প্রতীকী চিত্র
ফি বছর মহালয়ার দিনে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে একটাই তর্ক– মহালয়ার শুভেচ্ছা জানানো উচিত না অনুচিত। মহালয়া আদৌ শুভ না অশুভ, তা নিয়েই জোর বিতর্ক বাধে প্রতি বছর। এ যেন সাক্ষাৎ শুম্ভ-নিশুম্ভের লড়াইয়ের মতোই! বাঙালির সবচেয়ে বড় পার্বণ দুর্গাপুজোর আমেজ শুরু হয়ে যায় মহালয়া থেকেই। ভোর চারটেয় রেডিওতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের উদাত্ত কণ্ঠে ‘মহিষসুরমর্দিনী’ এবং আগমনীর গানে যার সূত্রপাত।
পিতৃপক্ষের শেষ লগ্নে পুর্বসূরিদের উদ্দেশ্যে অনেকেই তর্পণ করে থাকেন মহালয়ায়। ‘তর্পণ’ কথাটির অর্থ হল তৃপ্তির উদ্দেশ্যে জলদান। অর্থাৎ মৃত পুর্বপুরুষদের অতৃপ্ত আত্মাকে এই জলদানের মাধ্যমে তৃপ্ত করা হয়। হিন্দু শাস্ত্র মতে মনে করা হয়, এ দিন পূর্বজদের অতৃপ্ত আত্মা মনুষ্য লোকের কাছাকাছি আসে।
শাস্ত্রে পঞ্চমহাযজ্ঞের বিধানও দেওয়া হয়েছে। তবে এই জলদান শুধু পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যেই নয়, সর্বভূতের উদ্দেশ্যেই করা হয়। প্রয়াত পুর্বপুরুষদের প্রতি জলদান করার কারণেই এই রীতিকে শ্রাদ্ধের সঙ্গে তুলনা করে অনেকেই মহালয়াকে শোকের দিন মনে করেন। ফলে তা কখনওই শুভেচ্ছা জানানোর দিন হতে পারে না বলে তাঁদের বিশ্বাস।
আবার অন্য দিকে, এই দিনটিই দেবীপক্ষের সূচনালগ্ন। মনে করা হয়, এই দিনে দেবতাদের বর লাভ করে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধে জেতেন দেবী দুর্গা। একে শুভক্ষণ হিসেবেই চণ্ডীপাঠ করার নিয়ম প্রচলিত। এই দিন থেকে অনেক জায়গাতেই দুর্গাপুজোর আচার শুরু হয়ে যায়। সে কথা মাথায় রেখে একাংশের মত, মহালয়া শুভদিন।
তবে শাস্ত্রমতে এই জলদান এক মহামিলনক্ষেত্র রচনা করে, যা একেবারেই অশুভ নয়। ফলে এই শুভ-অশুভের ধারণা ব্যক্তিগত দর্শনের উপরেই নির্ভর করে। এতে মহালয়ার তাৎপর্য একই রকম থাকে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy