প্রেজেন্টস্
Knowledge Partner
Fashion Partner
Wedding Partner
Banking Partner
Comfort Partner
Kali puja special

হেমন্তের আঁধারে বাতিঘর আকাশপ্রদীপ

বেলা ছোট হয়ে আসে হেমন্তে। রোদ পড়ে আসা আলোয় আসন্ন শীতের গন্ধ। গাঢ় হয় ছাতিম। একা ছাদে জেগে ওঠে একাকী আলো। কেউ লাল, কেউ হলুদ, কেউ বা সবুজ।

আনন্দ উৎসব ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:৪১
Share: Save:
০১ ১২
বেলা ছোট হয়ে আসে হেমন্তে। রোদ পড়ে আসা আলোয় আসন্ন শীতের গন্ধ। গাঢ় হয় ছাতিম। একা ছাদে জেগে ওঠে একাকী আলো। কেউ লাল, কেউ হলুদ, কেউ বা সবুজ।

বেলা ছোট হয়ে আসে হেমন্তে। রোদ পড়ে আসা আলোয় আসন্ন শীতের গন্ধ। গাঢ় হয় ছাতিম। একা ছাদে জেগে ওঠে একাকী আলো। কেউ লাল, কেউ হলুদ, কেউ বা সবুজ।

০২ ১২
দূর থেকে দেখা যায়। উৎসবের আলোর জৌলুস তার নেই। রাত বাড়লে সব আলো নিভে গেলেও কখনও নেভে না এই আলো। মহাশূন্যে হারিয়ে গিয়েছে যে প্রিয়জন, তার ফেরার পথ আলোকিত করে। তাই নিভতে নেই আকাশ প্রদীপকে।

দূর থেকে দেখা যায়। উৎসবের আলোর জৌলুস তার নেই। রাত বাড়লে সব আলো নিভে গেলেও কখনও নেভে না এই আলো। মহাশূন্যে হারিয়ে গিয়েছে যে প্রিয়জন, তার ফেরার পথ আলোকিত করে। তাই নিভতে নেই আকাশ প্রদীপকে।

০৩ ১২
হেমন্তের আঁধারে বাতিঘর হয়ে অপেক্ষা করে আকাশপ্রদীপ। তার আলোয় জেগে থাকে স্মৃতি, অতীতের সত্ত্বা।  শেষ আশ্বিনে ছাদের উপরে বাঁশের খুঁটিতে বেঁধে দেওয়া হয় টিমটিমে বাল্ব। জ্বেলে দেওয়া হয় সাঁঝবেলায়। চলতি কথায় তারই নাম আকাশ প্রদীপ।

হেমন্তের আঁধারে বাতিঘর হয়ে অপেক্ষা করে আকাশপ্রদীপ। তার আলোয় জেগে থাকে স্মৃতি, অতীতের সত্ত্বা। শেষ আশ্বিনে ছাদের উপরে বাঁশের খুঁটিতে বেঁধে দেওয়া হয় টিমটিমে বাল্ব। জ্বেলে দেওয়া হয় সাঁঝবেলায়। চলতি কথায় তারই নাম আকাশ প্রদীপ।

০৪ ১২
 পূর্বপুরুষদের স্মৃতির উদ্দ্যেশ্যে শেষ কার্তিক পর্যন্ত গোটা এক মাস ধরে এ ভাবে দেওয়া হয় আলো। আশ্বিন মাসের সংক্রান্তি থেকে কার্তিক মাসের সংক্রান্তি পর্যন্ত।

পূর্বপুরুষদের স্মৃতির উদ্দ্যেশ্যে শেষ কার্তিক পর্যন্ত গোটা এক মাস ধরে এ ভাবে দেওয়া হয় আলো। আশ্বিন মাসের সংক্রান্তি থেকে কার্তিক মাসের সংক্রান্তি পর্যন্ত।

০৫ ১২
হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, আশ্বিন মাসের অমাবস্যায় মহালয়ার দিন পূর্ব পুরুষকে উদ্দেশ্য করে তর্পণ করা হয়। তার পরের একটা মাস তাঁরা ফিরে আসেন পৃথিবীর বুকে। উৎসবে সঙ্গী হন। উৎসব শেষ হলে দীপান্বিতা অমাবস্যায় আসে তাঁদের ফেরার ডাক। অনন্তের একলা পথে কে তাঁদের সঙ্গী হবে। তাই মর্ত্যের মাটিতে থাকা প্রিয়জনেরা তাঁদের পথে ভালবেসে জ্বেলে দেয় সাঁঝবাতি। সেই আলোকে সঙ্গী করে আকাশ গঙ্গায় মেশে হারানো স্বজন।

হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, আশ্বিন মাসের অমাবস্যায় মহালয়ার দিন পূর্ব পুরুষকে উদ্দেশ্য করে তর্পণ করা হয়। তার পরের একটা মাস তাঁরা ফিরে আসেন পৃথিবীর বুকে। উৎসবে সঙ্গী হন। উৎসব শেষ হলে দীপান্বিতা অমাবস্যায় আসে তাঁদের ফেরার ডাক। অনন্তের একলা পথে কে তাঁদের সঙ্গী হবে। তাই মর্ত্যের মাটিতে থাকা প্রিয়জনেরা তাঁদের পথে ভালবেসে জ্বেলে দেয় সাঁঝবাতি। সেই আলোকে সঙ্গী করে আকাশ গঙ্গায় মেশে হারানো স্বজন।

০৬ ১২
আকাশপ্রদীপ দেওয়ার সময় উচ্চারণ করা হয় মন্ত্র- ''আকাশে সলক্ষ্মীক বিষ্ণোস্তোষার্থং দীয়মানে প্রদীপঃ শাকব তৎ।''

আকাশপ্রদীপ দেওয়ার সময় উচ্চারণ করা হয় মন্ত্র- ''আকাশে সলক্ষ্মীক বিষ্ণোস্তোষার্থং দীয়মানে প্রদীপঃ শাকব তৎ।''

০৭ ১২
এই আলোর অর্ঘ্যে আবাহন করা হয় বিষ্ণুকেও। আকাশলোকে লক্ষ্মীর সঙ্গে অবস্থান করেন তিনি। বিষ্ণু পৃথিবীর পালক। জীবের জীবনে তাঁর অধিকার। মৃত্যুর পরে অবিনশ্বর জীবনেও অধিশ্বর তিনিই।

এই আলোর অর্ঘ্যে আবাহন করা হয় বিষ্ণুকেও। আকাশলোকে লক্ষ্মীর সঙ্গে অবস্থান করেন তিনি। বিষ্ণু পৃথিবীর পালক। জীবের জীবনে তাঁর অধিকার। মৃত্যুর পরে অবিনশ্বর জীবনেও অধিশ্বর তিনিই।

০৮ ১২
পুরাণ মতে, দীর্ঘ চার মাসের যোগনিদ্রা শেষে কার্তিক মাসে জাগ্রত হন বিষ্ণু। তাঁকে প্রসন্ন রাখতে ভক্তরা কার্তিক মাসের প্রথম দিন থেকে সংক্রান্তির দিন পর্যন্ত রোজ সন্ধ্যায় মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখেন।

পুরাণ মতে, দীর্ঘ চার মাসের যোগনিদ্রা শেষে কার্তিক মাসে জাগ্রত হন বিষ্ণু। তাঁকে প্রসন্ন রাখতে ভক্তরা কার্তিক মাসের প্রথম দিন থেকে সংক্রান্তির দিন পর্যন্ত রোজ সন্ধ্যায় মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখেন।

০৯ ১২
আগেকার দিনে ঘি, কর্পুর বা তিল তেল দিয়ে মাটির প্রদীপ জ্বালাই নিয়ম ছিল। মাটির প্রদীপ মানব দেহের প্রতীক। মানব শরীর পঞ্চভূত দ্বারা নির্মিত হয়। তেমনই এই প্রদীপ ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ ও ব্যোম অর্থাৎ মাটি ও জল দ্বারা সৃষ্ট। খোলা ছাদে, খোলা আকাশে আকাশ প্রদীপের অবস্থান। আগুন আর বায়ু স্পর্শে জ্বলে ওঠে নশ্বর জীবনের মতোই। নশ্বর দেহের প্রতীক প্রদীপ নিবেদন করা হয় জীবন দেবতাকে।

আগেকার দিনে ঘি, কর্পুর বা তিল তেল দিয়ে মাটির প্রদীপ জ্বালাই নিয়ম ছিল। মাটির প্রদীপ মানব দেহের প্রতীক। মানব শরীর পঞ্চভূত দ্বারা নির্মিত হয়। তেমনই এই প্রদীপ ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ ও ব্যোম অর্থাৎ মাটি ও জল দ্বারা সৃষ্ট। খোলা ছাদে, খোলা আকাশে আকাশ প্রদীপের অবস্থান। আগুন আর বায়ু স্পর্শে জ্বলে ওঠে নশ্বর জীবনের মতোই। নশ্বর দেহের প্রতীক প্রদীপ নিবেদন করা হয় জীবন দেবতাকে।

১০ ১২
আকাশপ্রদীপ স্থাপনের সময়ে উচ্চারণ করা হয় -  ‘’নিবেদ্য ধৰ্ম্মার হরায় ভূম্যৈ দামোদরায়াপ্যথ ধৰ্ম্মরাজ, প্রজাপতিভ্যত্বথ সৎপিতৃভ্যঃ প্রেতেভ্য এবাথ তমঃ স্থিতেভ্যঃ।‘’

আকাশপ্রদীপ স্থাপনের সময়ে উচ্চারণ করা হয় - ‘’নিবেদ্য ধৰ্ম্মার হরায় ভূম্যৈ দামোদরায়াপ্যথ ধৰ্ম্মরাজ, প্রজাপতিভ্যত্বথ সৎপিতৃভ্যঃ প্রেতেভ্য এবাথ তমঃ স্থিতেভ্যঃ।‘’

১১ ১২
আকাশপ্রদীপ প্রজ্জলনের মাধ্যমে শুধুমাত্র লক্ষ্মী-নারায়ণকে তা নিবেদন করা হয় না। তার সঙ্গে আবাহন করা হয় পিতৃলোক, প্রেতলোকে থিতু হওয়া পূর্বপুরুষদেরও। যাতে তাঁরা সেই আলোর চিহ্ন দেখে আশীর্বাদ দিতে আসতে পারেন উত্তরসূরিদের।

আকাশপ্রদীপ প্রজ্জলনের মাধ্যমে শুধুমাত্র লক্ষ্মী-নারায়ণকে তা নিবেদন করা হয় না। তার সঙ্গে আবাহন করা হয় পিতৃলোক, প্রেতলোকে থিতু হওয়া পূর্বপুরুষদেরও। যাতে তাঁরা সেই আলোর চিহ্ন দেখে আশীর্বাদ দিতে আসতে পারেন উত্তরসূরিদের।

১২ ১২
সময়ের বদলের সঙ্গে সঙ্গে এখন বাল্ব আর টুনি লাইট হয়ে উঠেছে আকাশপ্রদীপ। চিরাচরিত আকাশপ্রদীপের চল নেই বললেই চলে। গ্রামের ছাদেও জ্বলে টুনি বাল্ব। কিন্তু যাদের ছাদ নেই, মেটেঘর সম্বল, তাদের উঠোনে তুলসী মঞ্চে আজও উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে সাবেক আকাশ দীপের আলোয়।  (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)

সময়ের বদলের সঙ্গে সঙ্গে এখন বাল্ব আর টুনি লাইট হয়ে উঠেছে আকাশপ্রদীপ। চিরাচরিত আকাশপ্রদীপের চল নেই বললেই চলে। গ্রামের ছাদেও জ্বলে টুনি বাল্ব। কিন্তু যাদের ছাদ নেই, মেটেঘর সম্বল, তাদের উঠোনে তুলসী মঞ্চে আজও উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে সাবেক আকাশ দীপের আলোয়। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy