চার দিকে এখন বিষাদের সুর। উমা ফিরে গেছেন কৈলাসে। কিন্তু উৎসবের রেশ যেন কিছুতেই কাটতে চাইছে না। দুর্গাপুজোর আনন্দ আর আবেগে মাখো-মাখো হয়ে কাটালেন অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক ও তাঁর স্ত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজ। বিয়ের পরে এটি তাঁদের দ্বিতীয় পুজো। আর তাঁদের কাছে উৎসবের বিশেষ আকর্ষণ নিয়ে জানতে চাইলেই হেসে গড়াগড়ি যাওয়ার জোগাড়।
নিজস্ব চিত্র
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর আপ্তসহায়ক শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির পুজোয় এ বারও ভিড় জমল বাংলার তারকা থেকে সাধারণ মানুষের। সেখানেই লাল পাঞ্জাবিতে ধরা দিলেন কাঞ্চন মল্লিক। সঙ্গে ছিলেন শ্রীময়ী। এই দিন দেবীকে বরণ করলেন শ্রীময়ী।
আরও পড়ুন:
দু'বছর হয়েছে তাঁদের বিয়ের। বিয়ের আগে উত্তর কলকাতার মেয়ে হওয়ার দরুন, বাগবাজার সর্বজনীনে দেবী বরণ সেরে আসতেন তিনি। পুজোর কোন আকর্ষণ তাঁর সবচেয়ে বড়? একটুও না ভেবে শ্রীময়ীর উত্তর, "আমার কাছে সিঁদুর খেলাটা বিশেষ।" তিনি বললেন, “বিয়ের আগে তো সিঁদুরটা খেলতে পারতাম না কিন্তু তাও দেবীকে একটু সিঁদুর ঠেকিয়ে, গালে মেখে একটু ছবি তোলা। এইটা একটা রীতির মতো হয়ে গিয়েছিল। সিঁদুর খেলাটা অতি আবশ্যক। ওই জন্যই আমি কোথাও থাকি না, আমি কলকাতাতেই ফিরে আশি, সিঁদুর খেলব বলে।”
আরও পড়ুন:
ছেলেদের সিঁদুর খেলা কতটা হয়? কাঞ্চন বললেন, “খেলব কি খেলব না করে শুরু হয় প্রথমে, তার পর বউ যেই গালে লাগিয়ে দায়, তার পর দু'-এক জন একটু যারা সাহসী তারা এসে বলে একটু সিঁদুর দেব? আমিও হ্যাঁ, হ্যাঁ করি। ব্যাস! শুরু হয়ে যায়। এর পর আর অসুবিধে হয় না। কিন্তু একটাই কথা , আমি যেমন পাড়ার দুর্গা পুজো ছেড়ে কোথাও যায় না, কোথাও না, সে যতই শো আসুক, বাইরে বা যেখানেই হোক, পুজোয় আমার পাড়া ছেড়ে বাইরে কোথাও জীবনে যাই না। শ্রীময়ীর বাবা ও মায়ের দু'দিকেই পুজো হয়, একটা মুর্শিদাবাদ , একটা আসানসোলে। আমরা এ বার গেছিলাম, এক দিনের জন্য ওর বাবার তরফের দিকে। পুজোয় একটা দিন কাটিয়ে এলাম।” তিনি আরও যোগ করে জানালেন, শ্রীময়ীর কাছে দুর্গাপুজোর আলাদা গুরুত্ব রয়েছে, শুধু মনের টান নয়, তাঁর নামের একটা অর্থও যে দেবীর আরেক নাম। এবং তার পাশাপাশি, চুটিয়ে ঠাকুর দেখা চলে সারা রাত জেগ, উত্তর থেকে দক্ষিণ, কিছু বাদ থাকে না। আরও জানা যায় যে, শ্রীময়ী শুধুমাত্র সিঁদুর খেলার জন্যই পৃথিবীর যেখানেই থাকুক না কেন, পুজোয় কলকাতায় ফিরে আসেন, এবং আগামী দিনেও তাই করবেন।
তবে এ বার একটু ব্যতিক্রম। এক দিনের জন্য গিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদে, শ্রীময়ীর বাবার বাড়ির পুজোয়। ৩০৫ বছরের ঐতিহ্যের সেই পুজোয় প্রথম বার জামাই উপস্থিত হলে, জামাই আদরে বিশেষ রীতি পালন করা হয়, অর্থাৎ জামাইকে কোলে তুলে নেওয়া। কাঞ্চন জানালেন, “সন্ধিপুজোয় অঞ্জলি দিয়ে অন্য রকম অভিজ্ঞতা হল।”
এবং সব শেষে, আনন্দের মাঝেও একটু মন খারাপের সুর, তাঁদের মেয়ে কৃষভিকে এই সিঁদুর খেলায় আনতে পারেননি বৃষ্টির কারণে, জানালেন শ্রীময়ী।
(এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।