প্রেজেন্টস্
Knowledge Partner
Fashion Partner
Wedding Partner
Banking Partner
Comfort Partner
Kojagori Laxmi Puja 2025

সরাপট থেকে কলাবউ, নৌকো থেকে ধান ভর্তি ঝুড়ি– মূর্তি ছাড়া আর কী কী উপায়ে লক্ষ্মীর পুজো হয়?

ওপার বাংলায় মূর্তির প্রচলন ছিল না। বদলে প্রতীকে লক্ষ্মীপুজো হতো। সরা, বেড়, কলাবউকে লক্ষ্মী দেবী রূপে পুজো করার মধ্যে দিয়ে বেঁচে রয়েছে প্রতীক পুজোর রীতি।

সৌভিক রায়
শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৫ ১৪:১০
Share: Save:
০১ ১১
 আশ্বিনের পূর্ণিমায় কোজাগরী লক্ষ্মীর আরাধনা হয়। বছরের এই লক্ষ্মীপুজোটি মূলত পূর্ববাংলার মানুষেরা করেন অর্থাৎ যাঁদের শিকড় রয়েছে ওপার বাংলায়। ওপার বাংলার এক একটি অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে ধনদেবীর আরাধনা হতো।

আশ্বিনের পূর্ণিমায় কোজাগরী লক্ষ্মীর আরাধনা হয়। বছরের এই লক্ষ্মীপুজোটি মূলত পূর্ববাংলার মানুষেরা করেন অর্থাৎ যাঁদের শিকড় রয়েছে ওপার বাংলায়। ওপার বাংলার এক একটি অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে ধনদেবীর আরাধনা হতো।

০২ ১১
মূর্তির প্রচলন ছিল না। বদলে প্রতীকে পুজো হত। এপারে এসেও সে রীতি বাঁচিয়ে রেখেছেন কেউ কেউ। কোথাও লক্ষ্মী সরায় পুজো পান, কোথাও কলাবউ দেবী রূপে পূজিত হয়।

মূর্তির প্রচলন ছিল না। বদলে প্রতীকে পুজো হত। এপারে এসেও সে রীতি বাঁচিয়ে রেখেছেন কেউ কেউ। কোথাও লক্ষ্মী সরায় পুজো পান, কোথাও কলাবউ দেবী রূপে পূজিত হয়।

০৩ ১১
লক্ষ্মী সরা:  অনেকেই পরিবারিক নিয়ম মেনে সরাপটে লক্ষ্মী পুজো করেন। মাটির সরার উপর নানা রঙ দিয়ে আঁকা হয় মা লক্ষ্মীর ছবি। সরার একাধিক রকমফের রয়েছে। অবিভক্ত বাংলার ফরিদপুর জেলার সুরেশ্বর গ্রামে সুরেশ্বরী ঘরানার সরার জন্ম। সরার উপরের অংশে শিব, মাঝে সপরিবারে দুর্গা এবং নীচের দিকে লক্ষ্মীকে আঁকা হয়। গণক ঠাকুরদের হাতে তৈরি সরার নাম হয়েছিল ‘গণকী সরা’।

লক্ষ্মী সরা: অনেকেই পরিবারিক নিয়ম মেনে সরাপটে লক্ষ্মী পুজো করেন। মাটির সরার উপর নানা রঙ দিয়ে আঁকা হয় মা লক্ষ্মীর ছবি। সরার একাধিক রকমফের রয়েছে। অবিভক্ত বাংলার ফরিদপুর জেলার সুরেশ্বর গ্রামে সুরেশ্বরী ঘরানার সরার জন্ম। সরার উপরের অংশে শিব, মাঝে সপরিবারে দুর্গা এবং নীচের দিকে লক্ষ্মীকে আঁকা হয়। গণক ঠাকুরদের হাতে তৈরি সরার নাম হয়েছিল ‘গণকী সরা’।

০৪ ১১
সরার উপরের অংশে থাকেন অস্ত্রে সাজে সুসজ্জিতা মা দুর্গা এবং তাঁর পরিবার। আর নীচের দিকে লক্ষ্মী। ‘ফরিদপুরী সরা’র ক্ষেত্রে দু’টি আলাদা ধরন দেখা যায়। উপরের দিকে মা দুর্গা থাকেন, কোনও কোনওটাতে থাকে লক্ষ্মী-নারায়ণ বা রাধা-কৃষ্ণ। নীচে আঁকা হয় লক্ষ্মী দেবীর ছবি। ‘ঢাকাই সরা’য় একক ভাবে দেবী লক্ষ্মী থাকেন। এ ছাড়াও বহু স্বতন্ত্র ঘরানা রয়েছে। যেমন, তাহেরপুরের সরা, কুমারটুলির সরা, এক লক্ষ্মী সরা, জোড়া লক্ষ্মী সরা, তিনপুতলি সরা, চারপুতলি সরা, পাঁচপুতলি সরা, সাতপুতলি লক্ষ্মী সরা ইত্যাদি।

সরার উপরের অংশে থাকেন অস্ত্রে সাজে সুসজ্জিতা মা দুর্গা এবং তাঁর পরিবার। আর নীচের দিকে লক্ষ্মী। ‘ফরিদপুরী সরা’র ক্ষেত্রে দু’টি আলাদা ধরন দেখা যায়। উপরের দিকে মা দুর্গা থাকেন, কোনও কোনওটাতে থাকে লক্ষ্মী-নারায়ণ বা রাধা-কৃষ্ণ। নীচে আঁকা হয় লক্ষ্মী দেবীর ছবি। ‘ঢাকাই সরা’য় একক ভাবে দেবী লক্ষ্মী থাকেন। এ ছাড়াও বহু স্বতন্ত্র ঘরানা রয়েছে। যেমন, তাহেরপুরের সরা, কুমারটুলির সরা, এক লক্ষ্মী সরা, জোড়া লক্ষ্মী সরা, তিনপুতলি সরা, চারপুতলি সরা, পাঁচপুতলি সরা, সাতপুতলি লক্ষ্মী সরা ইত্যাদি।

০৫ ১১
আড়ি লক্ষ্মী:  কাঠের জলচৌকির উপর বেতের চুপড়ি বা ছোট ঝুড়িতে ধান ভর্তি করে তার উপর কাঠের জোড়া সিঁদুর কৌটো রেখে লাল চেলি দিয়ে মুড়ে দেবীর রূপ দেওয়া হয়। একে ‘আড়ি লক্ষ্মী’ বলে। অনেক বাড়িতে কুনকেও ব্যবহার করা হয়। একদা দানাশস্য পরিমাপ করা হতো কুনকের মাধ্যমে। ঢাকা, কুমিল্লার বাঙালদের আড়ি লক্ষ্মী পুজোর নিয়ম আছে। আড়ি লক্ষ্মী পুজো আদতে ধান্যলক্ষ্মীর আরাধনা।

আড়ি লক্ষ্মী: কাঠের জলচৌকির উপর বেতের চুপড়ি বা ছোট ঝুড়িতে ধান ভর্তি করে তার উপর কাঠের জোড়া সিঁদুর কৌটো রেখে লাল চেলি দিয়ে মুড়ে দেবীর রূপ দেওয়া হয়। একে ‘আড়ি লক্ষ্মী’ বলে। অনেক বাড়িতে কুনকেও ব্যবহার করা হয়। একদা দানাশস্য পরিমাপ করা হতো কুনকের মাধ্যমে। ঢাকা, কুমিল্লার বাঙালদের আড়ি লক্ষ্মী পুজোর নিয়ম আছে। আড়ি লক্ষ্মী পুজো আদতে ধান্যলক্ষ্মীর আরাধনা।

০৬ ১১
কলাবউ:  কলাগাছের সঙ্গে ধান, হলুদ, মানকচু, তুলসী আর আখের ডগা বেঁধে নতুন বস্ত্র পরিয়ে লক্ষ্মী রূপে পুজো করা হয়। ফরিদপুর, বরিশালে যাঁদের শিকড়, সেই সব পরিবারে কলাবউয়ের প্রতীকে লক্ষ্মীপুজোর প্রচলন আছে। অনেক পরিবারে নবপত্রিকাকেও লক্ষ্মী জ্ঞানে পুজো করা হয়। কলাগাছের সঙ্গে কচু, হলুদ, জয়ন্তী, বেল, দাড়িম, অশোক, মান, ধান এবং একজোড়া বেলের সঙ্গে শ্বেত অপরাজিতার লতা দিয়ে বেঁধে লাল পার সাদা শাড়ি পরিয়ে ঘোমটা দেওয়া বধূর আকার দেওয়া হয়। ঘোমটার মাথায় দুটি শোলার কদম ফুল বেঁধে দেওয়া হয়।

কলাবউ: কলাগাছের সঙ্গে ধান, হলুদ, মানকচু, তুলসী আর আখের ডগা বেঁধে নতুন বস্ত্র পরিয়ে লক্ষ্মী রূপে পুজো করা হয়। ফরিদপুর, বরিশালে যাঁদের শিকড়, সেই সব পরিবারে কলাবউয়ের প্রতীকে লক্ষ্মীপুজোর প্রচলন আছে। অনেক পরিবারে নবপত্রিকাকেও লক্ষ্মী জ্ঞানে পুজো করা হয়। কলাগাছের সঙ্গে কচু, হলুদ, জয়ন্তী, বেল, দাড়িম, অশোক, মান, ধান এবং একজোড়া বেলের সঙ্গে শ্বেত অপরাজিতার লতা দিয়ে বেঁধে লাল পার সাদা শাড়ি পরিয়ে ঘোমটা দেওয়া বধূর আকার দেওয়া হয়। ঘোমটার মাথায় দুটি শোলার কদম ফুল বেঁধে দেওয়া হয়।

০৭ ১১
 বেড়ী লক্ষ্মী:  কলার বাকলকে গোল করে পাকিয়ে নারকেলের কাঠি দিয়ে আটকে চোঙাকৃতির কাঠামো বানানো হয়, একে বলা হয় ‘বেড়’। বেড়ের গায়ে সিঁদুর দিয়ে স্বস্তিকা আঁকা হয়। কাঠের পিঁড়ি বা জলচৌকির উপর ৯টি বেড় রাখা হয়। অঞ্চল ভেদে পাঁচটি, সাতটি করে বেড় রাখার রেওয়াজ আছে। পঞ্চশস‍্য দিয়ে বেড়গুলি পূর্ণ করা হয়। বেড়ের উপরে শিষ-সহ ডাব রেখে লাল চেলি দিয়ে ঢেকে বউ সাজিয়ে দেবী লক্ষ্মী রূপে কল্পনা করে পুজো করা হয়। শস্যপূর্ণ বেড় হল ফসলে পরিপূর্ণ গোলার প্রতীক।

বেড়ী লক্ষ্মী: কলার বাকলকে গোল করে পাকিয়ে নারকেলের কাঠি দিয়ে আটকে চোঙাকৃতির কাঠামো বানানো হয়, একে বলা হয় ‘বেড়’। বেড়ের গায়ে সিঁদুর দিয়ে স্বস্তিকা আঁকা হয়। কাঠের পিঁড়ি বা জলচৌকির উপর ৯টি বেড় রাখা হয়। অঞ্চল ভেদে পাঁচটি, সাতটি করে বেড় রাখার রেওয়াজ আছে। পঞ্চশস‍্য দিয়ে বেড়গুলি পূর্ণ করা হয়। বেড়ের উপরে শিষ-সহ ডাব রেখে লাল চেলি দিয়ে ঢেকে বউ সাজিয়ে দেবী লক্ষ্মী রূপে কল্পনা করে পুজো করা হয়। শস্যপূর্ণ বেড় হল ফসলে পরিপূর্ণ গোলার প্রতীক।

০৮ ১১
কলার নৌকো:  কলার থোড় থেকে ডিঙা বা নৌকো তৈরি করে লক্ষ্মীর পুজো হয়। কোনও কোনও পরিবারে সাতটি ডিঙা তৈরির রীতি আছে। বলা হয় সপ্ততরী। পঞ্চশস্য, টাকা দিয়ে ভর্তি করে ডিঙাগুলি পুজোর আসনে রাখা হয়। পুজোর শেষে নৌকো পুকুরে ভাসানোর রীতিও দেখা যায়। বণিক পরিবারগুলিতে এই আচার বিদ্যমান। ক্ষুদ্রাকৃতির নৌকো তৈরি করে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোয় দেবীকে নিবেদনের প্রথাও রয়েছে। প্রাচীন বঙ্গের সমৃদ্ধ নদী বাণিজ্যের প্রতীক এই ধরনের লক্ষ্মী আরাধনা।

কলার নৌকো: কলার থোড় থেকে ডিঙা বা নৌকো তৈরি করে লক্ষ্মীর পুজো হয়। কোনও কোনও পরিবারে সাতটি ডিঙা তৈরির রীতি আছে। বলা হয় সপ্ততরী। পঞ্চশস্য, টাকা দিয়ে ভর্তি করে ডিঙাগুলি পুজোর আসনে রাখা হয়। পুজোর শেষে নৌকো পুকুরে ভাসানোর রীতিও দেখা যায়। বণিক পরিবারগুলিতে এই আচার বিদ্যমান। ক্ষুদ্রাকৃতির নৌকো তৈরি করে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোয় দেবীকে নিবেদনের প্রথাও রয়েছে। প্রাচীন বঙ্গের সমৃদ্ধ নদী বাণিজ্যের প্রতীক এই ধরনের লক্ষ্মী আরাধনা।

০৯ ১১
লক্ষ্মীর ঘট:  ঘটে লক্ষ্মীর মুখ থাকায় নাম হয়েছে লক্ষ্মীর ঘট। পোড়ামাটির ঘটে চাল বা ধান বা যে কোনও শস্য পূর্ণ করে লক্ষ্মীরূপে কল্পনা করে পুজো করা হয়। কিছু না পেলে, নদীর জলেও ঘট ভর্তি করা যেতে পারে। কাঠের জলচৌকিতে ঘট স্থাপন করা হয়।

লক্ষ্মীর ঘট: ঘটে লক্ষ্মীর মুখ থাকায় নাম হয়েছে লক্ষ্মীর ঘট। পোড়ামাটির ঘটে চাল বা ধান বা যে কোনও শস্য পূর্ণ করে লক্ষ্মীরূপে কল্পনা করে পুজো করা হয়। কিছু না পেলে, নদীর জলেও ঘট ভর্তি করা যেতে পারে। কাঠের জলচৌকিতে ঘট স্থাপন করা হয়।

১০ ১১
এ ছাড়াও লক্ষ্মীর আসনে থাকা দেবীর ঘট, সিঁদুর কৌটো, কাঠের বা ধাতুর পেঁচা, কড়ি, দেবীর ছবি সব কিছুকেই দেবী রূপে পুজো করা যায়। বেড়, নৌকো, আড়ি প্রতিটি প্রতীক-ই লক্ষ্মীর কোনও না কোনও রূপ।

এ ছাড়াও লক্ষ্মীর আসনে থাকা দেবীর ঘট, সিঁদুর কৌটো, কাঠের বা ধাতুর পেঁচা, কড়ি, দেবীর ছবি সব কিছুকেই দেবী রূপে পুজো করা যায়। বেড়, নৌকো, আড়ি প্রতিটি প্রতীক-ই লক্ষ্মীর কোনও না কোনও রূপ।

১১ ১১
প্রতীক পুজোর ধরন থেকে জানা যায় কোন পরিবারের শিকড় কোথায়। কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো কেবল বছরের অন্যতম একটি পার্বণ নয়, দেশ ছেড়ে আসা ছিন্নমূল মানুষের সঙ্গে দেশের বাড়ির যোগ রক্ষাকারী সেতু আশ্বিন পূর্ণিমা। (‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’।)  (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)

প্রতীক পুজোর ধরন থেকে জানা যায় কোন পরিবারের শিকড় কোথায়। কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো কেবল বছরের অন্যতম একটি পার্বণ নয়, দেশ ছেড়ে আসা ছিন্নমূল মানুষের সঙ্গে দেশের বাড়ির যোগ রক্ষাকারী সেতু আশ্বিন পূর্ণিমা। (‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’।) (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy