একে বারে নির্মেদ চেহারা। ছিপছিপে গড়ন। বুকের মাপ থেকে শুরু করে কোমরের আকার, সবটাই হতে হবে নির্দিষ্ট মাপের। তবেই না প্রাণ পাবে পোশাক! ফ্যাশনের দুনিয়ায় অবশ্য এই ‘দর্শন’ অতীত! ‘জ়িরো সাইজ়’ চেহারার পাশাপাশি তুলনায় স্থূলাকার পুরুষ অথবা নারীর জন্যেও সাজ সম্ভারের দরজা খুলে গিয়েছে অনেক আগেই।
পাশাপাশি এটাও সত্যি, সমাজের বেঁধে দেওয়া সৌন্দর্য তালিকায় নিজেকে সাজানোর জন্যে পুজোর আগে ওজন কমানোর হিড়িক আজও নেহাত কম নয়। দেওয়ালে টাঙানো বিজ্ঞাপন থেকে শুরু করে গুগ্ল সার্চ হিস্ট্রি, সর্বত্রই নির্মেদ চেহারার টিপ্স! শারীরিক গঠন নিয়ে সত্যিই কি এত ‘সচেতন’ হওয়ার প্রয়োজন পড়ে? জনপ্রিয় পোশাকশিল্পী অভিষেক রায়ের মতে, ‘প্লাস সাইজ়’-এর পোশাক কিন্তু আর কোনও বাঁকা চোখে দেখার বস্তু নয়। আনন্দবাজার ডট কমকে তিনি বলেন, “এগুলিও এখন ফ্যাশনে ‘ইন’। তথাকথিত জটিলাটা অনেকটাই ভেঙে গিয়েছে। কারণ সমস্ত ব্র্যান্ড এখন স্থূল চেহারার ক্রেতাদের জন্য পোশাক তৈরি করছে। আমরাও করি।”
অনেকেই মনে করেন, চেহারায় স্থূলতার ছোঁয়া মানেই তাঁদের কেতাদুরস্ত সাজপোশাক সব কিছুই বারণ। অভিষেক রায়ের বক্তব্য কিন্তু ভিন্ন। চেহারায় মেদ থাকুক। তবে তার সঙ্গে মানানসই পোশাকেরও কিন্তু অভাব নেই। কেবল পোশাক পোশাক পরিচর্যার ক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে সামান্য কয়েকটি বিষয়। টিপ্স দিচ্ছেন খোদ পোশাকশিল্পী-ই। অভিষেক বলেন, “আমি সবসময় বলি স্থূলকায় চেহারার ক্ষেত্রে চেক জাতীয় পোশাক এড়িয়ে চলা উচিত। সলিড রঙের কোনও পোশাক পরুন। তা হলে অনেক বেশি টোনড্ লাগে দেখতে।”
মহিলাদের শাড়ির ক্ষেত্রেও তিনি বলেন, “খুব বেশি চওড়া পাড় বাদ দেওয়া উচিত। যতটা সম্ভব সরু হলে মন্দ লাগে না। এক রঙের উপর শাড়ি দেখতেও খুব ভাল লাগে। আনুভূমিক রেখার পরিবর্তে লম্বালম্বি রেখাযুক্ত শাড়িও স্থূল চেহারায় শোভা পায়। আবার খুব বেশি প্রিন্ট থাকলেও চোখে লাগে।”
যদিও তাঁর কথায় এর চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল ‘আত্মবিশ্বাস’। অভিষেক বলেন, “সাজসজ্জার টিপ্স তো আছেই। তবে আমি নিজেকে কতটা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সামলাতে পারছি। সেটাই জরুরি।”
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।