অভিনেতা অম্বরীশ ভট্টাচার্য
উত্তর কলকাতার এক আবাসনে নিজের পরিবার আর ছোটবেলার অনেক স্মৃতি নিয়ে বেড়ে ওঠা অভিনেতা অম্বরীশ ভট্টাচার্যর। পাড়ার পুজোয় এমনই মশগুল থাকতেন তাঁরা, যে পুজোয় অন্য কোথাও গিয়ে মন টিকত না! এমনকি, ঠাকুর দেখাতেও অনেক সময়েই পড়ত ছেদ।
ছোটবেলার পুজোর আমেজের কথা উঠলে যে স্মৃতি বারবার ভেসে আসে অভিনেতার মনে, তা হল সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমীতে পাড়ায় সবাই মিলে থিয়েটার করা। সেই মঞ্চে পাড়ার কাকা-জ্যাঠাদের পরিচালনায় তাঁর অভিনয়ে হাতেখড়ি। পুজোর আগে থেকে নাটকের মহড়া দেওয়াই হোক কিংবা পাড়ার পুজোয় চার দিন সবাই মিলে জমিয়ে খাওয়াদাওয়া, সময়ের সঙ্গে হারিয়ে যাওয়া সেই সব মুহূর্ত এখনও অমূল্য অম্বরীশের কাছে।
পর্দার ‘পটকা’ জানালেন, বন্ধুরা মিলে পুজোয় এক দিন সিনেমা দেখতে যাওয়া হত। তবে পাড়ার পুজো ছেড়ে যেতে ইচ্ছেই করত না! এক আধ বার রাত জেগে ঠাকুর দেখা হলেও, তাতে মন ভরেনি অভিনেতার।
এ বছর পুজোয় উৎসবের শহরে থাকা হচ্ছে না। দ্বিতীয়াতেই অম্বরীশ পাড়ি দিচ্ছেন নিউ জার্সি। শহরে ফিরবেন একেবারে লক্ষ্মীপুজোর পরে। এখানে থাকলে পুজো কী ভাবে কাটাতেন তিনি? সদাহাস্যময় অভিনেতার গলায় যেন চোরা দুঃখের টান, “পাড়ার পুজোটা এখন আর আগের মতো নেই। তাই আর তেমন যাওয়া হয় না।” উদ্যোগী মানুষের অভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ছোটবেলার সেই সাধের নাটকের অনুষ্ঠানও। বাড়িতে নিজের পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোই এখন অম্বরীশের পুজোর রোজনামচা। পুজো পরিক্রমা হয়ে ওঠে না সে ভাবে। বরং অভিনেতা এখনও সুযোগ পেলেই ডুব দেন ছোটবেলার পুজোর স্মৃতিতে।
অতীতের পুজো কি শুধুই হুল্লোড়ে ঠাসা? বিশেষ কারও প্রতি ভালোলাগা তৈরি হয়নি কখনও? কৌতুকের সুরে অম্বরীশ বললেন, “পুজোর আগে বা পরে প্রেম হয়ে থাকলেও, একেবারে পুজোর সময়টায় কখনও প্রেম করার সময়ই পাইনি! তখন বরং আমার মনোযোগ থাকতো থিয়েটার করার দিকেই!” আর ভাললাগা? “সে তো লাগতই, পুজোর সময়ে সব ছেলেরই সব মেয়েকে খুব সুন্দরী মনে হয়!”
এ বার পুজোয় যদি তিনটি বর চেয়ে নিতে পারেন, কী চাইবেন তা হলে? অকপটে অম্বরীশের উত্তর, “চাইব আমার ছেলেবেলাটা ফিরে আসুক, চাইব পাড়ার পুরনো মানুষগুলো আবার ফিরে আসুন। পাড়াটা আগের মতো জমজমাট হয়ে উঠুক- যাঁরা দেশ ছেড়ে চলে গেছেন কিংবা বেঁচে নেই, তাঁরাও আগের মতো ফিরে আসুন, আর যোগদান করুন ঠিক ছোটবেলার মতো। আমার বাবা ফিরে আসুন, আর আগের মতো সবাই মেতে উঠি গান ও থিয়েটারের রিহার্সালে। একটু অসম্ভব, অবাস্তব মনে হলেও আমি এটাই চাইব।”
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy