পুজোর দিনগুলিতে সাজগোজের প্রতিযোগিতা যেন আপনাআপনিই শুরু হয়ে যায়। সারা বছর ত্বক বা চুলের যত্ন নেওয়া না হলেও এই সময়ে হঠাৎ করেই বাড়তি সচেতনতা এসে পড়ে। রাতারাতি উজ্জ্বল হয়ে ওঠার এই চেষ্টা কিন্তু অনেক সময়ে বিপদ ডেকে আনে। যত্নের ক্ষেত্রে সামান্য ভুলচুক নাজেহাল করে তুলতে পারে ত্বক আর চুলকে। তাই উৎসবের দিনগুলিতে সবার নজর কাড়তে কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি।
শেষ মুহূর্তের তাড়াহুড়োয় অতিরিক্ত মেকআপ ব্যবহার বা নানা রকম নতুন ‘ট্রিটমেন্ট’ নিলে উল্টে ত্বক-চুলের ক্ষতি হতেই পারে। যেমন, মুখে ‘ওয়াক্স’ ব্যবহার করলে কোমল ত্বক সহজেই নষ্ট হতে পারে। বরং ‘থ্রেডিং’ই নিরাপদ বিকল্প। এতে ত্বক ঝুলে যাওয়ার ঝুঁকিও থাকে না।
আবার ‘এক্সফোলিয়েশন’ বারবার করলে ত্বকের প্রয়োজনীয় তেল উঠে গিয়ে দেখা দিতে পারে জ্বালা ও শুষ্কতা। ত্বকের যত্ন নিতে বেশি প্রসাধনীর প্রয়োজন হয় না, বরং নিয়মিত ক্লেনজিং, টোনিং আর ময়শ্চারাইজিং করলেই যথেষ্ট।
জেল্লাদার ত্বক চাই বলে লেবুর রস বা পিল অফ মাস্ক ব্যবহার করছেন? সাবধান! লেবুর অ্যাসিড ত্বকের ভারসাম্য নষ্ট করে আর গ্লাইকোলিক অ্যাসিডযুক্ত মাস্ক সামান্য ভুলেই মারাত্মক ক্ষতি করে। ঘরোয়া টোটকায় ভরসা করলে আগে পরীক্ষা করে নিন—নইলে র্যাশ, চুলকানি হতেই পারে।
বিজ্ঞাপনের চকচকে প্রতিশ্রুতিতেও ভেসে গেলে চলবে না। সবার আগে বুঝতে হবে ত্বকের ধরন। নিয়ম করে ক্লেনজিং, টোনিং, ময়শ্চারাইজিং-ই যথেষ্ট। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়াই ভাল।
ব্রণ কমাতে টুথপেস্ট কিংবা রাতারাতি জেল্লা আনতে লেবুর রস ব্যবহারের মতো ভুলগুলিও এড়িয়ে যাওয়া উচিত। এগুলি ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়। কোনও ঘরোয়া ফেসপ্যাক ব্যবহারের আগে অবশ্যই হাতের তালুতে পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত। জ্বালা বা লালচে ভাব দেখা দিলে সেই প্যাক মুখে ব্যবহার করা একেবারেই উচিত নয়।
দিনের বেলা ঠাকুর দেখতে বেরোলে অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার জরুরি। নইলে যতই সাজ হোক, ভিতর থেকে ত্বকের ক্ষতি হবে। রোদ হোক বা মেঘলা, এটি ছাড়া মেকআপ ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
চুলের কথা বলতে গেলে স্মুদনিং, কেরাটিন, বোটক্সের মতো ট্রিটমেন্ট বা চুলে রং করার ঝোঁক পুজোর সময় বেশ বৃদ্ধি পায়। চুলের গোড়া দুর্বল করে দিতে পারে, এমন অতিরিক্ত তাপ ব্যবহার থেকে বিরত থাকা উচিত। চুলের ধরন বুঝে ট্রিটমেন্ট করানো জরুরি, সঙ্গে ভাল মানের স্যালোঁ বেছে নেওয়াটাও জরুরি। নিয়মিত হিট স্টাইলিংয়ের সরঞ্জাম ব্যবহার করলে হিট প্রোটেকশন স্প্রে এবং হেয়ার সিরাম ব্যবহার করা উচিত। আর পুজোর সময়ে বাইরে বেশি থাকার কারণে প্রতিদিন চুল পরিষ্কার রাখাও দরকার। শ্যাম্পুর পরে অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। এতে চুলের আর্দ্রতা বজায় থাকবে এবং চুল ভেঙে যাওয়া থেকে রক্ষা পাবে।
এই কয়েকটা ছোট ছোট বিষয় খেয়াল রাখলে উৎসবের দিনগুলোয় ত্বক ও চুল দুটোই হাসিমুখে থাকবে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।