প্রতীকী চিত্র
পুজোর ছুটির মতো লম্বা, নির্ঝঞ্ঝাট ছুটি কমই পাওয়া যায়। এই দিনগুলো সকলেই নিজের মতো করে কাটাতে ভালবাসেন। এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা ঘুরে ঘুরে ঠাকুর দেখা বা ভিড়ভাট্টা, কোনওটাই পছন্দ করেন না, বরং ভালবাসেন একা থাকতে।
একা মানেই যে একঘেয়ে ভাবে ছুটি কাটবে, তা মোটেই নয়। আপনার কি আগে বই পড়ার ঝোঁক ছিল, কাজের চাপ এখন ফুরসত মেলে না? তা হলে পুজোর নিভৃতযাপন কাটুক না বইয়ের সঙ্গে। বই পড়ার তেমন অভ্যাস নেই? টানা ছুটিতে গড়ে তুলে দেখুন না সেই অভ্যাস। সাহিত্যিক প্রতিভা বসু তো সেই কবে বলেইছেন, “বই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ আত্মীয়, যার সঙ্গে কোনদিন ঝগড়া হয়না, কোনদিন মনোমালিন্য হয় না।”
পুজোর ছুটিতে বই পড়ার অভ্যাস শুরু করতে চাইছেন? তবে আপনার জন্যই রইল নানা স্বাদের কিছু জনপ্রিয় বইয়ের হদিশ।
গোয়েন্দা ও রহস্যকাহিনি: বাংলা সাহিত্যে গোয়েন্দা গল্প ও চরিত্রের অভাব নেই। সত্যজিৎ রায়ের ‘ফেলুদা’ কিংবা শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ব্যোমকেশ’ বেশির ভাগেরই পড়া। এ ছাড়া, কিশোর সাহিত্য ভাল লাগলে পড়তে পারেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘কাকাবাবু’, বুদ্ধদেব গুহর ‘ঋজুদা’ বা সমরেশ বসুর ‘গোগোল’-এর কাহিনি। রহস্য কাহিনিতে মন মজলে হুমায়ুন আহমেদের ‘মিসির আলি সমগ্র’র জুড়ি মেলা ভার।
হাসির গল্প: এ ক্ষেত্রে শিবরাম চক্রবর্তীর কথা না বললেই নয়। তাঁর ‘শিব্রামের সেরা হাসির গল্প’, ‘লাভের বেলায় ঘন্টা’, ‘দেশ বিদেশের হাসির গল্প’ বাদ দিলে আপনারই লোকসান। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘টেনিদা সমগ্র’, পরশুরামের ‘সেরা হাসির গল্প’ও তালিকায় রাখতে পারেন।
রোমান্টিক বই: বাঙালি বরাবরই প্রেমের গল্পের কদর করে। ছুটির মরসুমে আয়েশ করে রোমান্টিক গল্প পড়তে কমবেশি সবাই ভালবাসে। নিমাই ভট্টাচার্যের ‘মেমসাহেব’, বুদ্ধদেব গুহর ‘বাবলি’, ‘কোয়েলের কাছে’ ভাল লাগতে পারে। পড়তে পারেন প্রেম ও বিচ্ছেদের চিরকালীন কাহিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শেষের কবিতা’। মৈত্রেয়ী দেবীর লেখা ‘ ন হন্যতে’ও অনেকেরই ভীষণ পছন্দের।
সামাজিক কাহিনি: সমাজ জীবনের নানা দিক ও তার ঘাত-প্রতিঘাত বারবারই উঠে এসেছে বাংলা সাহিত্যে। রাজনীতি, দারিদ্র, দেশভাগের যন্ত্রনা, সম্পর্কের টানাপোড়েন– এমন হাজারো বিষয় তার কেন্দ্রবিন্দু। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’, সুচিত্রা ভট্টাচার্যের ‘দহন’, কল্লোল লাহিড়ীর ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’, স্মরণজিৎ চক্রবর্তীর ‘কম্পাস’ দিয়ে পড়া শুরু করতে পারেন।
নন্ ফিকশন বই: বই বলতে শুধু তো আর গল্পের বই নয়। আরও অনেক ধরনের বই রয়েছে, যা বাস্তব তথ্য-নির্ভর। বিজ্ঞান বা প্রযুক্তি, ইতিহাস, রাজনীতি, সমাজতত্ত্ব, পরিবেশ সংক্রান্ত নানা বিষয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন ইদানীং নানা ধরনের সেল্ফ হেল্প বা মোটিভেশনাল অর্থাৎ অনুপ্রেরণামূলক বই পছন্দ করছেন নতুন প্রজন্মের বহু পাঠক। আত্ম উন্নতি, আর্থিক পরিকল্পনা, ব্যবসা, ভাল থাকা, আধ্যাত্মিকতা থাকছে তাদের পড়ার তালিকায়। শুরু করতে পারেন ‘রিচ্ ড্যাড পুওর ড্যাড’, ‘অ্যাটমিক হ্যাবিটস্’, ‘সাইকোলজি অব মানি’, ‘ইকিগাই’-এর মতো বই দিয়ে। চাইলে বাজারে এই বইগুলির বাংলা অনুবাদও পেয়ে যাবেন। তবে মূল বইগুলিও খুব সহজ ইংরেজিতে লেখা।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy