এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১০
'ক্ষেপী মা'-এর মন্দির এই বাংলার এক বিখ্যাত কালী মন্দির। পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ায় এই মন্দির অবস্থিত। ভক্তদের বিশ্বাস,এই দেবী খুবই জাগ্রত। তাই, দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এখানে আসেন।
০২১০
এই মন্দিরের দেবী পরিচিত 'ক্ষেপী মা' বা 'ক্ষ্যাপা কালী' নামে! জনশ্রুতি অনুসারে, ক্ষ্যাপাটে স্বভাবের কালীভক্ত এক সাধিকা এখানে পুজো শুরু করেন। তাঁর থেকেই দেবীর এ হেন নামকরণ। এ ছাড়া মতান্তরে, নরেন ক্ষ্যাপা নামে স্থানীয় মালোপাড়ার এক কালী ভক্তেরও উল্লেখ পাওয়া যায়।
০৩১০
আবার, অন্য একটি জনশ্রুতি অনুসারে - এই মন্দিরের সঙ্গে ডাকাতদের যোগ উল্লেখ করা হয়েছে! অনুমান করা হয়, কয়েকশো বছর আগে এখানে গভীর জঙ্গল ছিল। সেই সময় এক দুর্ধর্ষ ডাকাত এই জঙ্গলে মায়ের পুজো করত! ডাকাতি করার আগে সে দেবীর আরাধনা করত!
০৪১০
আরও দাবি করা হয়, ভাগীরথীর তীরে এই জঙ্গল ছিল ডাকাতদের ডেরা। ডাকাত সর্দার পুলিশকে এড়াতে কালী মূর্তি লুকিয়ে রাখত। সেই ডাকাতের কালীই নাকি আজ ক্ষেপী মা।
০৫১০
এখন অবশ্য কথিত সেই জঙ্গল জনবসতিপূর্ণ এলাকায় পরিণত হয়েছে। ক্ষেপা কালী পাড়ায় তৈরি হয়েছে সুবিশাল মন্দির। ডাকাত নেই, কিন্তু পুজো চলে মহা ধুমধামে।
০৬১০
এই মন্দিরের দেবী তাঁর অলঙ্কারের জন্য বিশেষ ভাবে বিখ্যাত। প্রতি বছর কালীপুজোয় মাকে সোনা ও রুপোর গয়না পরিয়ে সাজানো হয়। মাতৃ মূর্তিটি প্রায় ৫ কেজি সোনা ও ৯ কেজি রুপো দিয়ে অলংকৃত হয়! যার মধ্যে অন্যতম সোনার মুকুট, সীতাহার ও বালা।
০৭১০
তথাকথিত ডাকাতদের হাতে শুরু হওয়া পুজোয় এখন পুলিশের কড়া পাহারা থাকে। কালীপুজোর দিন সশস্ত্র পুলিশ পাহারায় গহনা আনা হয়। ব্যাঙ্কের লকার থেকে গয়না এনে মাকে পরানো হয়। পুজো চলাকালীন মন্দিরে থাকে কড়া নিরাপত্তা।
০৮১০
ক্ষেপী মা খুব জাগ্রত দেবী বলে ভক্তদের বিশ্বাস। মায়ের কাছে কিছু চাইলে কেউ খালি হাতে ফেরে না। মনোস্কামনা পূর্ণ হয় মায়ের কৃপায়। অনেকেই দূরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি পান বলে বিশ্বাস করা হয়।
০৯১০
প্রায় ৪৫০ থেকে ৫০০ বছরের প্রাচীন এই পুজো। মালো সম্প্রদায়ের সঙ্গে পুজোর গভীর যোগ আছে। মায়ের প্রতিমা নির্মাণ ও বেদি স্থাপনে এই সম্প্রদায়ের ভূমিকা থাকে।
১০১০
কাটোয়ার এই মন্দির শাক্তভক্ত ও পর্যটকদের কাছে বড় আকর্ষণ। প্রতি বছর কালীপুজোয় বিপুল ভক্ত সমাগম হয়। ক্ষেপী মা কাটোয়ার এক বিশাল ঐতিহ্য তুলে ধরেন। এটি এখন 'খ্যাপাকালীতলা সর্বজনীন কালীক্ষেত্র' নামে পরিচিত। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।