প্রেজেন্টস্
Knowledge Partner
Fashion Partner
Wedding Partner
Banking Partner
Comfort Partner
Sky Lanterns

কালীপুজোর বিকেলে উত্তর কলকাতার আকাশ ভরত বাহারি ফানুসে! কী ভাবে শুরু হল এই রেওয়াজ

হেমন্তের আকাশে ভেসে যায় বিন্দু বিন্দু আলো। গোধূলি আকাশ রঙিন হয়ে ওঠে একরাশ জোনাকিতে। এ যেন আলোর উৎসবের আগমনী।

আনন্দ উৎসব ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৫ ২৩:৫৭
Share: Save:
০১ ২০
হেমন্তের আকাশে ভেসে যায় বিন্দু বিন্দু আলো। গোধূলি আকাশ রঙিন হয়ে ওঠে একরাশ জোনাকিতে। এ যেন আলোর উৎসবের আগমনী। কালীপুজোর দিন সন্ধে নামার মুহূর্তে কলকাতার আকাশে লেখা হত সেই সাঁঝবাতির রূপকথা।

হেমন্তের আকাশে ভেসে যায় বিন্দু বিন্দু আলো। গোধূলি আকাশ রঙিন হয়ে ওঠে একরাশ জোনাকিতে। এ যেন আলোর উৎসবের আগমনী। কালীপুজোর দিন সন্ধে নামার মুহূর্তে কলকাতার আকাশে লেখা হত সেই সাঁঝবাতির রূপকথা।

০২ ২০
দীপাবলি তথা কালীপুজোয় কলকাতার একশো বছরের প্রাচীন প্রথা ফানুস। আতশবাজির মতোই উজ্জ্বল তার শুরুর গল্প।

দীপাবলি তথা কালীপুজোয় কলকাতার একশো বছরের প্রাচীন প্রথা ফানুস। আতশবাজির মতোই উজ্জ্বল তার শুরুর গল্প।

০৩ ২০
এক সময়ে কলকাতার সুতানুটি অঞ্চলে কালীপুজোর দিন প্রায় সব বাড়িতেই ফানুস ওড়ানোর প্রথা ছিল।

এক সময়ে কলকাতার সুতানুটি অঞ্চলে কালীপুজোর দিন প্রায় সব বাড়িতেই ফানুস ওড়ানোর প্রথা ছিল।

০৪ ২০
ঠিক কবে কলকাতায় প্রথম ফানুস উড়েছিল, তার কোনও লিখিত প্রমাণ পাওয়া যায় না।

ঠিক কবে কলকাতায় প্রথম ফানুস উড়েছিল, তার কোনও লিখিত প্রমাণ পাওয়া যায় না।

০৫ ২০
তবে জনশ্রুতি বলে, ১৯১২ সালে উত্তর কলকাতার বিডন স্ট্রিটের দর্জি পাড়ায় প্রথম ফানুস ওড়ে। কলকাতায় তখন বাবু সংস্কৃতির রমরমা। তার মাঝেই শহরের আকাশে প্রথম ফানুস ওড়ান স্কটিশ চার্চ কলেজের গণিতের অধ্যাপক গৌরীশঙ্কর দে।

তবে জনশ্রুতি বলে, ১৯১২ সালে উত্তর কলকাতার বিডন স্ট্রিটের দর্জি পাড়ায় প্রথম ফানুস ওড়ে। কলকাতায় তখন বাবু সংস্কৃতির রমরমা। তার মাঝেই শহরের আকাশে প্রথম ফানুস ওড়ান স্কটিশ চার্চ কলেজের গণিতের অধ্যাপক গৌরীশঙ্কর দে।

০৬ ২০
বিডন স্ট্রিটের ভোলানাথ ধামে ভোলানাথ দত্তের পরিবারে ১৯২৫ থেকে ফানুস ওড়ানোর রেওয়াজ শুরু হয়।

বিডন স্ট্রিটের ভোলানাথ ধামে ভোলানাথ দত্তের পরিবারে ১৯২৫ থেকে ফানুস ওড়ানোর রেওয়াজ শুরু হয়।

০৭ ২০
পরে কালী পুজোয় ফানুস ওড়ানো প্রথা হয়ে দাঁড়ায় উত্তরের অন্যান্য বাড়িতেও।

পরে কালী পুজোয় ফানুস ওড়ানো প্রথা হয়ে দাঁড়ায় উত্তরের অন্যান্য বাড়িতেও।

০৮ ২০
কালীপুজোর বিকেলে একসঙ্গে সব বাড়ি থেকে ফানুস ওড়ানো হত। আকাশ জুড়ে উড়ে বেড়ানো অজস্ৰ ফানুস এক অনবদ্য দৃশ্যের জন্ম দিত।

কালীপুজোর বিকেলে একসঙ্গে সব বাড়ি থেকে ফানুস ওড়ানো হত। আকাশ জুড়ে উড়ে বেড়ানো অজস্ৰ ফানুস এক অনবদ্য দৃশ্যের জন্ম দিত।

০৯ ২০
ফানুস ছিল বাবুদের বাবুয়ানির চিহ্নও। এক সময়ে বিদেশ থেকে আনানো হত ফানুস তৈরির উপকরণ। কালীপুজোর দিন দশেক আগে থেকেই শুরু হয়ে যেত সেই প্রস্তুতি।

ফানুস ছিল বাবুদের বাবুয়ানির চিহ্নও। এক সময়ে বিদেশ থেকে আনানো হত ফানুস তৈরির উপকরণ। কালীপুজোর দিন দশেক আগে থেকেই শুরু হয়ে যেত সেই প্রস্তুতি।

১০ ২০
কাগজের তৈরি ফানুস, ওড়ানো হত গরম হাওয়ায়। কারণ তা হালকা। তুলোর বল বা নুটিকে ডুবিয়ে রাখা হত স্পিরিটে। ফানুস ওড়ানোর সময়ে তাতে আগুন ধরিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হত আকাশে।

কাগজের তৈরি ফানুস, ওড়ানো হত গরম হাওয়ায়। কারণ তা হালকা। তুলোর বল বা নুটিকে ডুবিয়ে রাখা হত স্পিরিটে। ফানুস ওড়ানোর সময়ে তাতে আগুন ধরিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হত আকাশে।

১১ ২০
ফানুসের উৎপত্তি দিল্লিতে। তখন অবশ্য এই ধরনের ফানুসগুলোর নিয়ন্ত্রণ থাকত যিনি ওড়াচ্ছেন, তাঁর হাতেই। তাই ইচ্ছেমতো নামিয়ে নেওয়া যেত। তবে উত্তর ভারতের থেকে কলকাতার ফানুস কিছুটা আলাদা।

ফানুসের উৎপত্তি দিল্লিতে। তখন অবশ্য এই ধরনের ফানুসগুলোর নিয়ন্ত্রণ থাকত যিনি ওড়াচ্ছেন, তাঁর হাতেই। তাই ইচ্ছেমতো নামিয়ে নেওয়া যেত। তবে উত্তর ভারতের থেকে কলকাতার ফানুস কিছুটা আলাদা।

১২ ২০
ফানুস প্রথম তৈরি হয়েছিল চিনে। পরবর্তী কালে পর্তুগীজ বণিকদের হাত ধরে তা ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। তার পরে পৃথিবীর নানা প্রান্তে। চিনে কিন্তু এই আকাশ লণ্ঠন মোটেই উৎসবের অঙ্গ ছিল না, বরং তা ছিল বিপদ সঙ্কেত। যুদ্ধে শত্রুপক্ষের আক্রমণের মুখে পড়লে সাহায্য চেয়ে আকাশে উড়ত ফানুস।

ফানুস প্রথম তৈরি হয়েছিল চিনে। পরবর্তী কালে পর্তুগীজ বণিকদের হাত ধরে তা ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। তার পরে পৃথিবীর নানা প্রান্তে। চিনে কিন্তু এই আকাশ লণ্ঠন মোটেই উৎসবের অঙ্গ ছিল না, বরং তা ছিল বিপদ সঙ্কেত। যুদ্ধে শত্রুপক্ষের আক্রমণের মুখে পড়লে সাহায্য চেয়ে আকাশে উড়ত ফানুস।

১৩ ২০
গৌতম বুদ্ধের কাহিনির সঙ্গেও ফানুসের যোগ আছে। প্রবারণা পূর্ণিমা বা আশ্বিনী পূর্ণিমায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষেরা আকাশে ফানুস ওড়ান। অনির্বাণ মুক্তি লাভের জন্য তাঁদের এই আয়োজন।

গৌতম বুদ্ধের কাহিনির সঙ্গেও ফানুসের যোগ আছে। প্রবারণা পূর্ণিমা বা আশ্বিনী পূর্ণিমায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষেরা আকাশে ফানুস ওড়ান। অনির্বাণ মুক্তি লাভের জন্য তাঁদের এই আয়োজন।

১৪ ২০
কলকাতার মেটিয়াবুরুজে ছোটা লখনউ স্থাপিত হওয়ার পরে ফানুস ওড়ানোর শখ জাঁকিয়ে বসে এ শহরে। তবে কলকাতায় ইংরেজ প্রভাবে ফানুস আসে- এমন মতও পাওয়া যায়।

কলকাতার মেটিয়াবুরুজে ছোটা লখনউ স্থাপিত হওয়ার পরে ফানুস ওড়ানোর শখ জাঁকিয়ে বসে এ শহরে। তবে কলকাতায় ইংরেজ প্রভাবে ফানুস আসে- এমন মতও পাওয়া যায়।

১৫ ২০
আশাপূর্ণা দেবীর বাবা, শিল্পী হরেন্দ্রনাথ গুপ্ত প্রতি কালীপুজোয় শখ করে ফানুস বানাতেন ও ওড়াতেন।

আশাপূর্ণা দেবীর বাবা, শিল্পী হরেন্দ্রনাথ গুপ্ত প্রতি কালীপুজোয় শখ করে ফানুস বানাতেন ও ওড়াতেন।

১৬ ২০
ঘুড়ির কাগজের মতো পাতলা কাগজ থেকে লম্বাটে লাউয়ের গড়নের ফানুস গড়তেন। নীচের খোলা দিকে শক্ত করে বেঁধে দেওয়া হত কেরোসিন ভেজানো বল।

ঘুড়ির কাগজের মতো পাতলা কাগজ থেকে লম্বাটে লাউয়ের গড়নের ফানুস গড়তেন। নীচের খোলা দিকে শক্ত করে বেঁধে দেওয়া হত কেরোসিন ভেজানো বল।

১৭ ২০
পরবর্তী সময়ে ফানুস ওড়ানোর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ে। সময়ের বদল, নতুন প্রজন্মের জীবনের বেগ, ব্যস্ততা, দক্ষ শিল্পীর অভাব তার বড় কারণ।

পরবর্তী সময়ে ফানুস ওড়ানোর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ে। সময়ের বদল, নতুন প্রজন্মের জীবনের বেগ, ব্যস্ততা, দক্ষ শিল্পীর অভাব তার বড় কারণ।

১৮ ২০
তবে ভোলানাথ ধামে আজও ফানুস উৎসব ঘিরে উন্মাদনা দেখা যায়। উৎসাহী মানুষ ছাড়াও প্রচুর ফটোগ্রাফার, ভ্লগাররা ভিড় করে। আজকের প্রজন্মের মধ্যে ফানুসপ্রেম ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টাও চলছে। সোশ্যাল মিডিয়া, ভিডিয়ো, রিল-তার বড় হাতিয়ার।

তবে ভোলানাথ ধামে আজও ফানুস উৎসব ঘিরে উন্মাদনা দেখা যায়। উৎসাহী মানুষ ছাড়াও প্রচুর ফটোগ্রাফার, ভ্লগাররা ভিড় করে। আজকের প্রজন্মের মধ্যে ফানুসপ্রেম ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টাও চলছে। সোশ্যাল মিডিয়া, ভিডিয়ো, রিল-তার বড় হাতিয়ার।

১৯ ২০
ভোলানাথ ধামে সাড়ম্বরে কালীপুজো হয়। দত্ত পরিবারের ১০০ ফানুস উৎসবে চেনা ধরনের  রং বেরঙের ফানুস ছাড়াও ফুটবল, পটচিত্র, ব্যাটম্যানের মতো নানা রকম ফানুস দেখা গিয়েছিল। আবোলতাবোল, সহজপাঠে সেজেছিল ফানুস।

ভোলানাথ ধামে সাড়ম্বরে কালীপুজো হয়। দত্ত পরিবারের ১০০ ফানুস উৎসবে চেনা ধরনের রং বেরঙের ফানুস ছাড়াও ফুটবল, পটচিত্র, ব্যাটম্যানের মতো নানা রকম ফানুস দেখা গিয়েছিল। আবোলতাবোল, সহজপাঠে সেজেছিল ফানুস।

২০ ২০
সাধারণ বাড়িতে আতশবাজির সঙ্গে এখনও ছাড়া হয় ফানুস। কিন্তু তার ধরন আলাদা। সেখানেও সাবেক ঐতিহ্যের বদলে 'চিনা স্টাইল' চলছে। দীপাবলিতে কলকাতা-সহ নানা প্রান্তে সম্মিলিত ভাবে ফানুস ছাড়ার আয়োজন হয়ে থাকে। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।

সাধারণ বাড়িতে আতশবাজির সঙ্গে এখনও ছাড়া হয় ফানুস। কিন্তু তার ধরন আলাদা। সেখানেও সাবেক ঐতিহ্যের বদলে 'চিনা স্টাইল' চলছে। দীপাবলিতে কলকাতা-সহ নানা প্রান্তে সম্মিলিত ভাবে ফানুস ছাড়ার আয়োজন হয়ে থাকে। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy