এই বার আর বড় পর্দা নয়। চমক দিয়ে প্রথম সিরিজ নিয়ে আসছেন অভিনেত্রী সৃজা দত্ত। কালীপুজোর ঠিক মুখেই হইচই প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাচ্ছে ‘নিশির ডাক’। এই সিরিজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যাবে সৃজা দত্তকে। কিন্তু অভিনেত্রী কি নিজে কখনও তেনাদের দেখেছেন? ভৌতিক কোনও ঘটনার সাক্ষী থেকেছেন?
আনন্দবাজার ডট কমকে সৃজা ‘নিশির ডাক’ সিরিজে তাঁর চরিত্রের বিষয়ে ব্যাখ্যা করে বলেন, “আমার চরিত্রের নাম তিথি, সঙ্গীত নিয়ে পিএইচডি করছে এমন একজন ছাত্রী। ও ওর পাঁচজন বন্ধুর সঙ্গে রিসার্চের কাজের জন্য একটা গ্রামে যায়, সেই গ্রামের নাম সোনামুখী। সেই গ্রামে যেতে যেতে রাস্তায় ওদের অনেকে সাবধান করে যে ‘ওই গ্রামে যেও না, নিশি ডাকে’, ‘ওই গ্রামে কোনও গান গাওয়া যায় না, বাদ্যযন্ত্র বাজানো যায় না। করলে মানুষ মারা যায়’। ওরা সেসব শুনলেও পাত্তা দেয় না, এই প্রজন্মের ছেলেমেয়ে সবাই। এগিয়ে যায় নিজেদের রিসার্চের কাজে। তারপর যে বাড়িতে ওরা রিসার্চ করতে যায় সেখানে কী হয় সেটাই দেখবার।”
ব্যক্তি জীবনে কখনও ভূতের দেখা পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলেই তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমার অভিজ্ঞতা হয়েছে তাই বিশ্বাস করি। বাস্তব জীবনে তো হয়েছেই, শ্যুটিংয়ের সময়ও এই ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছে। ‘নিশির ডাক’ সিরিজের শ্যুটিংয়ের পর তো আমাকে মা বাধ্য হয়ে ঝাড়াতে নিয়ে গেছে, এত বাড়াবাড়ি হয়েছিল।” কিন্তু ঠিক কী ঘটেছিল? তিনি জানান, “নিশির ডাকের সেটে ভৌতিক এনার্জি জানি না কতটা, কিন্তু অদ্ভুত ভাবে গোটা শ্যুটিংয়ে আমি খুব অসুস্থ ছিলাম। আমাদের তো অনেক দিন ধরে শ্যুট চলেছে, বোলপুরে, কলকাতায় শ্যুটিং হয়েছে। কখনও জ্বর হচ্ছে তো, কখনও চোখে ইনফেকশন হয়ে যাচ্ছে। চোখে জিনিস ঢুকে যাচ্ছে। আমার তো মনে হয়েছিল বাঁ চোখে আমি আর দেখতেই পাব না। এত খারাপ অবস্থা হয়েছিল। সেই নিয়েই শ্যুটিং করেছি। সারা পুজোয় ১০৪ জ্বর। লিভারের সমস্যা। গত ২ মাস, যত দিন এই প্রজেক্টের শ্যুটিং করেছি সাংঘাতিক ভুগেছি। আমি জানি না সেটা কী। এত কিছু হওয়ার পর মায়েরও স্বাভাবিক ভাবে ভয় লেগেছিল যে একের পর এক হয়েই যাচ্ছিল।” স্বচক্ষে কি ‘তেনাদের’ দেখেছেন? “জঙ্গল, পোড়ো বাড়িতে শ্যুট করেছি। রাত ২-২.৩০ অবধি শ্যুটিং হতো। সেখানে আমার শেষ শট চলছিল। ওই দিন গ্রহণ ছিল। তখন হঠাৎ একটা বড় আলো উপর থেকে ভেঙে পড়ে। যেখানে পরিচালক বসে মনিটর দেখছিলেন সেখানেই ভেঙে পড়ে। ওঁরা কোনও মতে দৌড়ে সরে প্রাণে বাঁচেন। তার পর কোনও মতে ওখানে শ্যুট শেষ করে বেরিয়ে যাওয়া হয়। একটা জঙ্গলে আমরা শ্যুট করেছিলাম, শুনেছিলাম রেইকি করার সময় নাকি সেখানে জলপ্রপাতের শব্দ শোনা যাচ্ছিল। সেই শব্দ লক্ষ্য করে এগোলে, সেই শব্দ আরও পিছিয়ে যাচ্ছিল। এই গল্পটা জয়দীপ দার (জয়দীপ মুখোপাধ্যায়, পরিচালক) মেয়ের মুখে শুনেছি, কিন্তু আলো পড়ে যাওয়াটা আমার সামনে ঘটেছে”, জানালেন সৃজা।
আরও পড়ুন:
কেবল শ্যুটিংয়ে নয়, তার বাইরেও অতিপ্রাকৃত ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন তিনি। সৃজার কথায়, “আমি যে খুব ভয় পাই সেটা নয়, কিন্তু এনার্জিতে বিশ্বাস করি। আগেও ফিল করেছি, আমার দাদু যখন মারা যান তখন কিছু কিছু ঘটনা ঘটেছিল। হয়তো স্বচক্ষে দেখিনি, কিন্তু ফিল করেছি। আমার দাদু মারা যাওয়ার পর এক দিন বাড়িতে কেউ ছিল না, আমি তালা খুলে ঢুকতে যাচ্ছিলাম, তখন আমাদের বাড়িতে একটা পুরনো দিনের চেয়ার রয়েছে যেটা খুব চাপ দিলে তবেই সরানো যায়। সরালে একটা আওয়াজ হয়। আমি দরজা খুলতেই আওয়াজটা শুনি চেয়ার সরানোর, এ দিকে ভিতরে কেউ নেই। ঢুকে দেখি চেয়ারটা সামনে রাখা। এ রকম ঘটনা ঘটেছে একাধিক বার।”
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।