প্রেজেন্টস্
Knowledge Partner
Fashion Partner
Wedding Partner
Banking Partner
Comfort Partner

চন্দননগর জুড়ে ‘পুকুর’নামা পুজোর মেলা, নেপথ্যের কারণ জানেন?

কাঁটাপুকুরে সম্প্রীতির বার্তা, হেলাপুকুরে হিরের সাজ, কলুপুকুরে ঐতিহ্যের গন্ধ—চন্দননগরের ‘পুকুর’পাড়ের জগদ্ধাত্রী পুজো আজও বলে যায় এক শহরের ইতিহাস।

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ১০:২৯
প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো মানেই আলো আর আবেগের এক অনবদ্য বুনন। কিন্তু এই উৎসবের সূতিকাগার খুঁজলে দেখা যাবে, সেখানে বার বার উঠে আসছে কিছু পুকুরের নাম। হেলাপুকুর, কাঁটাপুকুর, কলুপুকুর, শূরেরপুকুর—এরা শুধু নাম নয়, যেন ফরাসি আমলের বসতি বিন্যাসের পুরোনো দলিল। পাড়ার কেন্দ্রে জলাধারকে ঘিরে জনপদ গড়ে ওঠার সেই ইতিহাস আজও বহন করে চলেছে এই পুকুরগুলি, তাদের নামেই সেজে উঠেছে বারোয়ারি পুজোর পরিচিতি। এটিই এখানকার লোক চরিত্র আর যাতায়াতের স্মৃতির সঙ্গে মিশে যাওয়া ‘সিটি অফ লাইটস’-এর বিশেষ ভূগোল।

কলুপুকুরের দিকে পা বাড়ালেই বোঝা যায়, কেন এই নাম। জানা যায়, এক কালে বিরাট এই জলাশয়কে ঘিরে বাস ছিল তেলপেষা কলুদের। ক্লাবের সদস্যরা জানান, সেই যুগে সরষে পিষে তেল বের করত যে কাঠের ঘানি, তাকে কেন্দ্র করে ঘুরত বলদ বা অন্য পশু—সেই ‘কলুর বলদ’-দের ঘর-বসত ছিল এই মহল্লাতেই। পেশার সূত্রেই নামকরণ, আর সেই নামেই এখন মায়ের আরাধনা।

অন্য দিকে, শূরেরপুকুর তার ফরাসি উপনিবেশের স্মৃতিটুকু ধরে রেখেছে নামে। এই মণ্ডপের সদস্যরা একটি চমৎকার কথা জানিয়েছেন—প্রায় ১৪ লাখ টাকা বাজেটের এই পুজোর খরচ ওঠে মাছ ধরার টিকিট বিক্রি করে!

এ বার নজর ফেরে হেলাপুকুর ধারে। চন্দননগরের এই অন্যতম খ্যাতনামা পুজো এবছর ৫৬ বছরে পা দিল। তবে এখানকার আসল আকর্ষণ প্রতিমার সাজসজ্জা। কোটি কোটি টাকার আসল হিরে ও হোয়াইট গোল্ড শোভা পাচ্ছে দেবীর অঙ্গে! খ্যাতনামা স্বর্ণ ব্যবসায়ীর দোকান থেকে আসা কয়েক হাজার হিরের গয়নায় সেজে উঠেছেন মা। ক্লাবের ৫০তম বছর থেকে শুরু হওয়া এই সোনার সাজের জন্যই এখানকার প্রতিমা আজ 'সোনা মা' নামে পরিচিত। মণ্ডপে পা রাখলে ভক্তদের চোখ ধাঁধিয়ে যায় সেই আলোক-বিচ্ছুরণে।

তবে সব আবেগের মধ্যে সবচেয়ে গভীর টানটি কাঁটাপুকুরের। প্রায় ৬০ বছরের পুরোনো এই বারোয়ারি পুজো হুগলির এই অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ। ক্লাবের সদস্য সৌম্যজিৎ দাস জানান, যখন ধর্ম নিয়ে এত ভেদাভেদ ছিল না, সেই সময়েই শেখ রহমান (মুসলমান) ও সুজিত দেবশর্মা (হিন্দু) এই পুজোর সূচনা করেছিলেন। সেই সৌভ্রাতৃত্বের বন্ধন আজও অটুট। মায়ের অঙ্গসজ্জা থেকে নিরঞ্জন—সর্বত্রই স্থানীয় অহিন্দু সম্প্রদায়ের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে পুজো কমিটির সম্পাদকও ভিন ধর্মী, কিন্তু তাতে উৎসবের রঙ এতটুকুও ম্লান হয় না। কাঁটাপুকুরের সামনে মাথা নত করতে আসা সেই ভিড়ে সত্যিই কোনও জাতের বেড়া থাকে না।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

Chandannagar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy