হিন্দু ধর্মে ছট পুজো এক অন্যতম কঠিন ও পবিত্র মহাব্রত হিসাবে বিবেচিত হয়। এই পুজোয় ছঠী মাইয়া (ষষ্ঠী দেবী) ও সূর্যদেবের আরাধনা করা হয়। টানা চার দিনের এই ব্রত অত্যন্ত নিষ্ঠা ও কঠোর সংযমের সঙ্গে পালন করতে হয়। বিশেষ করে কেউ যদি প্রথম বারের জন্য ছট পুজো বা উপবাস শুরু করেন, তবে কিছু অত্যাবশ্যকীয় বিষয় ও নিয়ম তাঁকে জানতেই হবে। প্রথা অনুযায়ী, এই জিনিসগুলি ছাড়া সূর্যদেব ও ছঠী মাইয়ার পুজো অসম্পূর্ণ থেকে যেতে পারে! এগুলি হল -
১. নহায়-খায় পর্বের বিশেষ খাবার: এই দিনে নিয়ম মেনে ভাত, ছোলার ডাল এবং করলা নিবেদন ও গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উপবাস শুরু করার আগে এই শুদ্ধ খাবারগুলি খাওয়া জরুরি।
২.ঠেকুয়া প্রসাদ অপরিহার্য: ছট পুজোর প্রসাদের ডালা ঠেকুয়া ছাড়া অসম্পূর্ণ। পুজোয় এটিকে অবশ্যই উৎসর্গ করতে হবে। দ্বিতীয় দিনে অর্থাৎ 'খরনা'-র দিন ঠেকুয়া তৈরির নিয়ম রয়েছে।
৩. হলুদ সিঁদুর বা ভাকরা সিঁদুরের ব্যবহার: ছঠী মাইয়ার পুজো করার সময় বিবাহিত মহিলাদের জন্য এক বিশেষ ধরনের সিঁদুর ব্যবহার করা আবশ্যিক। এই সিঁদুরকে হলুদ সিঁদুর বা ভাকরা সিঁদুর বলা হয়। এটি সৌভাগ্য ও দীর্ঘ দাম্পত্যের প্রতীক। পুজো চলাকালীন ব্রতী বিবাহিত মহিলারা এই সিঁদুর অবশ্যই ব্যবহার করবেন।
৪. অর্ঘ্য নিবেদনের মূল উপকরণ - নারকেল ও আখ: ছট পুজোয় সূর্যদেবকে অর্ঘ্য নিবেদন করা বাধ্যতামূলক। এই অর্ঘ্য নিবেদনের সামগ্রীতে দুটি জিনিস অপরিহার্য। তা হল - নারকেল: এবং আখ।
৫. কঠোর নির্জলা উপবাসের নিয়ম: এই ব্রতে দীর্ঘ সময় ধরে নির্জলা উপবাস রাখা নিয়ম। অনেক সময় ১৮ ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় ধরে এক বিন্দু জলও গ্রহণ করা নিষিদ্ধ থাকে। সূর্যাস্তের পর জলাশয়ে নেমে সূর্যদেবকে অর্ঘ্য নিবেদন করা হয়।
প্রথম বার এই ব্রত পালনকারীকে অত্যন্ত নিয়ম ও নিষ্ঠা ভরে এই সমস্ত বিষয় ও রীতিনীতি মেনে চলতে হবে। তবেই ছঠী মাইয়া এবং সূর্যদেবের আশীর্বাদ লাভ করে পরিবারে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় থাকবে বলে বিশ্বাস করা হয়।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।