Advertisement
Dr Sanjay Basu

পুজোয় প্রাণ ভরে পেট পুজোর দৌলতে মন খারাপ লিভারের!

পেট পুজো ছাড়া কি আর পুজো জমে! কিন্তু হৃদয়ের এই খামখেয়ালিপনা লিভার সইবে কেন? তার যে পরিশ্রম বাড়ল? পুজোতে একটুও ছুটি পেল না সে! তার বেলা?

অনিয়মিত খাদ্যাভাস, মদ্যপান, রাত জাগা – এই সমস্ত অভ্যেসের ফলেই লিভারের কার্যকারিতা প্রভাবিত হয়।

অনিয়মিত খাদ্যাভাস, মদ্যপান, রাত জাগা – এই সমস্ত অভ্যেসের ফলেই লিভারের কার্যকারিতা প্রভাবিত হয়।

আনন্দ উৎসব ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২২ ১৭:৫৪
Share: Save:

ব্রেকফাস্টে লুচি আলুর দমে শুরু। দুপুরে ভোগ আর রাত্রে বিরিয়ানি। এ ছাড়া রাত জেগে ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে চপ-কাটলেট, রোল, চাউমিন তো আছেই। এর উপরে যদি আবার যোগ হয় সুরা, তা হলে তো সোনায় সোহাগা! পুজোর সময়ে অনিয়মিত খাদ্যাভাসে ক্ষতি হয়েছে শরীরের। প্রভাবিত হয়েছে হজম প্রক্রিয়া।

চিকিৎসাশাস্ত্র বলছে, ঘুম ঠিক না হলে সমস্যা দেখা দেয় পাচন ক্রিয়ায়। শরীরের খুব জরুরি অংশ লিভারের কার্যকারিতা বিবিধ। হজমে দরকারি এনজাইম উৎপন্ন করা, টক্সিন অপসারণ, প্রয়োজনীয় প্রোটিন তৈরি, খনিজ গুণের সংরক্ষণ, পুরনো লোহিতকণিকার অপসারণ ইত্যাদি অনেক দায়িত্ব থাকে লিভারের। পুজোর সময়ে এই অনিয়মিত যাপনে শরীরের উপরে যে ধকল হয়েছে তা থেকে মুক্তির উপায় কি?

সিনিয়র গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজিস্ট চিকিৎসক সঞ্জয় বসু এ বিষয়ে তাঁর মতামত জানিয়ে বলেছেন, ''রাত জেগে ঠাকুর দেখা, ঘন ঘন স্ট্রিট ফুড, কোল্ড ড্রিঙ্কস এ সব অনিয়মের ফলে শরীর ডিহাইড্রেটেড হয় ভীষণ রকম। স্ট্রিট ফুডে ব্যবহত তেল লিভারের জন্য কতটা ভাল, তা নিয়ে একটা সন্দেহের অবকাশ তো থেকেই যায়। তা ছাড়া বড় রেস্তরাঁর খাবারও পর পর পাঁচ দিন খেলে মুখের রুচি নষ্ট হবে, শরীরও খারাপ হবে। এই অবস্থায় পর্যাপ্ত জল ও প্রচুর পরিমাণে ফল সহায়ক হতে পারে লিভারের জন্য। খুব ভাল হয় যদি উপোস করতে পারেন। পুজোর মত নির্জলা নয়। জল ও ফলের রস খেয়ে উপোস করতেই পারেন। বৈজ্ঞানিক ভাবে এটি কার্যকরী।

অনিয়মিত খাদ্যাভাস, মদ্যপান, রাত জাগা – এই সমস্ত অভ্যেসের ফলেই লিভারের কার্যকারিতা প্রভাবিত হয়। আপাতত লক্ষ্মী পুজোর পরে দীপাবলি আসতে কয়েক দিন বাকি। এর মধ্যে একটু লিভারের যত্ন নিন বরং। কী ভাবে? রইল টিপস।

লিভার ডিটক্স করতে কার্যকরী হতে পারে হাল্কা গরম জলে অর্ধেক পাতি লেবুর রস

লিভার ডিটক্স করতে কার্যকরী হতে পারে হাল্কা গরম জলে অর্ধেক পাতি লেবুর রস

সব গৃহস্থ বাড়িতেই মজুত থাাকে হলুদ। এই মশলার গুণ অনেক। এনজাইম উৎপাদনে লিভারকে সাহায্য করতে পারে হলুদ। হাল্কা গরম জলে হলুদ ও গোলমরিচ মিশিয়ে খান, সুফল পাবেন।

শরীরের ইনসুলিন মাত্রা যথাযথ রাখতে কমাতে হবে রোজকার খাদ্যাভাসে চিনির পরিমাণ।

প্রসেসড ফুড খাওয়া যাবে না। লিভার ডিটক্স করতে হলে বাদ দিতে হবে ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল, ফ্রোজেন ফুড, বেকন।

তবে মদ্যপানের অভ্যেস ছাড়তে হবে। কারণ মদের নানা উপাদান লিভারের উপর অস্বাভাবিক চাপ সৃষ্টি করে।

লিভার ডিটক্স করতে কার্যকরী হতে পারে হাল্কা গরম জলে অর্ধেক পাতি লেবুর রস।

পালং, লেটুস, ব্রকোলি ইত্যাদির মতো সবুজ শাকসব্জি লিভারের কার্যকারিতা বাড়াতে খুবই উপকারী।

প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট মজুত থাকে গ্রিন টি-তে। সারা দিনে অন্তত দু'বার খাওয়া যেতেই পারে এই চা।

রসুনে থাকে এক বিশেষ ধরনের সালফার কমপাউন্ড, যা লিভারের যে কোনও রকমের টক্সিন অপসারণ করতে খুবই কার্যকরী। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে তাই এক/দুই কোয়া কাঁচা রসুন খেতে পারেন।

বিভিন্ন সমীক্ষা অনুযায়ী জানা গিয়েছে, পরিমিত মাত্রায় কফির সেবন লিভারের রোগের ঝুঁকি কম করে। তাই চিনি ও দুধ ছাড়া দু'কাপ কফি সারা দিনে খেতেই পারেন।

আয়ুর্বেদ মতে লিভার থেকে টক্সিন দূর করতে আমলকীর চেয়ে ভাল কিছু আর হয় না। সকালে খালি পেটে আমলকি খাওয়ার অভ্যেসও হজমে কার্যকরী হবে।

এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE