প্রেজেন্টস্
Knowledge Partner
Fashion Partner
Wedding Partner
Banking Partner
Comfort Partner

‘পঞ্চ ম’ ছাড়া অসম্পূর্ণ কালীপুজো, মৈথুন, মাংস ছাড়া এ দিন দেবীকে আর কী কী উৎসর্গ করা হয়?

তমোঘ্ন নস্কর

শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৫ ১০:১২
প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

“ মদ্যং মাংসং তথা মৎস্তং মুদ্রা মৈথুনমেব চ।

শক্তিপুজাবিধাবাদ্যে পঞ্চতত্ত্বং প্রকীর্তিতম্।।”

~মহানির্ব্বাণ তন্ত্র, ৫ম উল্লাস

অর্থাৎ, শক্তিপূজা-প্রকরণে মদ্য, মাংস, মৎস্য, মুদ্রা ও মৈথুন– এই পঞ্চতত্ত্ব সাধন স্বরূপে কীর্তিত হয়ে থাকে।

মদ্য, মাংস, মৎস্য, মুদ্রা, মৈথুন– এই পাঁচটি ম। পঞ্চ ম-কার বাইরে থেকে দেখলে অত্যন্ত স্থূল। এর গভীরেই অত্যন্ত গভীর সূক্ষ্ম তত্ত্বটি বিদ্যমান। একেই বলে পঞ্চ তত্ত্ব।

পঞ্চ তত্ত্বের প্রথম তত্ত্ব ‘মদ্য’।

আগমসারে প্রকাশ -

“ সোমধারা ক্ষরে যাতু ব্রহ্মরন্ধ্রাদ্ বরাননে। পীত্বানন্দময়ীং তাং যঃ স এব মদ্যসাধকঃ। ”

অর্থাৎ, হে পার্বতী, ব্রহ্মারন্ধ্র থেকে যে সোমধারা বা অমৃতধারা ক্ষরিত হয়, তা পান করে মানুষ আনন্দে পূর্ণ হয়। এই আনন্দময় পুরুষই মদ্যসাধক।

মাংস:

মা শব্দে রসনাকে বোঝানো হয়। বাক্য রসনারই অংশ সম্ভূত, সুতরাং যে ব্যক্তি সর্বদা উহা ভক্ষণ করে (অর্থাৎ, যে মৌনী হয়), তাকেই বলা হয় মাংস সাধক। অর্থাৎ বাক্য বা মন্ত্র উচ্চারণ এবং বাক সংযম, দুই-ই সাধককে অভ্যাস করতে হয়।

মাংসসাধক ব্যক্তি প্রকৃত প্রস্তাবে বাক্যসংযমী মৌনাবলম্বী যোগী।

মৎস্য:

“গঙ্গা যমুনয়োর্ম্মধ্যে মৎসৌ দৌ চরতঃ সদা।

তৌ মৎসৌ ভক্ষয়েদ যস্তু স ভবেৎ মৎস্যসাধকঃ ॥”

সহজ ভাবে ব্যাখ্যা করলে, গঙ্গা-যমুনার মধ্যে দুইটি মৎস্য সর্বদা বিচরণ করে। যে ব্যক্তি এই দু’টি মাছ ভক্ষণ করে, তাকে বলা হয় মৎস্য সাধক। ঈড়া ও পিঙ্গলা, দুই নারীকে গঙ্গা ও যমুনা বলা হচ্ছে। শ্বাস ও প্রশ্বাস ধারণ মৎস্য, দ্বিবিধ প্রাণবায়ু। অর্থাৎ মৎস্য সাধনা হলো দেহ অভ্যন্তরস্থ বায়ুর আনাগোনাকে নিজ নিয়ন্ত্রণে আনা। অর্থাৎ যে প্রাণায়াম সাধক শ্বাস-প্রশ্বাস রোধ করে কুম্ভকের পুষ্টি সাধন করেন, তিনিই মৎস্যসাধক।

মুদ্রা:

আত্মা হল বোধ বা আজ্ঞাচক্র নিয়ন্তা। শিরস্থিত সহস্রদল পদ্ম বা বোধে মুদ্রিত কর্ণিকার অভ্যন্তরে আত্মার অবস্থান। বোধই পরম, একই সঙ্গে সূর্যের তেজ এবং চন্দ্রের স্নিগ্ধতা তার ভিতরে সমাহিত। এই প্রাপ্তি হল জ্ঞানপ্রাপ্তি বা জ্ঞানোদয়, তাই এটিই মুদ্রাসাধন।

মৈথুন:

কুণ্ডলিনী শক্তি নিম্নে মূলাধারে অবস্থান করে। আর সহস্রদল পদ্মের কর্ণিকার মণিরূপে পরম শিব অবস্থান করেন ঊর্ধ্বে। যোগ সাধনার মাধ্যমে ষটচক্র ভেদ করে অর্থাৎ গমন করে, কুণ্ডলিনী শক্তিকে পরম শিবের সঙ্গে সঙ্গম বা মিলন ঘটানোই মৈথুন।

সহজ ভাবে বললে, দেহের মূলাধারে শক্তি কুণ্ডলী রূপে ঘুমিয়ে থাকেন। তাকে উত্থিত ও জাগ্রত করে আজ্ঞাচক্রে শিবের সঙ্গে মিলন ঘটানোই হল পঞ্চ ম-কারের অন্যতম সিদ্ধি মৈথুন।

মৈথুন রেখচিত্রে সামগ্রিক আত্মিক উত্তরণ।

অর্থাৎ, বায়ুরূপ পুরুষ শূন্যরূপ স্ত্রী গমন করে কুম্ভকরূপে রমণে প্রবৃত্ত হয়ে থাকে।

অর্থাৎ, মৈথুন সৃষ্টি, স্থিতি ও লয়ের কারণ। তা-ই পরমতত্ত্ব।

মৈথুনক্রিয়াতে সিদ্ধিলাভ ঘটে এবং তা থেকে সুদুর্লভ ব্রহ্মজ্ঞান লাভ হয়।

তথ্য ঋণ- কালী কথা- পত্রভারতী

সাধক পরমানন্দ গিরি মহারাজ, শ্রীরামপুর সিদ্ধেশ্বরী মন্দির

শাস্ত্রকার অরিজিৎ মজুমদার

সাধক শ্রী শুভ্র ভট্টাচার্য

কালী কথা - শিবশংকর ভারতী

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy