তাঁর ‘উপস্ সরি’ বলার ধরন এখন দারুণ জনপ্রিয়। চেনা ভঙ্গিমায় কাউকে এই ভাবে ‘সরি’ বলতে শুনলেই সমাজমধ্যমের সেই চেনা মুখটাই মনে পড়ে। কে? ‘বং শর্ট’ ওরফে শুভম চৌধুরী, যিনি তাঁর ভিডিয়োর মাধ্যমে বাঙালির মনে জায়গা করে নিয়েছেন। এ হেন নেটপ্রভাবীর এ বারের পুজোর পরিকল্পনা কী সেটাই তিনি ভাগ করে নিলেন আনন্দবাজার ডট কমের সঙ্গে।
পুজোর পরিকল্পনা বলতে শুভম জানালেন তিনি অষ্টমীর দিনটা ছাড়া পুজোর বাকি দিনগুলি কলকাতাতেই থাকবেন। জমিয়ে ঠাকুর দেখবেন। তাঁর কথায়, “ঠাকুর দেখব। বেশ ভালই লাগে ঠাকুর দেখতে।” কিন্তু এই সময় অনুরাগীরা যদি ছবি তুলতে আসেন তবে কি তিনি তাঁর সেই বেদবাক্য শুনিয়ে দেবেন? হেসে জবাব দিয়ে বলেন, “প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে মানুষের অসুবিধা হলে বলি যে না থাক, বাইরে গিয়ে ছবি তুলছি। নইলে ভালই লাগে। খ্যাতি কার না ভাল লাগে? আমারও ভাল লাগে।”
আরও পড়ুন:
আর পুজোর কেনাকাটা কত দূর? হল, নাকি এ বার শেষ লগ্নে পরীক্ষার পড়ার মতো করে হবে? হেসে নিয়ে শুভম জানান, “হবে, একটু একটু হয়েছে। বাকি করতে হবে।”
পুজোর নানা বিষয়ে কথা বলতে বলতেই উঠে আসে ছোটবেলার পুজোর প্রসঙ্গ। কেমন ছিল সেই সময়টা। কী কী করতেন জানতে চাইলে এই জনপ্রিয় নেটপ্রভাবী বলেন, “ছোটবেলাতে যে পুজোগুলি খুব ছোট ছিল, সেগুলি এখন ‘খুব বড়’ হয়ে গিয়েছে। তাতে যে মুশকিলটা হয়েছে সেগুলি আর দেখা হয় না, কারণ ওখানে এত বেশি ভিড় হয় যে কী বলি!” শুভম এ দিন এও জানান, “ছোটবেলায় আমি খুব হাওড়ার পুজো দেখতে যেতাম। অনেক দূর দূর গিয়ে ঠাকুর দেখতাম। এখন আর সেখানে যাওয়া হয় না। ওখানকার পুজো খুব সুন্দর হয়। কিন্তু ওই আর কী কলকাতার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে গিয়ে ব্যাপারটা একটু ঘেঁটে গেছে। ভিড়টা একদম ভাল ভাবে সামাল দিতে পারে না। তাই আর যাওয়া হয় না। এড়িয়ে যাই। হাওড়ায় গিয়ে সকালবেলা ঘুরে ঘুরে ওই ঠাকুর দেখাগুলি মিস করি।”
পুজোর সময় মন দেওয়া নেওয়া হয়েছে নাকি প্রেম প্রস্তাব পেলেই পত্রপাট ‘উপস্ সরি’ বলে দেওয়া হয়েছে? প্রশ্ন শুনেই হেসে ফেলেন শুভম। বলেন, “কলেজে পড়ার সময় ওই অপেক্ষা করাটা.... ওই সময় পঞ্চমী পর্যন্ত ক্লাস হতো। পঞ্চমীর দিন ক্লাসের পর বেরিয়ে যেখানে যেখানে ঠাকুর আসত ঘুরে ঘুরে দেখতাম। এখন তো মহালয়ার দিনই অনেক জায়গায় ঠাকুর এসে যায়, উদ্বোধন হয়ে যায়। তখন তো হতো না। যে কটা জায়গায় আসত ঠাকুর, দেখতে যেতাম। বাড়িতে তো বলা যেত না যে বিশেষ মানুষের সঙ্গে যাচ্ছি। তাই কলেজের গ্রুপের সঙ্গে যেতাম, যেখানে দু’জনেই থাকতাম। বাড়িতে জিজ্ঞেস করলে বলতাম যে এই চারজনের সঙ্গে বেড়িয়েছিলাম, তখন তো আর বোঝার উপায় থাকত না। কিন্তু ওই ১০টার মধ্যে ফিরে আসতে হবে, এই ব্যাপারটা থাকত। মেনে চলতাম। বিশাল যে সাহসী ছিলাম সেটা নয়. তাই সারা রাত জেগে ঠাকুর দেখব, এমনটা হয়নি। নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে যতটা করা যায় করেছি।”
দেবীর কাছে এ বার কি প্রার্থনা থাকবে শুভমের? তাঁর মতে ‘কাঠি’ করা থেকে যেন মানুষ বিরত থাকেন সেটুকুই চাইবেন তিনি। তাঁর কথায়, “জীবন তো একটাই, সেটা অন্যের পিছনে কাঠি না করে ঠিকঠাক রাখে যেন মানুষ সেটাই চাইব। কেউ যেন কাঠি না করতে আসে অন্যের জীবনে, যা করার নিজের জীবনে করে। যে যার কর্মফল ভোগ করবে। কারও জন্য যেন অন্য কাউকে না ভুগতে হয়, বা উল্টোটা। বক্তব্য একটাই কাঠি করো না, বরং কাঠি দিয়ে লাঠি বানাও সেই লাঠি মজবুত হোক। জীবনের সব সমস্যা সেটা দিয়ে দূর করো, এটাই চাওয়ার।”
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।