ভেঙে যাওয়া জিনিস মানেই কি তার ঠাঁই আবর্জনার স্তূপে? জাপানিদের ‘কিনসুগি’ কৌশল বলছে অন্য কথা। এ ক্ষেত্রে ভেঙে যাওয়া সেরামিক এবং চিনামাটির জিনিস ফেলে দেওয়া হয় না। বরং পরম যত্নে তা জোড়া লাগানো হয় সোনা, রুপো অথবা প্ল্যাটিনামের সঙ্গে বার্নিশের মিশেলে।
ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়ে এ ভাবে আপনিও বানিয়ে ফেলতে পারেন ঘর সাজানোর সামগ্রী। জাপানিদের মতো দামি ধাতুর দরকার নেই, সামান্য কিছু আঠা, রং এবং হাতের কারিগরিতেই বাতিল জিনিসপত্র হয়ে উঠতে পারে অন্দরসজ্জার উপকরণ।
আসাবধানতাবশত কখনও হাত থেকে কাপ পড়ে যেতেই পারে। ভেঙে গেলেও সমস্যা নেই। ভাঙা অংশটির ধার বরাবর সোনালি অ্যাক্রিলিক রঙের সঙ্গে আঠা লাগিয়ে টুকরোটি জুড়ে দিন। অথবা জোড়া লাগানোর পরেও ফাটল বরাবর রং করা যেতে পারে। এতে ভেঙে যাওয়া অংশটিও দেখতে ভাল লাগবে। এ বার এই কাপটিতে যত্ন করে কোনও তাকে বা টেবিলের উপর সাজিয়ে রাখুন।
প্লাস্টিকের বোতল, বাড়িতে বানানো এয়ার ড্রাই ক্লে, বাতিল কাগজ, ইত্যাদি দিয়ে দেওয়ালে ঝোলানোর মুখোশ বানানো যেতে পারে সহজে। ইন্টারনেট ঘাঁটলেও এর একাধিক পদ্ধতি খুঁজে পাওয়া যাবে।
কাচের বোতলের গায়ে মোটা দড়ি বা রঙিন উল জড়িয়ে নিয়ে বানানো যায় নজরকাড়া ফুলদানি। এ ক্ষেত্রে বোতলের গায়ে আঠা লাগিয়ে একদম মুখের কাছ থেকে নীচ পর্যন্ত উল দিয়ে জড়িয়ে নিতে হবে। চাইলে রং দিয়ে গায়ে কিছু কারুকার্যও করা যেতে পারে। এর পরে তাতে ছোট ইন্ডোর প্ল্যান্ট বসিয়ে নিলে মন্দ লাগবে না।
খালি টেবিল দৃষ্টিনন্দন না-ও লাগতে পারে। ফেলে দেওয়া খবরের কাগজ দিয়ে তৈরি কোস্টার টেবিলের শোভা বৃদ্ধি করবে। এটা বানানো খুবই সহজ। খবরের কাগজের প্রতিটা পাতাকে মাঝবরাবর কেটে নিতে হবে সমান দু’টুকরোতে। তার পরে প্রতিটা টুকরোয় লম্বা কাঠি ঢুকিয়ে সেটিকে পাকিয়ে নিতে হবে। হয়ে গেলে ভিতর থেকে কাঠিটি বার করে নিলেই কাগজের লম্বা একটি রড তৈরি।
এমন বেশ কয়েকটি করার পরে সেগুলিতে হাত বা কোনও ভারী বস্তু দিয়ে চেপে সমতল করে নিতে হবে। এ বার কাজ আরও সোজা। প্রতিটা রডের একদম নীচের দিকে সামান্য আঠা লাগিয়ে সেটিয়ে পাকানো শুরু। বিপরীত প্রান্তের একদম কাছাকাছি চলে আসতেই আবার সেখানে আঠা লাগিয়ে জুড়ে নিতে হবে দ্বিতীয় কাগজের রডটি। এই ভাবে পাকাতে পাকাতে গেলেই দেখা যাবে কাগজের বৃত্তটি ক্রমশ বড় হচ্ছে। মনের মতো মাপের হয়ে গেলে সেটিকে শুকিয়ে নিয়ে রং করে নিন। পারলে কোনও নেল পলিশের প্রলেপও দিতে পারেন বিষয়টিকে জলরোধক করার জন্য। তৈরি হয়ে গেলে এটিকে টেবিলে রেখে তাতে চায়ের কাপও রাখতে পারেন।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।