আশ্বিনে শুক্লপক্ষস্য দশম্যাং পূজয়েত্থা।
একাদশখ্যাং ন কুব্বীত পূজনঞ্চাপরাজিতাম্ ॥
অর্থাৎ, আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের দশমীতে (বিজয়া দশমী) অপরাজিতা দেবীর পূজা করিবে। একাদশী যুক্তা দশমীতে পূজা করিবে না। ( পুরোহিত দর্পণ)
হ্যাঁ, অপরাজিতা পূজা... দুর্গা পূজাঙ্গ অথচ প্রায় অনুচ্চারিত দেবী অপরাজিতার পুজো। দশমী সমাপনে বিসর্জন পুজোর পরে সেই মণ্ডপেই আর এক বার বেজে ওঠে ঢাক। তা এই অপরাজিতা স্তবেই...
মাতৃকল্প—
ওঁ শুদ্ধস্ফটিকসংকাশাং চন্দ্রকোটিমুশীতলাম্। বরদাভয়হস্তাঞ্চ শুক্লবন্ত্রৈরলঙ্কতাম।
নানাভরণসংযুক্তাং চক্রবাকৈশ্চ বেষ্টিতম্।
এবং সঞ্চিস্তয়েষ্মন্ত্রী দেবীং তামপরাজিতাম্ ॥
দুর্গারই আর এক রূপ তিনি। চতুর্ভূজা— চার হাতে শঙ্খ-চক্র, পক্ষান্তরে দুই হাতে বর ও অভয়মুদ্রা। গায়ের রং ঘোর নীল, পক্ষান্তরে উজ্জ্বল স্ফটিকের মতো। ত্রিনয়না ও শশীভালী। চক্রবাক পক্ষী বা চখারা তাঁকে বেষ্টন করে রয়েছে। দশমীর বিসর্জনের মন্ত্রপাঠের ঠিক পরেই মণ্ডপের ঈশাণ কোণে অষ্টদল পদ্ম এঁকে, অপরাজিতা লতা রেখে এই দেবীর পুজো হয়। অষ্টদল পদ্ম অর্থাৎ সকল সিদ্ধি উন্মুক্ত। কোরক উদ্ভাসিত। তাই তিনিই জয় প্রদায়িনী অপরাজিতা।
কারও মতে এই বিশেষ রূপটি হল শিবদূতী, অর্থাৎ এই রূপে তিনি শিবকে দূত করে শুম্ভের কাছে বার্তা পাঠাচ্ছেন। সে যেন তার সমস্ত রাক্ষসদলকে নিয়ে পাতালের গর্ভে চলে যায়। নতুবা তাদের সমূহ বিনাশ হবে।
বেদব্যাস অনুষ্টুপ ছন্দে তাঁকে ‘পদ্মবীজ মাল্যধারিণী শ্যামা’ অভিধায় স্তোত্র রচনা করছেন। কারণ তখন তিনি ঘোরবর্ণা।
কথা মুখ — কথিত, শ্রীরামচন্দ্র ভারতের অকালবোধনের পরে বিসর্জন পুজো সেরে শিবদূতী দেবী অপরাজিতার পুজো করেন। শ্বেত অপরাজিতার লতা হাতে বেঁধে যুদ্ধযাত্রা করেন তিনি। তাই তিনি অপরাজিত।
কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রেও দেবী অপরাজিতার কথা উল্লেখ করছে। দশমীর পরে যুদ্ধযাত্রায় রাজা অপরাজিত। তাই সেকালে যুদ্ধযাত্রার সূচিও হত সে ভাবেই। স্মার্ত রঘুনন্দন ‘তিথিতত্ত্ব’-এ ব্যসদেব ও মার্কণ্ডেয় উবাচে অপরাজিতা দেবী বন্দনা করছেন।
তিনিই ভয়ঙ্করী, মহারোদ্রী। আবার তিনিই সিদ্ধিদাত্রী, মহাভয়বিনাশিনী।
পূজা— শ্বেত অপরাজিতার গাছ অথবা ঘটে দেবীর পুজো হয়। ঈশানকোণে আঁকা হয় পদ্মের পাপড়ি। দশমী পুজো সেরে তবেই পুরোহিত নীরবে সঙ্কল্প সারেন।
“হে দেবী ত্বম্ মম বিজয়ম্... হে দেবী আমাকে বিজয় প্রদান করুন। শ্রীরামচন্দ্রের দৃঢ়তায় জয়লাভ করি যেন।”
তথ্যসূত্র ~
আহ্নিক কৃত্য - চতুর্থ খণ্ড
অপারজিতা স্তোত্রম
পুরোহিত দর্পণ
‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।