্ম করে অনির্বাণ ভট্টাচার্য, দেবরাজ ভট্টাচার্য, শুভদীপ গুহদের গানের দল ‘হুলিগানিজ়ম’। আর তার পর থেকেই তাঁদের গান ‘তুমি মস্তি করবে জানি’ সোশ্যাল মিডিয়া কাঁপাচ্ছে। সেই গানে একাধিক নেতাকে বিদ্রুপ করা হয়েছে।
ভাল, মন্দ দুই ধরনের প্রতিক্রিয়া পেয়েছে গানটি। এক দল প্রশংসায় পঞ্চমুখ যে এই সময় দাঁড়িয়ে এক সঙ্গে রাজ্যের তিনটি প্রধান দলের ৩ নেতাকে নিয়ে এ ভাবে প্যারোডি লিখতে এবং গাইতে নাকি 'দম' লাগে। অন্য দিকে কেউ কেউ আবার বিরোধিতাই করেছেন। কিন্তু জনগণ যে পক্ষই নিক না কেন, গানের কথা-সুর, সবটা মিলিয়েই ‘মেলার গান’-এর পর ফের ভাইরাল ‘হুলিগানিজ়ম’-এর আরও একটি গান।
আরও পড়ুন:
এই গানের কথায় কখনও মোদী, এসআইআর এবং ‘আচ্ছে দিন’-এর কথা উঠে এসেছে, কখনও আবার কুণাল ঘোষ, দিলীপ ঘোষ, এবং শতরূপ ঘোষের কথা। গানের শুরুতেই অনির্বাণকে গাইতে শোনা যায়, 'এসব গান-বাজনা ছাড়, চল প্রোমোটারি করি, বড় গাড়ি চড়ি / ইলেকশনের মেজাজ বুঝে দলটা বদল করি'। এর পরই তিনি বলে ওঠেন, ‘এই আমাদের দোষ/ গানবাজনা করতে এসে এ সব কথা বললে/ রেগে যাবে কুণাল ঘোষ।’ কেবল কুণাল নন, গানের কথায় একই সঙ্গে উঠে আসে ‘গরুর দুধে সোনা’ এবং দিলীপ ঘোষের প্রসঙ্গ। গায়ক বলেন, ‘আরেক ঘোষও আছে/ দাদা খুবই রোমান্টিক/ ঘোষ দিয়ে যায় চেনা/ গয়না দোকান সব তুলে দাও/ গরুর দুধে সোনা।’
অনির্বাণের পর দেবরাজকে শতরূপ ঘোষকে নিয়ে গাইতে দেখা যায়। তিনি বলেন, ‘আরেক ঘোষও আছে, ওই বিপ্লবীদের পার্টি/ টিভি চ্যানেল, পার্টি অফিস বড্ড হাঁটাহাঁটি/ তাই কিনেছে গাড়ি/ দামটা বেশি খুব/ ফেসবুকেতেই রাজা, মোদের দাদা শতরূপ।’
এই বিষয়ে জানিয়ে রাখা ভাল, গত বছর আরজি কর কান্ডের পর অনির্বাণ ভট্টাচার্যকে সেই অর্থে প্রতিক্রিয়া দিতে বা প্রতিবাদে দেখা যায়নি। তিনি সাফ জানিয়েছিলেন কাজের মাধ্যমে প্রতিবাদ করতে হবে। এর পর ফেডারেশন বনাম ডিরেক্টরস্ গিল্ডের সমস্যায় কার্যত কোণঠাসা হয়েছেন তিনি। হাতে সেই অর্থে কোনও কাজ নেই। আর তখনই এ ভাবে সাড়া ফেলল তাঁদের গানের দলের গান!
প্রসঙ্গত, অনির্বাণ আনন্দবাজারকে অতীতে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ‘হুলিগানিজ়ম’ তৈরির প্রসঙ্গে কথায় কথায় বলেছিলেন ‘‘আমার কাছে দুটো অপশন ছিল, এক রাজনৈতিক দল তৈরি করা। দুই গানের দল তৈরি করা। আমি ভাবলাম গানের দল তৈরি করাই ভাল।’’ যদিও সবটাই তিনি নিছক মজা করেই বলেছিলেন। তবে তিনি রাজনৈতিক দল তৈরি না করেও গানে গানে যে রাজনীতিকে বিদ্রুপ করলেন সেটা বলাই যায়।
‘হুলিগানিজ়ম’-এর এই প্যারোডি কিন্তু মজা হিসেবেই নিয়েছেন কুণাল ঘোষ। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভাইরাল গানের ভিডিয়ো শেয়ার করে লেখেন, ‘অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্যর নতুন ব্যান্ড ‘হুলি-গান-ইজম’-এর গানের অংশ। আমার মজা লেগেছে, ভাল লেগেছে। গানের ধরন, উপস্থাপনাও উপভোগ করলাম। একটু তির্যক? তাতে কী! কুণাল ঘোষ এ সব মজা নিতে জানে। ভাল থেকো অনির্বাণ।’
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।