Advertisement
Durga Puja 2022

নিষিদ্ধপল্লীর মাটি দিয়ে তৈরি হয় দুর্গা প্রতিমা! নেপথ্যে লুকিয়ে রয়েছে গুঢ় রহস্য

কুমোরটুলি জুড়ে সোঁদামাটির গন্ধ। শুরু হয়ে গিয়েছে প্রতিমা তৈরির কাজ। কাঠামোয় পড়েছে মাটির প্রলেপ, রঙের পরত। মৃৎশিল্পীদের হাতে ধীরে ধীরে প্রাণ পাচ্ছে মাতৃপ্রতিমা।

আনন্দ উৎসব ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৬:০৯
Share: Save:
০১ ১২
মাতৃবন্দনার প্রস্তুতি চার দিকে। প্রতিমা গড়ার কাজে শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা। প্রথমে কাঠামো, তার পরে একমেটে, দোমেটে, ক্রমে ধাপে ধাপে প্রাণবন্ত ওঠে মায়ের মৃন্ময়ী রূপ।

মাতৃবন্দনার প্রস্তুতি চার দিকে। প্রতিমা গড়ার কাজে শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা। প্রথমে কাঠামো, তার পরে একমেটে, দোমেটে, ক্রমে ধাপে ধাপে প্রাণবন্ত ওঠে মায়ের মৃন্ময়ী রূপ।

০২ ১২
 প্রতিমা তৈরিতে গঙ্গা জল, ধানের শীষ, গোবর, গাভীর মূত্র ছাড়া আরও একটি উপকরণ হল যৌনপল্লির মাটি। হ্যাঁ, দুর্গাপ্রতিমা তৈরিতে সমাজের তথাকথিত অপবিত্র পাড়ার মাটিই অপরিহার্য।

প্রতিমা তৈরিতে গঙ্গা জল, ধানের শীষ, গোবর, গাভীর মূত্র ছাড়া আরও একটি উপকরণ হল যৌনপল্লির মাটি। হ্যাঁ, দুর্গাপ্রতিমা তৈরিতে সমাজের তথাকথিত অপবিত্র পাড়ার মাটিই অপরিহার্য।

০৩ ১২
এ পাড়ার বাসিন্দাদের প্রতি সমাজের অবজ্ঞা, বঞ্চনা প্রতিনিয়ত। যে যৌনপল্লিকে সমাজ ব্রাত্য করে রাখে, সেখানকারই মাটি কেন ব্যবহার হয় উমাকে গড়ে তুলতে?

এ পাড়ার বাসিন্দাদের প্রতি সমাজের অবজ্ঞা, বঞ্চনা প্রতিনিয়ত। যে যৌনপল্লিকে সমাজ ব্রাত্য করে রাখে, সেখানকারই মাটি কেন ব্যবহার হয় উমাকে গড়ে তুলতে?

০৪ ১২
শাস্ত্র মেনেই এই প্রথা চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। বলা হয়, যৌনকর্মীর বাড়ির দরজায় পুরুষরা নিজেদের সঞ্চিত সমস্ত পুণ্য বিসর্জন দিয়ে আসে। সে কারণেই ওই মাটি পবিত্র হয়ে ওঠে। আর তা দিয়ে গড়া হয় মাতৃমূর্তি।

শাস্ত্র মেনেই এই প্রথা চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। বলা হয়, যৌনকর্মীর বাড়ির দরজায় পুরুষরা নিজেদের সঞ্চিত সমস্ত পুণ্য বিসর্জন দিয়ে আসে। সে কারণেই ওই মাটি পবিত্র হয়ে ওঠে। আর তা দিয়ে গড়া হয় মাতৃমূর্তি।

০৫ ১২
এই সময়ে মহামায়া নয় রূপে পূজিত হন। নর্তকী বা অভিনেত্রী, কাপালিক, ধোপানী, নাপিতানী, ব্রাহ্মণী, শূদ্রাণী, গোয়ালিনী, মালিনী ও পতিতা।  নবম কন্যা যৌনপল্লিরই প্রতিনিধি। মনে করা হয়, এই কারণেও এই প্রথার জন্ম হয়ে থাকতে পারে।

এই সময়ে মহামায়া নয় রূপে পূজিত হন। নর্তকী বা অভিনেত্রী, কাপালিক, ধোপানী, নাপিতানী, ব্রাহ্মণী, শূদ্রাণী, গোয়ালিনী, মালিনী ও পতিতা। নবম কন্যা যৌনপল্লিরই প্রতিনিধি। মনে করা হয়, এই কারণেও এই প্রথার জন্ম হয়ে থাকতে পারে।

০৬ ১২
প্রাচীনকালে ব্রাহ্মণেরা যৌনপল্লীর দ্বারে গিয়ে বিশেষ শ্লোক উচ্চারণ করে মাটি সংগ্রহ করতেন। ক্রমে সে রীতির বদল ঘটে বর্তমানে কারিগর বা মৃৎশিল্পীরা নিজেরাই এই মাটি সংগ্রহ করে আনেন।

প্রাচীনকালে ব্রাহ্মণেরা যৌনপল্লীর দ্বারে গিয়ে বিশেষ শ্লোক উচ্চারণ করে মাটি সংগ্রহ করতেন। ক্রমে সে রীতির বদল ঘটে বর্তমানে কারিগর বা মৃৎশিল্পীরা নিজেরাই এই মাটি সংগ্রহ করে আনেন।

০৭ ১২
অন্ধকারাচ্ছন্ন যৌনপল্লির মাটি ছাড়া আলোয় মুখরিত দুর্গাপুজো অসম্পূর্ণ। যে উৎসবে সমগ্র নারীজাতির আরাধনায় মেতে ওঠে আপামর বাংলা।

অন্ধকারাচ্ছন্ন যৌনপল্লির মাটি ছাড়া আলোয় মুখরিত দুর্গাপুজো অসম্পূর্ণ। যে উৎসবে সমগ্র নারীজাতির আরাধনায় মেতে ওঠে আপামর বাংলা।

০৮ ১২
সমাজে যৌনকর্মীরা ব্রাত্য হলেও তাঁরাও এই সমাজেরই অংশ, একই নারীশক্তির আধার। সমাজতাত্ত্বিকদের মতে, সকল স্তরের নারীর শক্তিকে এক করার তোলার উদ্দেশেই এই প্রথার শুরু।

সমাজে যৌনকর্মীরা ব্রাত্য হলেও তাঁরাও এই সমাজেরই অংশ, একই নারীশক্তির আধার। সমাজতাত্ত্বিকদের মতে, সকল স্তরের নারীর শক্তিকে এক করার তোলার উদ্দেশেই এই প্রথার শুরু।

০৯ ১২
পুরাণে কথিত, ঋষি বিশ্বামিত্র কঠোর তপস্যা করছিলেন ইন্দ্রত্ব লাভের জন্য। দেবরাজ ইন্দ্র সেই তপস্যা ভঙ্গ করার বহু চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন।

পুরাণে কথিত, ঋষি বিশ্বামিত্র কঠোর তপস্যা করছিলেন ইন্দ্রত্ব লাভের জন্য। দেবরাজ ইন্দ্র সেই তপস্যা ভঙ্গ করার বহু চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন।

১০ ১২
স্বর্গের অপ্সরা মেনকাকে ইন্দ্র পাঠিয়েছিলেন ঋষির ধ্যানভঙ্গের উদ্দ্যেশে। মেনকা এই কঠিন কাজটি সম্পন্ন করেন। যৌনপল্লির মাটি দিয়ে দুর্গা প্রতিমা তৈরির নেপথ্যে এই পৌরাণিক কাহিনির প্রভাবও  রয়েছে বলে মনে করা হয়।

স্বর্গের অপ্সরা মেনকাকে ইন্দ্র পাঠিয়েছিলেন ঋষির ধ্যানভঙ্গের উদ্দ্যেশে। মেনকা এই কঠিন কাজটি সম্পন্ন করেন। যৌনপল্লির মাটি দিয়ে দুর্গা প্রতিমা তৈরির নেপথ্যে এই পৌরাণিক কাহিনির প্রভাবও রয়েছে বলে মনে করা হয়।

১১ ১২
সমগ্র নারীজাতির এক অখণ্ড রূপ হল দেবী দুর্গা। জাতি, শ্রেণি নির্বিশেষে নারী যে শক্তিময়ী সনাতনী- এই দর্শনই রূপায়িত হয়েছে এই প্রথার মাধ্যমে।

সমগ্র নারীজাতির এক অখণ্ড রূপ হল দেবী দুর্গা। জাতি, শ্রেণি নির্বিশেষে নারী যে শক্তিময়ী সনাতনী- এই দর্শনই রূপায়িত হয়েছে এই প্রথার মাধ্যমে।

১২ ১২
ভিন্ন মত,ভিন্ন ব্যাখ্যা। তবে দুর্গাপুজোর আবেগ সর্বজনীন। সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে মানুষ মেতে ওঠে উৎসবের আনন্দে।

ভিন্ন মত,ভিন্ন ব্যাখ্যা। তবে দুর্গাপুজোর আবেগ সর্বজনীন। সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে মানুষ মেতে ওঠে উৎসবের আনন্দে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE