প্রেজেন্টস্
Knowledge Partner
Fashion Partner
Wedding Partner
Banking Partner
Comfort Partner
Kojagori Laxmi Puja 2025

পিটুলির আলপনায় লক্ষ্মীর পদচিহ্ন, চিঁড়ে, টুনি ফুল, পানিফল, তাল ফোঁপরা– যা যা ছাড়া কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো অসম্পূর্ণ

কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর আয়োজনে বাহুল্যতা নেই। টুনি ফুল, পানিফল, তাল ফোঁপরার মতো অতিসাধারণ বস্তুই এই পুজোর প্রধান উপাচার।

সৌভিক রায়
শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৫ ২০:১৪
Share: Save:
০১ ১০
কৈলাসে ফিরে গিয়েছেন দেবী উমা। এ বার তাঁর কন্যার আরাধনার পালা। আশ্বিন পূর্ণিমায় লক্ষ্মীপুজোর মধ্যে দিয়ে শেষ হয় দেবীপক্ষ। এ দিন বাড়িতে বাড়িতে পুজো পান সম্পদের দেবী। কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো হল বাড়ির মা-ঠাকুমাদের উৎসব। দিনভর উপোস করে তাঁরা দেবীর জন্য রচনা সামগ্রী প্রস্তুত করেন। গুড় জ্বাল দিয়ে নাড়ু, তক্তি বানান। খইয়ের মোয়া পাকান। এ পুজোর আয়োজনে বাহুল্যতা নেই। আছে আন্তরিকতা, আছে শিকড়ের যোগ, আছে পল্লী বাংলার ছোঁয়া।

কৈলাসে ফিরে গিয়েছেন দেবী উমা। এ বার তাঁর কন্যার আরাধনার পালা। আশ্বিন পূর্ণিমায় লক্ষ্মীপুজোর মধ্যে দিয়ে শেষ হয় দেবীপক্ষ। এ দিন বাড়িতে বাড়িতে পুজো পান সম্পদের দেবী। কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো হল বাড়ির মা-ঠাকুমাদের উৎসব। দিনভর উপোস করে তাঁরা দেবীর জন্য রচনা সামগ্রী প্রস্তুত করেন। গুড় জ্বাল দিয়ে নাড়ু, তক্তি বানান। খইয়ের মোয়া পাকান। এ পুজোর আয়োজনে বাহুল্যতা নেই। আছে আন্তরিকতা, আছে শিকড়ের যোগ, আছে পল্লী বাংলার ছোঁয়া।

০২ ১০
কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হল আলপনা। দুপুর থেকে পিটুলি গোলার (আতপ চালের গুঁড়ো) আলপনা দেওয়ার পর্ব চলে। মেঝেতে, নিকানো উঠোনে লক্ষ্মীপেঁচা, ধানছড়া, শঙ্খ, পদ্ম, দেবীর পদচিহ্ন ইত্যাদি আঁকা হয়। পূর্ববঙ্গীয়দের মধ্যে আবার লক্ষ্মী পুজোর আলপনায় মাছেরও দেখা মেলে। লক্ষ্মীর পদযুগলের আলপনা দেওয়ার রীতিটি সর্বত্র দেখা যায়। বাড়ির মেয়ে-বউদের আঁকা লক্ষ্মীর পদচিহ্ন কোজাগরী পুজোর অবিচ্ছেদ্য অংশ। হালের ‘স্টিকার’ আলপনার যুগেও লক্ষ্মীর পদচিহ্নের জনপ্রিয়তা কমেনি।

কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হল আলপনা। দুপুর থেকে পিটুলি গোলার (আতপ চালের গুঁড়ো) আলপনা দেওয়ার পর্ব চলে। মেঝেতে, নিকানো উঠোনে লক্ষ্মীপেঁচা, ধানছড়া, শঙ্খ, পদ্ম, দেবীর পদচিহ্ন ইত্যাদি আঁকা হয়। পূর্ববঙ্গীয়দের মধ্যে আবার লক্ষ্মী পুজোর আলপনায় মাছেরও দেখা মেলে। লক্ষ্মীর পদযুগলের আলপনা দেওয়ার রীতিটি সর্বত্র দেখা যায়। বাড়ির মেয়ে-বউদের আঁকা লক্ষ্মীর পদচিহ্ন কোজাগরী পুজোর অবিচ্ছেদ্য অংশ। হালের ‘স্টিকার’ আলপনার যুগেও লক্ষ্মীর পদচিহ্নের জনপ্রিয়তা কমেনি।

০৩ ১০
দেবী লক্ষ্মীর নৈবেদ্যের অন্যতম উপাদান হল চিঁড়ে। কথিত আছে, আশ্বিনের পূর্ণিমা নিশীথে লক্ষ্মীদেবী বের হন। দেখেন, কে জেগে রয়েছে। যে ব্যক্তি জেগে থাকেন, তিনি; তাঁকে বিত্ত প্রদান করেন। বলা হয়, ‘নারিকেলৈশ্চিপিটকৈঃ পিতৃন্ দেবান্ সমর্চ্চয়েৎ।/বন্ধুংশ্চ প্রীণয়েত্তেন স্বয়ং তদশনো ভবেৎ।।’

দেবী লক্ষ্মীর নৈবেদ্যের অন্যতম উপাদান হল চিঁড়ে। কথিত আছে, আশ্বিনের পূর্ণিমা নিশীথে লক্ষ্মীদেবী বের হন। দেখেন, কে জেগে রয়েছে। যে ব্যক্তি জেগে থাকেন, তিনি; তাঁকে বিত্ত প্রদান করেন। বলা হয়, ‘নারিকেলৈশ্চিপিটকৈঃ পিতৃন্ দেবান্ সমর্চ্চয়েৎ।/বন্ধুংশ্চ প্রীণয়েত্তেন স্বয়ং তদশনো ভবেৎ।।’

০৪ ১০
অর্থাৎ ভক্তিপূর্ণ হৃদয়ে লক্ষ্মী দেবীর পুজোর পর রাতে নারকেল ও চিঁড়ে দিয়ে পিতৃগণ এবং দেবতাদের অর্চনা করতে হবে। বন্ধুদের তা খাওয়াতে হবে এবং নিজেকেও খেতে হবে। কোজাগরী পূর্ণিমা রাতে আত্মীয়, বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে চিঁড়ে ও নারকেলের তৈরির নানা সন্দেশ খাওয়ার কথা নীহাররঞ্জন রায়ও লিখে গিয়েছেন। এ সব খেয়ে রাত জেগে পাশা খেলতে হবে, যাতে দেবী কৃপাদান করতে পারেন।

অর্থাৎ ভক্তিপূর্ণ হৃদয়ে লক্ষ্মী দেবীর পুজোর পর রাতে নারকেল ও চিঁড়ে দিয়ে পিতৃগণ এবং দেবতাদের অর্চনা করতে হবে। বন্ধুদের তা খাওয়াতে হবে এবং নিজেকেও খেতে হবে। কোজাগরী পূর্ণিমা রাতে আত্মীয়, বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে চিঁড়ে ও নারকেলের তৈরির নানা সন্দেশ খাওয়ার কথা নীহাররঞ্জন রায়ও লিখে গিয়েছেন। এ সব খেয়ে রাত জেগে পাশা খেলতে হবে, যাতে দেবী কৃপাদান করতে পারেন।

০৫ ১০
পাবনার কিছু অংশে ‘কোজাগর’ বলে একটি শব্দের প্রচলন ছিল। নারকেলের জলে ভেজানো চিঁড়েকে ‘কোজাগর’ বলা হয়। বলা বাহুল্য এটি লোকজ শব্দ। সম্ভবত কোজাগরী পূর্ণিমা রাতের নৈবেদ্য বলে ‘কোজাগর’ শব্দের সৃষ্টি। আজও একটি পাত্রে দেবীর উদ্দেশ্যে নারকেলের জলে সিক্ত চিঁড়ে নিবেদনের রীতি রয়েছে।

পাবনার কিছু অংশে ‘কোজাগর’ বলে একটি শব্দের প্রচলন ছিল। নারকেলের জলে ভেজানো চিঁড়েকে ‘কোজাগর’ বলা হয়। বলা বাহুল্য এটি লোকজ শব্দ। সম্ভবত কোজাগরী পূর্ণিমা রাতের নৈবেদ্য বলে ‘কোজাগর’ শব্দের সৃষ্টি। আজও একটি পাত্রে দেবীর উদ্দেশ্যে নারকেলের জলে সিক্ত চিঁড়ে নিবেদনের রীতি রয়েছে।

০৬ ১০
টুনি ফুল আদ্যন্ত শরতের ফুল। গাঁ-গঞ্জে খাল-বিলের ধারে, জলজ জায়গায়, চরার পাশে ঝোপঝাড়ে এর জন্ম। লতানো উদ্ভিদ, পাতার ফাঁকে ফাঁকে দেখা মেলে সাদা, গন্ধহীন ফুলের। নাম নলটুনি। আবার কেউ কেউ বলেন টুনি ফুল। লক্ষ্মী দেবীর প্রিয়তম ফুল। শরৎ পূর্ণিমায় টুনি ফুল ছাড়া শ্রীদেবীর পুজো হয় না।

টুনি ফুল আদ্যন্ত শরতের ফুল। গাঁ-গঞ্জে খাল-বিলের ধারে, জলজ জায়গায়, চরার পাশে ঝোপঝাড়ে এর জন্ম। লতানো উদ্ভিদ, পাতার ফাঁকে ফাঁকে দেখা মেলে সাদা, গন্ধহীন ফুলের। নাম নলটুনি। আবার কেউ কেউ বলেন টুনি ফুল। লক্ষ্মী দেবীর প্রিয়তম ফুল। শরৎ পূর্ণিমায় টুনি ফুল ছাড়া শ্রীদেবীর পুজো হয় না।

০৭ ১০
লক্ষ্মীর প্রিয় ফল পানিফল। জলাশয়ে, ডোবায় তার জন্ম। শরতের নীল আকাশে যখন পেঁজা পেঁজা সাদা মেঘ ভেসে বেড়ায় তখন জলে জন্ম হয় পানিফলের। দুর্গাপুজোর সময় থেকে মোটামুটি পৌষ মাস অবধি পানিফল উৎপন্ন হয়। এই ফল দেবী লক্ষ্মীর খুব প্রিয়। কোজাগরী পুজোয় দেবীকে পানিফল নিবেদন করতেই হয়।

লক্ষ্মীর প্রিয় ফল পানিফল। জলাশয়ে, ডোবায় তার জন্ম। শরতের নীল আকাশে যখন পেঁজা পেঁজা সাদা মেঘ ভেসে বেড়ায় তখন জলে জন্ম হয় পানিফলের। দুর্গাপুজোর সময় থেকে মোটামুটি পৌষ মাস অবধি পানিফল উৎপন্ন হয়। এই ফল দেবী লক্ষ্মীর খুব প্রিয়। কোজাগরী পুজোয় দেবীকে পানিফল নিবেদন করতেই হয়।

০৮ ১০
বাঙালি তিন সময়ে তাল খায়, গরমে খায় তালশাঁস। বর্ষায় খায় তালজাত নানা মিষ্টি। জন্মাষ্টমী তাল ছাড়া অসম্পূর্ণ! তালের ক্ষীর, তালের বড়া, তালের পীঠে, তালের লুচি– সবতেই তাল। আশ্বিনে খাওয়া হয় তাল ফোঁপরা। ভাদ্রে পাকা তালের রস নিংড়ে, ক্বাথ সংগ্রহ করে বানানো হয় বড়া। তার পর গড়াগড়ি যাওয়া আঁটি থেকে ফোঁপরা জন্ম।

বাঙালি তিন সময়ে তাল খায়, গরমে খায় তালশাঁস। বর্ষায় খায় তালজাত নানা মিষ্টি। জন্মাষ্টমী তাল ছাড়া অসম্পূর্ণ! তালের ক্ষীর, তালের বড়া, তালের পীঠে, তালের লুচি– সবতেই তাল। আশ্বিনে খাওয়া হয় তাল ফোঁপরা। ভাদ্রে পাকা তালের রস নিংড়ে, ক্বাথ সংগ্রহ করে বানানো হয় বড়া। তার পর গড়াগড়ি যাওয়া আঁটি থেকে ফোঁপরা জন্ম।

০৯ ১০
গ্রাম-গঞ্জে বর্ষাকালে থরে থরে সাজানো বিবর্ণ তালআঁটির দেখা মেলে। আঁটিগুলো মাটিতে রাখতে হয়। যা শরৎকালে দেবভোগ্য হয়ে ওঠে। বর্ষায় জল পড়ে আঁটি থেকে অঙ্কুর বের হয়। অঙ্কুর মাটিতে প্রবেশের আগে তুলে নিতে হয়। তার পর আশ্বিন-কার্তিক মাসে আঁটি ভাঙলে বা কাটলে দেখা যায় ভিতরে তৈরি হয়েছে নারকেলের শাঁসের মতো সাদা বস্তু। ওটাই তালের ফোঁপরা বা তাল ফোঁপর। কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোয় তালের ফোঁপরা দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে।

গ্রাম-গঞ্জে বর্ষাকালে থরে থরে সাজানো বিবর্ণ তালআঁটির দেখা মেলে। আঁটিগুলো মাটিতে রাখতে হয়। যা শরৎকালে দেবভোগ্য হয়ে ওঠে। বর্ষায় জল পড়ে আঁটি থেকে অঙ্কুর বের হয়। অঙ্কুর মাটিতে প্রবেশের আগে তুলে নিতে হয়। তার পর আশ্বিন-কার্তিক মাসে আঁটি ভাঙলে বা কাটলে দেখা যায় ভিতরে তৈরি হয়েছে নারকেলের শাঁসের মতো সাদা বস্তু। ওটাই তালের ফোঁপরা বা তাল ফোঁপর। কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোয় তালের ফোঁপরা দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে।

১০ ১০
লক্ষ্মী খুব অল্পে সন্তুষ্ট হন। কোজাগরী তিথিতে তাঁর পুজো মূলত পুব বাংলার রীতি। মাঠ, ক্ষেত আশপাশের ঘরোয়া উপাচারে দেবীর পুজো হয়। তাতে দেবী ভক্তদের কৃপা করেন। সহজলভ্য, সারল্যমাখা এই সব উপাচার মা-ঠাকুমার লক্ষ্মীপুজোকে সার্থক করে তোলে। (‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’।)  (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)

লক্ষ্মী খুব অল্পে সন্তুষ্ট হন। কোজাগরী তিথিতে তাঁর পুজো মূলত পুব বাংলার রীতি। মাঠ, ক্ষেত আশপাশের ঘরোয়া উপাচারে দেবীর পুজো হয়। তাতে দেবী ভক্তদের কৃপা করেন। সহজলভ্য, সারল্যমাখা এই সব উপাচার মা-ঠাকুমার লক্ষ্মীপুজোকে সার্থক করে তোলে। (‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’।) (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy