Married women in a village of Uttar Pradesh does not perform Karva Chauth dgtl
Karwa Chauth Significance
করবা চৌথ করলেই হারাতে হবে স্বামীকে! এ কোন 'অভিশাপ' বয়ে চলেছেন রাইভা গ্রামের সধবারা?
স্বামীর মঙ্গল কামনায় হিন্দু মহিলাদের একাংশ এই ব্রত পালন করলেও ভারতের কিছু গ্রামে এই প্রথা 'অভিশপ্ত'!
আনন্দ উৎসব ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৫ ১৪:১৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১১
করবা চৌথ ভারতের হিন্দু বিবাহিত মহিলাদের একাংশের কাছে একটি পবিত্র ব্রত। স্বামীর দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনায় মহিলারা এই উপবাস ও ব্রত পালন করেন। এটি মূলত উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম ভারতে প্রচলিত একটি উৎসব বা প্রথা। কিন্তু, এমন কিছু গ্রাম রয়েছে, যেখানে এই ব্রতকে 'অভিশাপ' বলে মনে করা হয়!
০২১১
সাধারণত এটি উৎসব হলেও, উত্তরপ্রদেশ ও রাজস্থানের কয়েকটি গ্রামে এই ব্রত পালন করা হয় না। সেই সব গ্রামের মানুষ বিশ্বাস করেন, এই ব্রত পালন করলে তাঁদের পরিবারে বড় কোনও ক্ষতি হতে পারে! প্রাচীন কিছু ঘটনার কারণে তাঁরা এই ব্রতকে 'অভিশাপ' বলে মনে করেন।
০৩১১
যেমন - উত্তরপ্রদেশের মথুরা জেলার রাইভা গ্রাম। প্রায় ৫০০ বছর ধরে এই গ্রামে করবা চৌথ পালন করা হয় না। কিংবদন্তী অনুসারে, ৫০০ বছর আগে করবা চৌথের দিন এখানকার এক সধবা তাঁর স্বামীর মৃত্যুর খবর পান। সেই দিন থেকে এই গ্রামে ব্রত পালন করলে অমঙ্গল হবে, এমন বিশ্বাস জন্ম নেয়।
০৪১১
লোককথা অনুসারে, স্বামী হারানোর শোকে সেই মহিলা গ্রামের সবাইকে অভিশাপ দেন। তিনি বলেন, এই গ্রামে যদি কোনও মহিলা করবা চৌথ পালন করেন, তবে তাঁর স্বামী অকালে মারা যাবেন। সেই ভয়ে আজও এই গ্রামের মহিলারা করবা চৌথের দিন উপবাস করেন না। এটি তাঁদের কাছে একটি নিষিদ্ধ প্রথা।
০৫১১
এ ছাড়াও, রাজস্থানের জয়পুরের কাছে বাঘেরওয়াস এবং সওয়াই মাধোপুরের বামতৌলি গ্রামেও একই ধরনের বিশ্বাস প্রচলিত। বামতৌলি গ্রামেও প্রাচীনকালে এক মহিলা স্বামী বিয়োগের পর এই ব্রতকে অভিশাপ দিয়েছিলেন বলে মনে করা হয়। তাই এই গ্রামগুলির মহিলারাও করবা চৌথ ব্রত পালন করা থেকে বিরত থাকেন।
০৬১১
তবে, এই গ্রামগুলিতে স্বামীর মঙ্গলের জন্য ব্রত পালনের একটি বিকল্প নিয়ম চালু আছে। তাঁরা সঙ্কল্প করে অন্য একটি মঙ্গলজনক ব্রত পালন করেন। এই ব্যতিক্রমী ঘটনাগুলি দেখায়, কী ভাবে লোকবিশ্বাস একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসবকেও প্রভাবিত করতে পারে!
০৭১১
এ বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে করবা চৌথ পালিত হবে নয়ই অক্টোবর, শুক্রবার। এটি কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্থী তিথিতে অনুষ্ঠিত হয়। উদয় তিথি অনুসারে, এ বছর নয় অক্টোবর এই ব্রত পালন করা হবে।
০৮১১
এ বছর কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষ চতুর্থী তিথি শুরু হচ্ছে ৯ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার, রাত ১০টা ৫৪ মিনিট থেকে। এবং কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষ চতুর্থী তিথি থাকবে ১০ অক্টোবর, শুক্রবার, রাত ০৭টা ৩৮ মিনিট পর্যন্ত।
০৯১১
করবা চৌথের পুজো করার শুভ সময় বজায় থাকবে ১০ অক্টোবর, বিকাল ৫টা ৫৭ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৭টা ১১ মিনিট পর্যন্ত। আর, চন্দ্রোদয়ের সময় হল - ১০ অক্টোবর, রাত ৮টা ১৩ মিনিট (অঞ্চল ভেদে সময়ে সামান্য পরিবর্তন হতে পারে)।
১০১১
বিবাহিত হিন্দু মহিলারা তাঁদের স্বামীর দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কামনায় এই উপবাস রাখেন। তাঁরা সূর্যোদয় থেকে শুরু করে চন্দ্রোদয় পর্যন্ত নির্জলা উপবাস পালন করেন। চন্দ্রোদয়ের পর চাঁদকে অর্ঘ্য দিয়ে স্বামীর মুখ দেখে তবেই উপোস ভাঙেন। এই দিনে দেবী পার্বতী, শিব, গণেশ ও কার্তিকের পুজো করা হয়।
১১১১
'করবা' কথার অর্থ মাটির ছোট পাত্র (যেটি পুজো ব্যবহার করা হয়)। 'চৌথ' কথার অর্থ চার বা চতুর্থী তিথি। কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্থ দিনে এই অনুষ্ঠান হয়, তাই নাম 'করবা চৌথ'। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)