সোহিনী ও আবির। —নিজস্ব চিত্র।
কমিউনিটির সক্কলে মহালয়া শুনেছেন। তার পর ব্রেকফাস্টে ফুলকো লুচি আর সাদা আলুর তরকারি। পুজো শুরু করলেন অরিন্দম শীল।
শুরু হল আড্ডা...কতগুলো কথা উঠে এল...
জগদ্ধাত্রী পুজোর ঠাকুর গড়তে গিয়ে দাদুর হাত ধরে ছোট্ট ছেলেটি বলেছিল, ‘‘এ বার দুর্গাঠাকুর নাও না। দুর্গাপুজো করব...’’
অষ্টমীর সন্ধিপুজোর আলো পেরিয়ে অন্ধকার গলিতে জীবনের প্রথম চুমু খেয়েছিল মেয়েটি...
বিজয়গড় থেকে ম্যাডক্স স্কোয়ারে বুকে তৃষ্ণা নিয়ে মেয়ে দেখতে আসতো একটি ছেলে। দেখার জন্যই আসা, কারণ দক্ষিণ কলকাতার ওই মেয়েরা নাকি তাকে পাত্তা দেবে না...
পুজোয় প্যান্ডেলেই মেয়ে দেখা আর প্যান্ডেলেই শেষ। প্যান্ডেলে নতুন হিন্দি ছবির গান বড্ড টানতো তাঁকে...
দেখুন আড্ডার ভিডিয়ো
আরও পড়ুন: পুজোয় কলকাতা ছাড়বেন সোহিনী, কেন জানেন?
এমন সব রোমাঞ্চকর অজানা অনুভূতি নিয়ে মহালয়ার পূণ্য দিনে পূর্ণ আড্ডা দিলেন অরিন্দম শীল, আবির চট্টোপাধ্যায়, সোহিনী সরকার আর রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়।
অরিন্দম শীলের উৎসাহেই তাঁর বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু হয়েছিল!
অষ্টমীর সন্ধেবেলা পাড়ার গলিতে বান্ধবীর দাদাকে জীবনের প্রথম চুমু খেয়েছিলেন সোহিনী সরকার!
বিজয়গড় থেকে পুজোয় মেয়ে দেখতে ম্যাডক্স স্কোয়্যার আসতেন রাহুল!
আবীর খুঁজতেন হিন্দি ছবির গান। মেয়েরা নাকি তাঁকে পাত্তা দিত না!
‘‘আর আজ সকলেই বলছে, যে ভাবেই হোক আবিরকে চাই। এ বছর সোহিনী আর আবিরের ফিতে কাটার জোর বাজার। অথচ এত কিপ্টে আবির, কিচ্ছু খাওয়ায় না,’’ মাঠে নামলেন ‘ব্যোমকেশ গোত্র’র ক্যাপ্টেন অরিন্দম শীল। পাশে বসা সোহিনী বলছেন, ‘‘অরিন্দমদা এ ভাবে বোল না। আবিরদা কিপ্টে নয়, হিসেবি। আমাকে তো গিফট দিয়েছে।’’
আরও পড়ুন: যিশুর পত্নী-প্রেম নিয়ে কী বললেন সৃজিত?
পরিচালক প্রচণ্ড অবাক! ‘‘আবির চট্টোপাধ্যায় সোহিনী সরকারকে গিফট দিয়েছে! আবির তোর বউ জানে?’’
মুখ খুললেন আবির। বললেন, ‘‘আমার সব বান্ধবীদের নন্দিনীর সঙ্গে বেশি ভাব। আর সোহিনী তো নন্দিনীদি বলে, বৌদি না।’’
কিন্ত গিফটটা কী?
আবির আর সোহিনী দু’জনেই মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
উপহারের মধ্য যত রহস্য।
অন্য দিক থেকে রাহুল বললেন, ‘‘এ বার পুজো আর ছোটবেলা খানিক এক হয়েছে, দু’ক্ষেত্রেই ‘গান’টা কমন। এখন বন্দুক। আর তখন বন্দুক দিয়ে বেলুন ফাটানো।’’
‘‘আসলে আমাদের পুজোর স্মৃতিগুলোর অনেক মিল। আমাদের তো বয়েস কাছাকাছি। আমার যেমন পুজোয় বেশি জামা হত না। অত আত্মীয়স্বজন নেই। নবমী থেকে রিপিট! বন্ধুদের সামনে লজ্জা লাগত,’’ মুখ কাচুমাচু করে বললেন সোহিনী। রাহুল সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলেন, ‘‘আমার উল্টো। সাত পিসি, ছয় মাসি। অনেক জামা। তবে আবিরদার সঙ্গে একমত, মেয়েরা পাত্তা দিত না। জানতাম, সাউথের মেয়েদের তখন অ্যফোর্ড করতে পারব না। আর তা ছাড়াও পুজোর আলো মোটেই কনে দেখা আলো নয়। চন্দননগরের আলো। সব কিছু ভাল লাগে। ওই সময় প্রেম করতে নেই।’’ রাহুলের সাফ কথায় সায় দিলেন আবির। ‘‘নতুন যাঁরা শুনছেন, রাহুলের টিপস্ নিয়ে রাখুন,’’ আবিরের সতর্কবাণী।
অরিন্দম শীল যদিও আরও রোম্যান্সের দিকে হাঁটলেন, ‘‘আরে পুজো প্যান্ডেলে দেখা হবে। চোখাচোখি হবে। সারা দিন তাকে নিয়ে ভাববো, এটাই তো রোম্যান্স।’’
এখন ব্যোমকেশের প্রমোশন আর দুর্গাপুজো। সারা দিন এই দুই বিষয় নিয়ে ভাবছেন অরিন্দম শীল।
‘‘আরবানা-তে দারুণ পুজো হবে। প্রচুর খাওয়া। সব আমার প্ল্যান। আসলে বাড়িতে যখন পুজো হতো লোকজন খাওয়া। নতুন জামা। আর বিজয়ার প্রণাম শেষে টাকা পাওয়া। আহা! সেই নতুন টাকার গন্ধ! এখন সব হয়। মেয়েকে দিই। এমনকি, ওই দিনে শুক্লাও আমায় প্রণাম করে,’’ আপ্লুত অরিন্দম শীল।
চমকে উঠলেন আবির, রাহুল, সোহিনী, ‘‘শুক্লাদি প্রণাম করে! ভাবা যায় না!’’
ক্যাপ ফাটানো নতুন জামার সঙ্গে রাহুল ছোটবেলায় উন্মুখ হয়ে থাকতেন পূজাবার্ষিকীর জন্য। ‘‘শঙ্কু না শীর্ষেন্দু? নাকি নীললোহিত? বাড়িতে কাড়াকাড়ি চলত,’’ উত্তেজিত রাহুল। যেন হাতের মুঠোয় অনেক ছোটবেলা!
ঘড়ি ধরে আড্ডা প্রায় ফুরোয়।
সোহিনীর পুজো প্রেম নিয়ে জানতে চাইলে লাজুকস্বরে তিনি বললেন, ‘‘আমার প্রথম চুমু অষ্টমীতে। সে বার পুজোয় প্রথম ‘স্মুচ’ শব্দটার সঙ্গে পরিচিত হই।’’
আবির পাশ থেকে টিপ্পনি কাটে, ‘‘স্মুচ শব্দের সঙ্গে পরিচিতই হলি না কি আরও?’’
সোহিনী আরও স্পষ্ট, ‘‘না, অনুভূতিও হল।’’
‘‘তার পর কী হল? এগলো?’’ এতক্ষণে আবির যেন কথা বলার বিষয় পেয়েছেন।
‘‘উফ্ফ! অন্ধকার গলিতে। আর কী হবে, কী লজ্জা যে পেয়েছিলাম...’’, সোহিনী বলেন।
‘‘এ বার তা হলে প্রথম চুমুর উদযাপন হোক,’’ অরিন্দম বলে ওঠেন।
সোহিনী খানিক চুপ! তার পর বলেন, ‘‘মানুষটার সঙ্গেই যোগাযোগ নেই। ফেসবুকেও খুঁজি না। থাক। ওইটুকুই! আসলে পুজোর ওই মনটাই আর নেই...।’’
এখন আনকোরা মন দেখছে অন্য জীবন...
ভিডিয়ো: অজয় রায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy