মাত্র কিছু দিন আগেই শেষ হয়েছে ধারাবাহিক। বর্তমানে সাময়িক বিরতিতে রয়েছেন অভিনেতা রণজয় বিষ্ণু। এ দিকে পুজো প্রায় দরজায় কড়া নাড়ছে। এ বার পুজোর পরিকল্পনা কী পর্দার 'অনিকেত'-এর?
ধারাবাহিকের ব্যস্ততা না থাকলেও এখনও পুজোর পরিকল্পনা ঠিক করেননি অভিনেতা! হ্যাঁ, তেমনটাই আনন্দবাজার ডট কমকে জানিয়ে বলেন, “এখনও অবধি কিছু ঠিক করা হয়নি। অষ্টমী অবধি মূলত পরিক্রমা থাকে। এই বারে ইচ্ছে আছে, পরিক্রমার পর আমার এক বন্ধুর বাড়ি আছে গ্রামের দিকে, সেখানে যাওয়ার। যাওয়ার পথে রাস্তা দিয়ে কিছু পুজো দেখতে দেখতে যাব, আর হয়তো সেখানেই এক-দু'দিন থাকব। তারপর দশমী-একাদশীতে ফিরব।”
পুজোর পরিকল্পনা এখনও না হলেও নিশ্চয় পুজোয় শপিং শুরু হয়ে গিয়েছে? অভিনেতা জানান সেটাও হয়নি। তবে তিনি নিজের জন্য কিছু না কিনলেও, তাঁকে তাঁর বাড়ির সবার জন্য ‘অভিভাবক’ হিসেবে পুজোর পোশাক কিনতেই হয়। এই বিষয়ে রণজয় বলেন, “আমি নিজের জন্য শপিং-টপিং খুব একটা করি না। আমাকে প্রচুর লোককে দিতে হয়। দেখছি, যত বছর যাচ্ছে উত্তরোত্তর সেই লিস্টটা বড় হচ্ছে। সেগুলি করতে করতেই অবশেষে যখন নিজের দিকে তাকাই দেখি অবস্থা খুবই কঠিন। সারা বছর যা থাকে, সেগুলি দিয়েই চলে যায়।” বলতে বলতেই হেসে ফেলেন অভিনেতা।
‘রিটার্ন গিফট’ কি কিছু পাওয়া যায় জানতে চাইলে বলেন, “পাই। কিন্তু আমি বারণ করি, দিতে দিই না। কারণ, আমার বাড়িতে আমিই অভিভাবক। আমার তিন মামা, তিন মাসি, মা- এঁদের সবার অভিভাবক আমি। এঁরা সবাই খুবই বয়স্ক, ষাটোর্ধ্ব সকলেই। ওঁদের সবার দায়িত্ব আমার উপরেই।’’
আর পুজোর ডায়েট কিংবা পুজোর প্রেম? সেগুলির কী খবর? রণজয় ডায়েটের প্রসঙ্গ উঠতেই সাফ জানান, পুজোয় “ওটা পাপ। ছিঃ! পুজোর অন্যতম নিয়ম হচ্ছে কবজি ডুবিয়ে খাওয়া।” আর প্রেম? সেটাও ওই চোখাচোখি বা ‘ফ্লার্ট’-এই আটকে থেকেছে বলে জানান ‘গুড্ডি’র ‘স্যারজি’। বলেন, “পুজোর সময় হয়নি। ওই হালকা চোখাচুখি-ফ্লার্ট এ সব তো ছোটবেলায় পুজোর সময় খুবই হতো। কিন্তু পরবর্তী সময় ওগুলি নিয়ে যে লম্বা সময় ধরে এগিয়ে চলা তেমন কিছু হয়নি।”
দেবীর কাছে রণজয়ের এবার একটিই প্রার্থনা থাকবে, যেন মানুষের ধৈর্য বাড়ে। এই বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে খানিক আবেগপ্রবণ হয়ে অভিনেতা বলেন, “মানুষ একটু সামাজিক হোক, ধৈর্য আসুক। আমরা খুবই অসামাজিক হয়ে যাচ্ছি যত দিন যাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে তো আছেই, গোটা ভারতেই দেখছি। এত অস্থির হয়ে রয়েছে লোকজন। খুবই স্বার্থপর, আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছে মানুষ। কোথায় যে ছুটছে, কী যে পেতে চায়, কেউ কেউ অন্য়দের ছোট করে নিজে বড় হতে, সবাই ভুল নিজে ঠিক প্রমাণ করতে চায়... একটা অদ্ভুত দৌড়ে ছুটছে মানুষ, যেটা খুবই ভয়ের সব দিক থেকেই। খুব ভয়ঙ্কর একটা দিন আসতে চলেছে। গ্রামেগঞ্জের দিকে এটা একটু কম। ভগবানকে খুব বলি তাই, এই যে ভয়ঙ্কর একটা পাপের দিকে এগোচ্ছে সবাই, তার থেকে মুক্তি দাও।”
‘গুড্ডি’, ‘কোন গোপনে মন ভেসেছে’র হাত ধরে বাঙালির ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছেন রণজয়। তিনি এই সাময়িক বিরতি কাটিয়ে উঠে কবে পর্দায় ফিরছেন জানতে চাইলে তিনি তাঁর দর্শকদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়ে বলেন, “ছোট পর্দার ৪টে কাজ ছেড়ে বসে আছি, কারণ একটুখানি ‘ব্রেক’-এ আছি। যখন ইচ্ছে হবে, তখন আবার দেখা যাবে। তবে মানুষ অন্য রকম কাজে আমায় এ বার দেখতে পাবে। একটা অন্য রকম প্ল্যাটফর্মের জন্য কাজ করছি, দু’টো সিনেমা করছি। নিজস্ব কিছু লেখালিখির কাজ, থিয়েটারে আবার ফেরার চেষ্টা করছি। মাথাটাকে একটু হালকা করি, তার পর আবার ভাবব।”
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।